অনলাইনের ধাক্কায় খুলনায় পত্রিকার দুর্দিন

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

প্রযুক্তির কল্যাণে সংবাদমাধ্যমেও এসেছে বিরাট পরিবর্তন। এখন আর সচেতন পাঠকরা খবরের জন্য প্রিন্ট মিডিয়ার ওপর নির্ভর করছেন না। মোবাইল এবং ইন্টারনেট সংযোগ হাতের নাগালে চলে আসায় পাঠকের জানার আগ্রহও ভীষণভাবে বেড়ে গেছে। মানুষ এখন মুহূর্তের খবর মুহূর্তে পেয়ে যাচ্ছেন। পাঠকের এ আগ্রহ পূরণ করছে প্রযুক্তিনির্ভর অনলাইন নিউজপোর্টালগুলো। যে কারণে কাগজের পুরনো খবর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন খুলনার সচেতন পাঠকরা।

এক অনুসন্ধানে দেখা যায়, অনলাইনভিত্তিক সংবাদপত্রের প্রসার ঘটায় খুলনায় দৈনিক পত্রিকার পাঠক সংখ্যা কমে গেছে। জাতীয় দৈনিক কিংবা স্থানীয় সবারই একই অবস্থা।

খুলনায় তিনটি এজেন্সির মাধ্যমে ঢাকার পত্রিকা আনা হয়। যেখান থেকে হকার ও পত্রিকা স্টল মালিকরা পত্রিকা নিয়ে পাঠকদের হাতে তুলে দেন। খুলনায় আসা পত্রিকার মধ্যে হাতে গোনা দু’একটি পত্রিকার পাঠকের কাছে কিছুটা চাহিদা রয়েছে।

পাটোয়ারী নিউজ এজেন্সির সেকেন্দার আলী জানান, প্রথম আলো ৬ হাজার, বাংলাদেশ প্রতিদিন ৬ হাজার, কালের কণ্ঠ ৪৩০, যুগান্তর ২৫০, সমকাল ২১০, নয়া দিগন্ত ৪১০, দিনকাল ৫৫, ডেইলি স্টার ২০০, ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস ১০, ডেইলি সান ১০, ইনকিলাব ৭০, ইত্তেফাক ১৩০, যায়যায়দিন ১৭, নিউ নেশন ৫, আমাদের কণ্ঠ ২০, ভোরের কাগজ ৩০, জনকণ্ঠ ১৪৫, সংবাদ ৪৫, সংগ্রাম ১৮৪, মানবজমিন ২২, আমাদের সময় ২৬০, মানব কণ্ঠ ৪৭০, আলোকিত সংবাদ ৬৫, বণিক বার্তা ৫৫, ভোরের ডাক ৩০, ভোরের পাতা ৪৫, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ১০, নিউ এইজ ৬, শেয়ার বিজ ১০, আবজারভার ১০ কপি আসে।

খুলনা পেপার হাউজের হুমায়ুন কবীর জানান, প্রথম আলো আসেনা, বাংলাদেশ প্রতিদিন ৮ হাজার ৩শ’, কালের কণ্ঠ ৯৮০, যুগান্তর আসেনা, সমকাল ৩৩০, নয়া দিগন্ত ১১শ’ ৬০, দিনকাল আসেনা, ডেইলি স্টার ৩০০, ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস ১৫, ডেইলি সান ৮, ইনকিলাব ৯০, ইত্তেফাক ১৫০, যায়যায়দিন ২৫, সংবাদ ৩৬, সংগ্রাম ১৩০, মানব জমিন ১০, আমাদের সময় ১৫০, মানব কণ্ঠ ৬২০, বণিক বার্তা ১০, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ১০, নিউ এইজ ৪, শেয়ার বিজ ১০, আবজারভার ৫, সকালের খবর ৩০০ কপি খুলনায় আসে।

তিনি জানান, এর মধ্যে ৭০ শতাংশ পত্রিকা বিক্রি হয় আর অন্যগুলো সৌজন্য সংখ্যা হিসেবে বিলি হয়।

রাহুল এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধীকারী লিটন জানান, প্রথম আলো ৮শ’, বাংলাদেশ প্রতিদিন ৩শ’, কালের কণ্ঠ ১১৫, যুগান্তর ৪২৫, সমকাল ৩৬০, নয়া দিগন্ত ৭০, দিনকাল ১২, ডেইলি স্টার আসেনা, ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস ৩০, ডেইলি সান ৬৫, ইনকিলাব ১২, ইত্তেফাক ৮১, যায়যায়দিন ১০, ভোরের কাগজ ১০, জনকণ্ঠ ২৬০, সংবাদ ১৬, সংগ্রাম ১২, মানবজমিন ২১, আমাদের সময় ১৮০, মানব কণ্ঠ ৭২০, আলোকিত বাংলাদেশ ৮৫, ভোরের পাতা ১১, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ২১, শেয়ার বিজ ১১, সকালের খবর ৮৬০ কপি।

তার মতে, যে কাগজ আসে তার ৯০ শতাংশই চলে। খুলনা থেকে নিয়মিত প্রকাশিত ১৩টি পত্রিকার তথ্য- পূর্বাঞ্চল ২৮ হাজার, ডেইলি ট্রিবিউন ২ হাজার, সময়ের খবর ১২ হাজার, প্রবাহ ২৪ হাজার ৭শ’, অর্নিবাণ ৭ হাজার, খুলনাঞ্চল ৭ হাজার, জন্মভূমি ৩০ হাজার, সান্ধ্য দৈনিক রাজপথের দাবি ৭ হাজার ৫শ’,  তথ্য ২৮ হাজার, দেশ সংযোগ ১২ হাজার, প্রবর্তন ১২ হাজার ৫শ’, আলোকিত সংবাদ ৫ হাজার, দক্ষিণাঞ্চল ৭ হাজার।

সাপ্তাহিক সত্যের সন্ধানে, কোলাহল, আজকের তথ্য ৫শ’ থেকে এক হাজার কপি ছাপা হয়।

সংশ্লিষ্ট পত্রিকার সম্পাদক, ম্যানেজার ও সার্কুলেশন ম্যানেজার থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। তবে তাদের অধিকাংশ তথ্যই বায়বীয়। কেবল মাত্র সরকারের ঘরে দেখানোর জন্য এ সংখ্যা ব্যবহার করা হয় বলে একটি সূত্রে জানা গেছে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক সামিউল হক বলেন, বর্তমানে অনলাইনে পাঠক সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় একদিকে যেমন উল্লেখযোগ্য পর্যায়ে কমে গেছে মুদ্রণ, একই সঙ্গে কমে গেছে বিজ্ঞাপনের হার। এতে করে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে পত্রিকাগুলো।

সূত্র: বাংলানিউজ