সোমবার , ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ঝুঁকি কম: ইআইইউ’র তথ্য

Paris
সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৩ ১২:৩৬ অপরাহ্ণ

বিশেষ প্রতিনিধি

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ঝুঁকি কম বলে জানিয়েছে লন্ডন ভিত্তিক ইকোনমিক ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ)। সংস্থাটি বলছে, দক্ষিণ এশিয়ায় শ্রীলঙ্কা পাকিস্তান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি দুর্বল অবস্থানে আছে।

 

সম্প্রতি ইআইইউ এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, এশিয়ায় আর্থিক ঝুঁকি কমে এলেও পাকিস্তান শ্রীলঙ্কা এখনো উচ্চঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তবে সে তুলনায় কম ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ।

 

’নো রিটার্ন টু চিপ মানিশীর্ষক একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক সুদহারের সাম্প্রতিক ঊর্ধ্বগতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর চাপ বাড়িয়েছে।  এর ফলে ২০২২ সালে ছয়টি দেশ ঋণখেলাপি হয়েছে। চলমান ২০২৩২৪ অর্থবছরে আরও কিছু দেশ ঋণখেলাপি হতে পারে। এর পেছনে অন্যতম কারণ উচ্চ সুদহার।

 

বাংলাদেশ নিয়ে পূর্বাভাসে প্রতিষ্ঠানটি বলছে, বহির্বিশ্বের অর্থায়নের শর্ত পূরণ করতে গিয়ে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে। এর পাশাপাশি ২০২৩২৪ অর্থবছরে রাজস্ব ঘাটতি জিডিপির শতাংশের বেশি হতে পারে। 

 

তবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী দেশের বাজেট ঘাটতি জিডিপির দশমিক শতাংশের বেশি হবে। ২০২৩২৪ অর্থবছরে জিডিপি অনুপাতে দেশের সরকারি ঋণ কিছুটা পরিমিত হতে পারে, যা হবে ২০২৩২৪ অর্থবছরে ৪০ শতাংশের কম। অর্থবছরে জিডিপি অনুপাতে বৈদেশিক মুদ্রায় সরকারি ঋণ হবে ১০ থেকে ৩০ শতাংশ।

 

প্রতিবেদনে পণ্য রপ্তানি, প্রাথমিক আয় রেমিট্যান্সের শতাংশ হিসাবে মোট বৈদেশিক ঋণ পরিষেবা ১০ শতাংশের কম হবে বলে অনুমান করা হয়েছে। এতে চলতি হিসাবের ভারসাম্যে ঘাটতি ধরা হয়েছে শতাংশের বেশি।

 

এর আগে ইআইইউয়ের আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষ ২০টি অর্থনীতির একটি হবে। এই তালিকায় বাংলাদেশের সঙ্গে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়াও স্থান পাবে। ফলে চীনের বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশ আকর্ষণীয় গন্তব্য হতে পারে।

 

তাতে বলা হয়, বাংলাদেশের বাজারের আকার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর নির্ভর করে এই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে ইলেকট্রনিক ভোগ্য পণ্য, তথ্যপ্রযুক্তি সেবা, টেলিযোগাযোগ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি গাড়ির কথা বলা হয়েছে।

 

প্রতিবেদনে বিনিয়োগের গন্তব্য হিসেবে কোন দেশগুলো চীনের বিনিয়োগকারীদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় হতে পারে, তাদের নিয়ে একটি ্যাংকিং করেছে ইআইইউ। সেই ্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বাদশ। এক দশক আগে ২০১৩ সালেও এমন একটি ্যাংকিং করা হয়েছিল, যেখানে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৫২তম। অর্থাৎ গত এক দশকে চীনের বিনিয়োগকারীদের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। ১০ বছরে ৫২তম স্থান থেকে ১২তম স্থানে উঠে আসা এর প্রমাণ।

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিএনপিজামায়াতের পাঁচ বছর এবং সামরিক সরকারের পরবর্তী বছরগুলোতে বাংলাদেশের অর্থনীতি সম্পূর্ণ মন্দার কবলে পড়েছিল। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির পাঁচটি দেশের মধ্যে একটি৷

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৯ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর আমরা দেশকে সুপরিকল্পিতভাবে এগিয়ে নিয়ে যাই। আমরা স্বল্প, মধ্যম এবং দীর্ঘ পরিকল্পনা নিয়ে দেশ গঠনের কাজে মনোনিবেশ করি। গণতান্ত্রিক পরিবেশ, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, সরকারের ধারাবাহিকতা এবং পরিকল্পিত উন্নয়ন কর্মসূচি দ্রুত বাংলাদেশের সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন বিশ্বের বর্ধনশীল পাঁচটি অর্থনীতির একটি। জিডিপিতে আমরা বিশ্বের ৩৫তম, ২০৩৭ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ২০তম জিডিপির দেশ হিসেবে আবির্ভূত হবে বলে আমরা আশা রাখি।

 

সর্বশেষ - অর্থ ও বাণিজ্য