অবশেষে মায়ের কোলে ফিরে গেল ক্লিনিক থেকে চুরি হওয়া সেই নবজাতক

নিজস্ব প্রতিবেদক:

অবশেষে মায়ের কোলে গেলো ফিরে রাজশাহী নগরীর নওদাপাড়া এলাকায় অবস্থিত আরবান হেলথ কেয়ারে জন্ম নেওয়ার কয়েক ঘন্টা পর চুরি হওয়া সেই নবজাতকটি। আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পর শনিবার সন্ধ্যায় শিশুটিকে তার মা মুক্তি খাতুনের কোলে তুলে দেওয়া হয়। নগরীর শাহ মখদুম থানা পুলিশ মা মুক্তি খাতুনের নিকট থেকে একটি মুচলেকা নিয়ে তার সন্তানটি তার কাছে তুলে দেন।

 

এর আগে দুপুরে রাজশাহী মেট্রোপলিট ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর বিচারক জাহিদুল ইসলাম নবজাতকটিকে তার মায়ের জিম্মায় দেওয়ার নির্দেশ দেন। এছাড়াও নবজাতক চুরির দায়ে গ্রেপ্তারকৃত নারী শাহিন আক্তার শুভ্রাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
এর আগে শুভ্রাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসাপাতালের অনস্টপ ক্রাইসিসি সেন্টারে (ওসিসি) নিয়ে গর্ভধারণের বিষয়ে নিশ্চিত হয় পুলিশ। পরে তাকে সেখান থেকে আদালতে তোলা হয়।

 
নগরীর শাহমখদুম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিল্লুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সকালে রামেক হাসপাতালের ওসিসিতে নিয়ে গ্রেফতার শাহিন আকতার শুভ্রার গর্ভধারণের বিষয়টি পরীক্ষা করানো হয়।
ওসিসির ইনচার্জ ডা. আনোয়ারা বেগম এ পরীক্ষা করেন। ওই নারীর গর্ভে এ সন্তান জন্ম নেয়নি বলে পরে চিকিৎসক প্রতিবেদন দেয়। এরপর পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে তাকে আদালতে তোলা হয়। তবে রিমান্ড শুনানী না করেই আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠিয়ে দেন। রোববার তার রিমান্ড শুনানী হবার কথা।
এ ঘটনায় গ্রেফতার শাহিন আকতার শুভ্রার সহায়তাকারী নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাঠকর্মী তহুরা বেগমকেও তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। বর্তমানে তিনিও জেলহাজতে রয়েছেন।

 
পুলিশ বলছে, ছেলে সন্তান না থাকায় গত মাস দুয়েক আগ থেকেই নবজাতক চুরির পরিকল্পনা করেছিলেন শুভ্রা। এরপর থেকেই তিনি পেটে কাপড় বেঁধে চলাফেরা করতেন। এছাড়াও ছেলে সন্তান চুরির টার্গেটে নগরীর বিভিন্ন ক্লিনিকেও ঘোরাঘুরি করতে থাকেন তিনি। গ্রেফতারের পরও ওই সন্তান তার বলে দাবি করেন ওই নারী।

 
প্রসঙ্গত, গত ১৯ জানুয়ারী বেলা সাড়ে তিনটার দিকে নগরীর নওদাপাড়া নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ছেলে সন্তান প্রসব করেন নগরীর চরশ্যামপুর এলাকার বাসিন্দা মুক্তি খাতুন। এর প্রায় ছয় ঘণ্টার মাথায় চুরি হয়ে যায় তার সন্তান। ওই দিনই মুক্তি খাতুনের মা রোজিনা বেগমের দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার হন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাঠকর্মী তোহুরা বেগম।
তবে এর আটদিনের মাথায় শুক্রবার দুপুরে নগরীর টিকাপাড়া বাসার রোডের একটি বাসা থেকে ওই নবজাতককে উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে শাহিন আকতার শুভ্রাকে। এর আগে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তাকে সনাক্ত করে পুলিশ।
শুভ্রা রাজশাহীর নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভর্সিটির সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হিসেবে কর্মরত। তার স্বামীর ডা. আক্তারুজ্জামান রাজশাহীর বাঘা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক। এ দম্পতির অহনা নামে চার-পাঁচ বছর বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে। ‘সপ্তর্ষি’ নামের ওই বাসার দ্বিতীয় তলায় ভাড়া থাকতেন তারা।

স/আর