সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর একাধিক ইউনিটের তথ্য মতে, ২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর সাঁড়াশি অভিযান শুরু করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী।
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়, ২০০১ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত জঙ্গিবিষয়ক এক হাজার ৯৪৫টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ৯ হাজার ৭২ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া ২০০৬ সালে আনসার আল ইসলাম প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত সংগঠনটির প্রায় তিন হাজার জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী।
অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের কর্মকর্তারা জানান, ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত তাঁরা ১৬৪ জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করেছেন। সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে জঙ্গি সংগঠনগুলো নতুন করে অস্তিত্ব জানান দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। বিশেষ করে নির্বাচনের সময় সরকার তথা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের ব্যস্ততা বেড়ে যাওয়ার সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করতে পারে জঙ্গিরা। আনসার আল ইসলাম ও জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) সম্প্রতি তাদের একটি গোপন যোগাযোগ মাধ্যমে হামলার বিষয়ে আলোচনা করার কিছু তথ্য পেয়েছেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কর্মকর্তারা। এরই ধারাবাহিকতায় তারা অনলাইন ও অফলাইনে সদস্য সংগ্রহ করছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার পর আলোচনায় আসা জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবির কার্যক্রম একেবারে কোণঠাসা অবস্থায় রয়েছে। সিটিটিসির কর্মকর্তারা জানান, সংগঠনের সব শেষ আমির মেহেদি হাসান জন তুরস্কে বসে সংগঠনটির নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন। সম্প্রতি তুরস্কের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী তাঁকে গ্রেপ্তার করার পর নতুন কোনো আমিরের নাম শোনা যায়নি। বাংলাদেশে থাকা এই সংগঠনের প্রায় সব শীর্ষ নেতাকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সিটিটিসির প্রধান ও ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আনসার আল ইসলাম এখনো হুমকি। জঙ্গিদের অনলাইন ও অফলাইন কার্যক্রম সব বসয় নজরদারিতে রাখা হচ্ছে। তবে জঙ্গিরা নতুন করে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করলেও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী তাদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে।
সিটিটিসি সূত্র জানায়, অন্য জঙ্গি সংগঠনগুলো কোণঠাসা হয়ে পড়লেও এখনো জঙ্গিবাদের হুমকি হয়ে আছে আনসার আল ইসলাম বা আল-কায়েদা ইন ইন্ডিয়ান সাব-কন্টিনেন্ট (একিউআইএস)। আল-কায়েদার মতাদর্শী নিষিদ্ধ এই সংগঠনটির শীর্ষ নেতা বহিষ্কৃত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক ওরফে মেজর জিয়া পলাতক। এই সংগঠনের সব সদস্যই অধিকতর উচ্চ শিক্ষিত, সচ্ছল এবং তথ্য-প্রযুক্তিতে দক্ষ।
এটিইউয়ের প্রধান ও পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক এস এম রুহুল আমিন বলেন, ‘জঙ্গিবাদ একটি মতাদর্শগত বিষয়। এ নিয়ে সব সময় সতর্ক থাকতে হবে। জঙ্গিবাদ দমনে আমরা নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছি।’ সূত্র: কালের কণ্ঠ