অবৈধ পথে আসছে ম্যাগাজিন, রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে আসছে বিদেশি ম্যাগাজিন। এতে বৈধ আমদানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। অন্যদিকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।

 

অবৈধ পথে ম্যাগাজিন আনা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন আমদানিকারকরা। তারা এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

 

এ বিষয়ে দেশের প্রাচীনতম বিদেশি ম্যাগাজিন আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল বুক এজেন্সি লিমিটেডের চেয়ারপারসন সেলিনা দোজা বলেন, ভারতের কলকাতা থেকে বেনাপোল সীমান্তসহ অন্যান্য সীমান্ত দিয়ে ইংরেজি সাপ্তাহিক ‘দি ইকোনমিস্ট’ও ‘টাইম’অবৈধভাবে আনা হচ্ছে। অসাধু ব্যবসায়ী ও চোরাকারবারিরা ভ্যাট, ট্যাক্স, আয়কর ও অন্যান্য ফি ফাঁকি দিয়ে বাংলাদেশে বাজারজাত করছে এসব ম্যাগাজিন। এতে আমাদের ব্যবসা হুমকির মধ্যে পড়েছে।

 

তিনি বলেন, দেশের বাজারে চোরাই পথে আনা বিপুল সংখ্যক ম্যাগাজিন বিক্রয় অব্যাহত থাকায় ইন্টারন্যাশনাল বুক এজেন্সির বিক্রি অনেক কমেছে। এতে বিদেশি কর্তৃপক্ষ আগামী ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশে ‘টাইম’ম্যাগাজিন সরবরাহ করবে না বলে জানিয়েছে।

 

জানা গেছে, বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি ‘দি ইকোনমিস্ট’৫০০ কপি, ‘টাইম’৭০০ কপি এবং ‘ফরচুনা’৩০০ কপি আমদানি করছে। ‘টাইম’ম্যাগাজিনটি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ছাড়াও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশে অবস্থিত বিভিন্ন বিদেশি দূতাবাস, বিভিন্ন সংস্থা, বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষকদের সরবরাহ করা হয়। ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে ‘টাইম’কর্তৃপক্ষ ম্যাগাজিনটি সরবরাহ বন্ধ করলে বিপুল পাঠক ম্যাগাজিনটি পড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতে পারেন।

 

ইন্টারন্যাশনাল বুক এজেন্সি লিমিটেডের কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, বেশ কিছুদিন থেকেই ‘দি ইকোনমিস্ট’ও ‘টাইম’বিক্রি কমে গেছে। কারণ, ভ্যাট, ট্যাক্স, আয়কর ও অন্যান্য ফি পরিশোধ করে একটি ম্যাগাজিন যে দামে আমরা গ্রাহকদের হাতে পৌঁছে দিচ্ছি, তার অনেক কম দামে খোলাবাজারে এটি পাওয়া যাচ্ছে। ফলে আমরা গ্রাহক হারাচ্ছি। গত কয়েক বছরে আমাদের বিক্রি প্রায় ৩০ শতাংশ কমেছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে বৈধ ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে।

 

তিনি বলেন, সিঙ্গাপুরে ছাপাতে একটি ম্যাগাজিনের যে খরচ হয় সেই ম্যাগাজিনটিই ভারতে ছাপাতে অনেক কম খরচ পড়ে। কারণ, ভারতে রয়েছে বিশাল বাজার। বহু ম্যাগাজিন ছাপা হলে তার উৎপাদন ব্যয় কমে যায়। ফলে ভারত থেকে ছাপানো ম্যাগাজিন অনেক কম দামে সরবরাহ করা সম্ভব। ভারত থেকে বৈধভাবে ম্যাগাজিন আমদানি হলে সরকারের রাজস্ব আয় হতো। এগুলো চোরাই পথে দেশে আসায় সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

 

তিনি বলেন, ম্যাগাজিনগুলো চোরাই পথে আনা বন্ধে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও দপ্তরগুলোতে বলা হয়েছে। কিন্তু কার্যকর কোনো পদেক্ষপ না নেওয়ায় চোরাকারবারিরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। চোরাই পথে ম্যাগাজিনগুলো আসা বন্ধ হচ্ছে না। ভ্যাট, ট্যাক্স, আয়কর ও সরকারের অন্যান্য কর ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশের চার/পাঁচ জন অসাধু ব্যবসায়ী, হকার ও চোরাকারবারি কলকাতা থেকে চোরাই পথে বিপুল সংখ্যক ‘দি ইকোনমিস্ট’ও ‘টাইম’ম্যাগাজিন ঢাকায় এনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখের সামনে বিক্রি করছে।

 

সূত্র: রাইজিংবিডি