অবশেষে নিজ জিম্মায় থাকার সুযোগ পেলেন তরুণী

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

উচ্চ আদালতের নির্দেশে নিজ জিম্মায় থাকার সুযোগ পেলেন যশোরের প্রাপ্তবয়স্ক এক তরুণী। তাকে শেলটার হোমে রাখতে যশোরের মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন ট্রাইব্যুনাল আদেশ দিয়েছিলেন। এর বিরুদ্ধে তিনি নিজ জিম্মায় থাকতে চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন। এই আপিল মঞ্জুর করে তাকে নিজ জিম্মায় থাকার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।

বিচারপতি রেজাউল হক ও বিচারপতি বদরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট  বেঞ্চ মঙ্গলবার (৭সেপ্টেম্বর) এ আদেশ দেন।

তরুণীর বাবা বিদেশ থাকেন। আর মা মেয়েকে বিয়ে দিতে চাইলে এতে আপত্তি করেন মেয়েটি। পরে মেয়েটি চলে আসেন ঢাকায়। কাজ নেন একটি প্রতিষ্ঠানে। নিরাপত্তা নিশ্চিতে বনানী থানায় তিনি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

অন্যদিকে, মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে যশোরে আদালতে মামলা করেন মেয়েটির মা। মেয়েটিকে ঢাকা থেকে উদ্ধার করে যশোরের মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। মেয়েটি জবানবন্দি দিয়ে নিজ জিম্মায় থাকার আরজি জানান। অন্যদিকে মা নিজ জিম্মায় নিতে চান মেয়েকে। শুনানি নিয়ে ট্রাইব্যুনাল মেয়েটিকে শেলটার হোমে রাখার আদেশ দেন।শেলটার হোমে থেকে ট্রাইব্যুনালের আদেশের বিরুদ্ধে গত জুলাই মাসে হাইকোর্টে আপিল করেন মেয়েটি।

হাইকোর্ট গত ২ সেপ্টেম্বর মেয়েটির বক্তব্য শোনেন। এর আগে মেয়েটিকে যশোরের শেলটার হোম থেকে ঢাকা নিয়ে আসা হয়। শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার আদেশ দেওয়া হয়।

নথিপত্রে দেখা যায়, মেয়েটির জন্ম ২০০১ সালের  সেপ্টেম্বরে। চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি ঢাকার বনানী থানায় তার করা জিডির ভাষ্যমতে, মাসহ অন্যরা তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। বিয়েতে তিনি অনীহা প্রকাশ করেন। এর জেরে তিনি গত ২০ জানুয়ারি ঢাকায় চলে আসেন। বনানীতে এক আত্মীয়ের বাসায় থাকাকালে মাসহ অন্যরা তাকে মোবাইলে ভয়ভীতি ও হুমকি দেন।

অন্যদিকে, মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মেয়েটির মা গত ২৩ মে চারজনের বিরুদ্ধে যশোরের আদালতে নালিশি মামলা করেন। এতে অভিযোগ করা হয়, তার মেয়েকে আসামিরা যেকোনো সময় দেশের বাইরে পাচার করে দিতে পারেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনাল নালিশি আবেদন তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে পিবিআইকে নির্দেশ দেন।

সেই সঙ্গে মেয়েটিকে উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। পরে মেয়েটিকে উদ্ধার করে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। গত ২৩ জুন মেয়েটি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মেয়েটি নিজ হেফাজতে থাকার আবেদন করেন। একই দিন মেয়েটিকে নিজ জিম্মায়  চেয়ে আবেদন করেন তার মা।

গত ২৪ জুন ট্রাইব্যুনালের আদেশে বলা হয়, নিরাপত্তার স্বার্থে ও কল্যাণার্থে মেয়েটিকে নিজ জিম্মায় না দিয়ে শেলটার হোমে রাখাই বলে যুক্তিযুক্ত মর্মে ট্রাইব্যুনালের অভিমত। পরে মেয়েটিকে শেলটার হোমে রাখা হয়।

হাইকোর্টে মেয়েটির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তাসমিয়াহ নুহিয়া আহমেদ। আদেশের পর তিনি বলেন, ট্রাইব্যুনালের আদেশের পর প্রায় আড়াই মাস ধরে মেয়েটি শেলটার হোমে আছেন। হাইকোর্টের আদেশের ফলে এখন তিনি নিজ জিম্মায় থাকার সুযোগ পেলেন।

সূত্র: যুগান্তর