সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
পর্নোগ্রাফি দেখে মেয়েরা এখন দ্রুত বেড়ে উঠছে। অল্প বয়সে তারা সন্ত্রাসবাদের মতো সিরিয়াস বিষয় নিয়ে আলোচনা করছে, কিশোর বয়সের আগেই নিচ্ছে মেকআপ।
বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম ডেইলি মেইল।
এনলাইটেন এডুকেশন নামের সংগঠনের প্রধান নির্বাহী ড্যানিয়েল মিলার বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে শিশুরা দ্রুত বড় হয়ে উঠছে। আগে ১৫ বছর বয়সে যা শিখতো এখন শিশুরা তা শেখে ১০ বছর বয়সে।
পশ্চিম অস্ট্রেলীয় সংবাদ মাধ্যম ওয়েস্ট অস্ট্রেলিয়াকে ড্যানিয়েল বলেন, ‘মেয়েরা এখন অল্প বয়সে প্রাপ্তবয়স্ক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হচ্চে। কিন্তু তাদের এ সমস্যা অভিভাবকদের মোকাবেলা করতে হবে শিশুসুলভ আচরণ দিয়ে।’ তিনি বলেন, ‘তারা এখন অল্প বয়সে পর্ন দেখছে যা আমাদের সময় ছিল না। তারা প্রতিনিয়ত তাদের চারপাশের সংস্কৃতিতে প্রভাবিত হচ্ছে।’
ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার গিল্ডফোর্ড গ্রামার স্কুলের এক ছাত্রী এলা ভেলুপিল্লা (১১) সংবাদ মাধ্যমকে বলে, মেয়েরা এখন ১০-১২ বছর বয়সেই মেকআপ নিচ্ছে। তাদের সাধারণ আলোচনায় প্রায়ই সন্ত্রাসবাদ কিংবা পারিবারিক সহিংসতার মতো সিরিয়াস বিষয় স্থান পাচ্ছে।
কালেক্টিভ শাউট নামের সংগঠনের ক্যাম্পেইন ম্যানেজার কেইটলিন রপার ডেইলি মেইলকে বলেন, শিশুদের লাফিয়ে লাফিয়ে বড় করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। মেয়ে শিশুদের ভেতর এখন একটি প্রবণতা হলো তাদেরকে দ্রুত বড় হতে হবে এবং অন্যের সামনে ‘হট’ হিসেবে উপস্থাপন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে একটি চাপ অনুভব করে তারা।
রপার বলেন, মেয়েরা এখন অল্প বয়সে পর্নোগ্রাফি দেখে। কেননা, স্মার্টফোনের মাধ্যমে উপাদানগুলো সহজলভ্য। তিনি বলেন, ‘বাচ্চারা স্মার্টফোনে সহজেই পর্নোগ্রাফির সব ধরনের অ্যাক্সেস করতে পারে। এমনকি সবচেয়ে বেশি হার্ডকোর, সহিংস এবং অন্যান্য ক্ষতিকর ফর্মগুলোও তারা পেয়ে যাচ্ছে।’
রপার আরো বলেন, ‘সফটকোর পর্ন’ নামের প্রাপ্তবয়স্কদের ওয়েবসাইটের বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে শপিং সেন্টার ও সড়কের মতো খোলা জায়গায়। ফলে খুব সহজে শিশুরাও ঢুকতে পারছে এসব সাইটে।
কালেক্টিভ শাউট একটি অস্ট্রেলীয় সংগঠন। এটি তৃণমূল নারী ও মেয়ে শিশুদের ওপর যৌন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাচ্ছে।
প্রচারাভিযানে বলা হচ্ছে, মেয়েরা অল্প বয়সে যৌন আবেদনে প্রভাবিত হচ্ছে। তারা ‘উচ্চ প্রযুক্তির প্রচারমাধ্যম, বিজ্ঞাপন ও সংস্কৃতি থেকে ক্রমাগত যৌনতাবিষয়ক মেসেজ পাচ্ছে। এটি তাদেরকে যথেষ্ট সমস্যায় ফেলে। তারা অল্প বয়সের মেকআপ নেওয়া শুরু করে।
যৌনতার এই প্রভাব তাদের শারীরিক ও মানসিক সমস্যা সৃষ্টি করছে। এসব সমস্যার মধ্যে রয়েছে লজ্জাবোধ এবং নিজেদের শরীরের প্রতি অশ্রদ্ধা। এতে খাদ্যাভ্যাস এবং বিষয়ে নেতিবাচক পরিবর্তন আসতে পারে। এ ক্ষেত্রে অভিভাবকদের ভূমিকা পালন করতে হবে। তাঁদের বাচ্চাদের অনলাইন অ্যাক্সেস সামগ্রী সম্পর্কে সচেতন হতে হবে।
রপার বলেন, ‘অনেক বাবা-মা তাঁদের নিজেদের জায়গা থেকে যথেষ্ট ভালো কাজ করছেন। কিন্তু তাঁদের একার পক্ষে তো আর ১০০ বিলিয়ন ডলারের পর্ন শিল্পের বিরুদ্ধে লড়াই করা সম্ভব নয়।’
রপার সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, যেন যুক্তরাজ্যের মতো অস্ট্রেলিয়ায়ও পর্নগ্রাফির ক্ষেত্রে এইজ ভেরিফিকেশন সিসটেম চালু করা হয়। যাতে পর্ন প্রত্যাশীরা প্রমাণ করতে পারে তাদের বয়স কমপক্ষে ১৮ বছর।