মোঃ কায়ছার আলী :
তাওবা অর্থ হচ্ছে খারাপ কাজ থেকে ফিরে আসা ও বিরত থাকা। এর শুরু হয় অনুশোচনা দিয়ে এবং শেষ হয় সৎকাজ ও আনুগত্যের মাধ্যমে। এই পরিপূর্ণ তাওবার মধ্য দিয়েই হৃদয় গুনাহ ও কলুষমুক্ত হয় এবং মানুষকে সৎ কাজে উদ্বুদ্ধ করে। এটাই হচ্ছে “তাওবাতুন নাসুহা” তথা খাঁটি তাওবা যা হৃদয়কে ক্রমাগত সতর্ক করে এবং কখনো আর গুনাহের পুনরাবৃত্তি ঘটতে দেয় না। সূরা আত-তাহরীমের আট নং আয়াতে “তাওবাতুন নাসুহা” এর কথা বলা হয়েছে।
ধন-সম্পদ ও সন্তানাদির মোহ মানুষেকে দ্বীন থেকে বিচ্যুত করে দেয়। মহান আল্লাহ তায়ালা নবী ও মুমিনদের ভালোবাসেন, তাই তাদেরকে অপমানিত করতে চান না। মুমিনরা ভুল করলেও তাদেরকে ভুল-ত্র“টি শোধরানোর সুযোগ করে দেন। নবম হিজরীর জিলক্বদ মাসে বা এর কাছাকাছি সময়ে সূরা আত্-তাওবা নাযিল হয়। এই সুরায় তাবুক যুদ্ধে না যাওয়া বা পিছনে পড়ে থাকা তিন সাহাবীর তাওবা কবুল হওয়ার সোনালী অতীত উজ্জ্বল ঘটনা আজকের লেখার মূল বিষয়। যা বাস্তবিকই খুবই মর্মান্তিক এবং শিক্ষাপ্রদ। সে সময়কার বাস্তব অবস্থা বা কঠিন দুঃসময় মহান রাব্বুল আলামীনের জানা ছিল। আমাদের মনে রাখতে হবে সমাজের বাস্তবতা বা প্রেক্ষাপট ও বই পুস্তক পাঠ করে জ্ঞান অর্জন করা একরকম নয়। সেই সময়টা ছিল ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের, গরম ছিল অসহনীয়, যুদ্ধের সাজ সরঞ্জাম ও পানির পরিমান ছিল অপ্রতুল। মুনাফিকী কিংবা ঈমানের দুর্বলতা অথবা অবসাদ ও গাফলতির কারণে তাদেরকে ভৎসনা করা হয়েছে। ভীষণ ক্ষুধা, তৃষ্ণা, কষ্ট ও খাদ্যের অভাবে তারা দুজন মানুষ অর্ধেক অর্ধেক করে একটি খেজুর ভাগ করে খেতেন। আবার কখনো কখনো একটা খেজুর ভাগ করে খেতেন। একজন একটু চুষে কিছু পানি পান করে নিতেন। আবার দ্বিতীয়জন তার কিছু অংশ সামান্য চুষে তার পানি খেয়ে নিতেন। পিপাসায় কাতর হয়ে তারা মনে করল ঘাড় বুঝি ভেঙ্গে যাবে। কিছু কিছু লোক নিজেদের উট জবাই করে থলিতে জমা করে রাখা পানি পান করত। কিছু পানি বুকের সাথে জড়িয়ে পরের জন্যে বাঁচিয়ে রাখত।
পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছাল যে, “তাদের মধ্যকার একটি দলের মন বাঁকা হয়ে পড়ার উপক্রম হয়েছিল”। তারা রাসূলের দ্বীনে সন্দেহ পোষন করতে শুরু করল। যে কষ্ট তারা ভোগ করছিল তার কারণে এবং সফর ও যুদ্ধের কষ্টের কারণে তাদের অন্তরে বক্রতা সৃষ্টি হচ্ছিল। অতঃপর আল্লাহ তায়ালা তাদের উপর করুণার দৃষ্টি দিলেন। তারা দ্বীনের ওপর আবার দৃঢ় হয়ে দাঁড়িয়ে গেল। এই কঠিন পরিস্থিতিতে মুসলিম জনগোষ্ঠির মাঝে যে বিভিন্ন ধরনের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের মানুষের জন্ম হয় তার চিত্র আমাদের সামনে আল্লাহ তায়ালা বর্ণনা করেছেন। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে সেসব মানুষের ঈমানের বিভিন্ন পর্যায়গুলো আমাদের সামনে তুলে ধরে আমাদেরকে পাকাপোক্ত ঈমানদার বানানো। ইসলামের বিরুদ্ধে যড়যন্ত্র ও পরিকল্পনা, দ্বিধাসংশয় সৃষ্টি, জিহাদ থেকে আরামে থাকা, মুনাফিকীতে ভরপুর এবং কেউ কেউ নিজেদের গুনাহের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। কা’আব ইবনে মালেক, হিলাল ইবনে উমাইয়া ও মুরারা ইবনে রুবাই (রাঃ) এরা তিনজনই ছিলেন সাচ্চা মুমিন। ইতোঃপূর্বে তারা নিজেদের নিষ্ঠা ও সততার প্রমান বহুবার দিয়েছেন। দ্বীন ইসলামের জন্য তারা কুরবানীও করেছেন।
দ্বিতীয় ও তৃতীয়জন বদরে সাহাবী। বদরের ঘটনা মানুষের মনে বেশি খ্যাতি অর্জন করেছে। যদিও বদরের যুদ্ধে শরিক না হওয়ার জন্য কাউকে শাস্তির হুমকি দেওয়া হয়নি। প্রথমজন বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহন না করলেও “বাইয়াতে আকাবা” রাতে নবীর পাশে উপস্থিত ছিল। রাসূলের পাশে বসে আনুগত্য ও অঙ্গীকারের শপথ করেছিল। বদর ছাড়া আর সবকটি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল। এই তিন সাহাবীর ব্যাপারে নবী (সাঃ) তাবুক যুদ্ধ থেকে ফিরে এসে অনুপস্থিতির জন্য সিদ্ধান্ত মূলতবী রাখলেন। কা’আব ইবনে মালেক (রাঃ) তাঁর ছেলে আব্দুল্লাহকে বার্ধক্য অবস্থায় অন্ধ হয়ে গেলে পথ প্রদর্শনের সময় নিজের দুঃখভরা কাহিনীটি বলতে লাগলেন, “আমি তখন এত সম্পদের অধিকারী ছিলাম যে অন্য কোন সময় আমার হাতে এত মালসম্পতি ছিল না।
আল্লাহর কসম তখন দুটো সওয়ারীর উট মজুদ ছিল। নবী (সাঃ) যখন কোন যুদ্ধের জন্য বের হতেন তখন তিনি ভিন্ন এক কৌশল অবলম্বন করতেন। যেদিকে যাবার এরাদা করতেন সেদিকে না গিয়ে অন্য দিক দিয়ে মদীনা থেকে বের হতেন। কিন্তু তিনি তাবুকের যুদ্ধে এ ধরনের কৌশল অবলম্বন করেননি। পরিস্কার করে বলে দিলেন তিনি সিরিয়া অভিমুখে রোমানদের সাথে যুদ্ধে করার জন্য যাবেন। প্রচন্ড গরম, দীর্ঘ রাস্তা, পথে ছিল পাহাড় মরুভূমি এবং শত্র“র সংখ্যা আমাদের তুলনায় অনেক বেশি। নবী (সাঃ) বললেন, “সবাই যেন দুশমনদের সাথে যুদ্ধ করার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুতি গ্রহণ করে।” মুসলিম বাহিনীর সংখ্যা ছিল অনেক এবং নাম সংরক্ষনের জন্য কোন খাতাপত্র ছিল না। যদি কোন মানুষ অনুপস্থিত থাকতে চাইত, যতক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে তা প্রকাশ করার জন্য কোন ওহী না আসত সে অনুপস্থিত থাকতে পারত। সে সময় গাছে গাছে পাকা ফল এবং ছায়ায় বসে থাকাটা আমার বেশ ভালই লাগত। যুদ্ধের প্রস্তুতি পর্ব শেষ হলে আমি সকাল বেলায় তাদের কাছে যেতাম এবং পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি ছাড়াই আবার ফিরে আসতাম। মনে মনে বলতাম, আমি যখনই চাইব সাথে সাথে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারব। এভাবেই নবী (সাঃ) ও মুসলমানেরা প্রস্তুতি শেষ করে যুদ্ধের জন্য রওয়ানা হয়ে গেলেন। আমি দ্বিধা দ্বন্দ্বে ভুগছি আর তারা ধীরে ধীরে অনেক দূরে চলে গেলেন।
এরপর ভাবলাম, আমি রওয়ানা দেব এবং অচিরেই তাদের সাথে মিলিত হব। আফসোস! আমি গেলাম না কিন্তু মনে হল এটা আমার তাক্দিরের লিখন ছিল না। আল্লাহর রাসূলের চলে যাওয়ার পর মদীনার যেদিকে বের হতাম নিজেকে বড় চিন্তিত, অপরাধী এবং অনুসরণ রার মত কউকেই পেতাম না। মদীনার গলি ছিল জনমানবহীন। শুধু মুনাফেক, বৃদ্ধ, বৃদ্ধা, বালক, বালিকা, মহিলা, কতিপয় অসুস্থ, দুর্বল ও পঙ্গু ব্যক্তি ছাড়া তখন কেউই নেই। নবী (সাঃ) তাবুকে পৌঁছার আগ পর্যন্ত আমাকে স্বরণ করেননি। পৌঁছার পর মানুষের মাঝে বসে তিনি জানতে চাইলেন, কা’আব বিন মালেক কোথায়? বনী সালমার এক ব্যক্তি বললেন, “ইয়া রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তাকে তার দুটি চাদর ও দু পাশের দিকে তাকানোর কাজটি অথবা স্বচ্ছলতা ও আরামপ্রিয়তা এখানে আসা থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছে।” একথা শুনে মোয়ায় বিন যাবাল বললেন, “তুমি তার সম্পর্কে খুবই খারাপ কথা বললে। আমরা তার সম্পর্কে ভালো ছাড়া অন্য কিছুই জানি না।” নবী (সাঃ) চুপ করে থাকলেন। কা’আব বলেন, “যখন আমি জানতে পারলাম যে রাসূল (সাঃ) তাবুক থেকে ফিরে আসছেন তখন আমি ভয়ানক চিন্তিত হয়ে গেলাম।
আমি মিথ্যার আশ্রয় নিতে চইলাম এবং ভাবলাম কিভাবে তাঁর অসন্তুষ্টি থেকে বাঁচব? এ ব্যাপারে পরিবারের বুদ্ধিমান সদস্যদের অভিমত চাইলাম। কিন্তু নবী (সাঃ) মদীনায় পৌঁছামাত্র আমার মন থেকে সব বাতিল খেয়াল মুছে গেল। এমনকি একথাও বুঝে নিলাম যে, মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে আমি বাঁচতে পারব না। অতএব মনে মনে পাকাপোক্ত এরাদা করে নিলাম যে, আমি সত্য কথা বলব। নবী (সাঃ) মদীনায় প্রবেশ করলেন এবং প্রতিবারের মত মসজিদে দু’রাকাত নামাজ পড়ে মানুষের সাথে দেখা করার জন্য বসে যেতেন। এ দুটো কাজ করার পর যারা জিহাদে অংশগ্রহণ করেননি তারা একে একে নানা ওযর- আপত্তি-অজুহাত বাহানা ও মিথ্যাকসম নিয়ে নবীজীর সামনে হাজির হতে লাগল। এদের সংখ্যা আশির চাইতে কিছু বেশি হবে। নবী (সাঃ) তাদের জন্য দোয়া করলেন এবং তাদের মনের ভিতরের ব্যাপারটি আল্লাহর তায়ালার উপরে ছেড়ে দিলেন। আমি পৌঁছে সালাম করা মাত্রই তিনি রাগের হাসি হাসলেন এবং বললেন, “এদিকে এসো।” আমি নবী (সাঃ) এর সামনে বসে গেলাম। তিনি আমাকে সরাসরি জিজ্ঞাসা করলেন, “বল তুমি কেন পেছনে থেকে গেলে? আমি বললাম , “হে নবী (সাঃ) আল্লাহর কসম, যদি আজ আমি আপনার সামনে না বসে কোন দুনিয়াদার মানুষের সামনে বসতাম তাহলে আমি বাহানা পেশ করতাম এবং আপনাকে সন্তুষ্ট করতে চাইতাম। কিন্তু আল্লাহ তায়ালা আপনাকে আমার ওপর অসন্তুষ্ট করে দিতেন। আর যদি সত্য কথা বলি যার কারণে আমার উপর আপনি অসন্তুষ্ট হয়ে যাবেন। কিন্তু আমার আশা আছে এর পরিণাম ভালই হবে।
আমি সত্য কথা বললাম।” নবী (সাঃ) বললেন, “তুমি ওঠো যতক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ তায়ালা তোমার ব্যাপারে ফয়সালা না করেন আমি কিছুই করতে পারব না। অতঃপর আমি চলে এলাম। বনী সালমার কিছু লোক আমার পেছনে পেছনে এসে বলতে লাগল তুমি তাদের মত ওযর-আপত্তি-বাহানা করতে পারতে তাহলে বেঁচে যেতে। একথা বলে তারা আমাকে তিরস্কার করতে লাগল। পরে ভাবলাম, পুনরায় ফিরে যাব এবং নিজেকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করব। এ সময় আমি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলাম আরও কারও সাথে কি এমন ব্যবহার করা হয়েছে। তারা বললেন, হ্যাঁ আরও দুইজন। আমি তাদের পূর্ব থেকেই চিনতাম এবং এটা ছিল আমার অনুকরণের বিষয়। আমি ফিরে এলাম। নবী (সাঃ) আমাদের তিনজনের সাথে কথা না বলার জন্য লোকদের আদেশ করলেন।
শুধু মানুষ নয় মনে হয় জমিন ও আমাদের জন্য বদলে গেছে। দীর্ঘ পঞ্চাশ দিন পর্যন্ত আমাদের সাথে কেউ কথা বলত না। আমি আমার সম্প্রদায়ের মধ্যে শক্তিশালী এবং কঠিন প্রকৃতির ছিলাম, তাই বাজারের গলিতে ঘোরাফেরা করতাম। কিন্তু ঐ দুইজন লোক মুখ লুকিয়ে ঘরে থাকত এবং সর্বদা কাঁদতে থাকত। নামাজে গেলে নবী (সাঃ) কে চুরি করে করে দেখতাম, যখন আমি নামাজে থাকতাম, তখন তিনি আমার দিকে তাকাতেন। আবার আমি যখন তাঁর দিকে তাকাতাম তখন তিনি দৃষ্টি সরিয়ে নিতেন। এই অবরোধ চলাকালীন আমার চাচাতো ভাই, প্রিয় ব্যক্তি কাতাদার বাগানের দেয়ালের পাশে গিয়ে বসে সালাম দিলাম। সে চুপ থাকল এবং কথা বলতে চাইলনা। তখন আমি বললাম আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে (সাঃ) আমি ভালোবাসি। সে বলল আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ভালো জানেন। এ সময় আমার দু’চোখ বেয়ে অশ্র“ধারা নামল, আমি ফিরে এলাম। একদিন মদীনার বাজারে গেলে এক সিরীয় কিবতী ফসল বিক্রি করার জন্য এসে আমার খোঁজ করল এবং সম্রাট গাস্সানের একটি চিঠি আমাকে দিল। তাতে লেখা আছে তুমি আমাদের দলে আস। আমরা তোমার সাথে ভালো ব্যবহার করব। আমি ভাবলাম এটা আমার জন্য আরেকটি পরীক্ষা, চিঠিখানা চুলায় জ্বালিয়ে দিলাম। দীর্ঘ পঞ্চাশ দিনের অবরোধের চল্লিশ দিন পর নবী (সাঃ) এর একজন প্রতিনিধি এসে আমাদেরকে স্ত্রীদের থেকে আলাদা থাকার আদেশ দিলেন। হিলাল ইবনে উমাইয়া শুধু অক্ষম ও বৃদ্ধ নয় তার কোন খাদেমও ছিল না। আমার স্ত্রী আপন লোকদের কাছে চলে গেল, যতক্ষন পর্যন্ত আল্লাহ তায়ালা একটা ফায়সালা না করেন।
পঞ্চাশ দিন পর জীবন থেকে নিরাশ জমিনের বিশালতার পরিবর্তে সংকীর্ণতা এমন সময় আমি আমার ছাদে ফজর নামাজ পড়লাম। ঠিক তখনি প্রশস্ত সালা পাহাড়ের উপর থেকে একজন ব্যক্তির আওয়াজ শুনলাম। সে খুব জোরে বলল, হে কা’আব বিন মালেক শুভ সংবাদ তোমার জন্যে । আমি সেজদায় পড়ে গেলাম। বুঝতে পারলাম, খুশির সময় এসে গেছে। নবী (সাঃ) ফজরের নামাজরে পর আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে আমাদের তাওবা কবুল করার কথা ঘোষনা দেন। সুসংবাদ দেওয়ার জন্য তাকে দুটো কাপড় পড়িয়ে দিলাম এবং নবী (সাঃ) এর সাথে সাক্ষাতের জন্য গেলাম । সকলে মুসাফাহ্ করল এবং মোবারকবাদ জানাল। আমি বললাম, সুসংবাদ কি আপনার পক্ষ থেকে না আল্লাহর পক্ষ থেকে। নবী (সাঃ) বললেন, “আল্লাহর পক্ষ থেকে। নবী (সাঃ) এর চেহারা খুশির সময় ঝলমল করত যেন চাঁদের একটি টুকরো। নবী (সাঃ) বললেন, “তোমার মা যেদিন তোমাকে জন্ম দিয়েছে তারপর থেকে আজকের দিনটি তোমার জন্য সবচেয়ে বেশি উৎকৃষ্ট।”
আমি আমার সমস্ত সম্পদ দান করতে চাইলাম। নবী (সাঃ) বললেন, এরূপ করনা, কিছু রেখে দাও এবং কিছু সাদ্কা কর। মানুষের স্বাভাবিক দুর্বলতার কারণে তাদেরকে এরকম পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছিল। সত্যবাদিতা ও তাকওয়া ছিল তাদের বড় সম্পদ। সম্মানিত পাঠক ভাই ও বোনেরা এ কাহিনী টুকু পড়তে সময় লাগবে হয়তো ১৫-২০ মিনিট কিন্তু উপলব্ধি করতে লাগবে সারাজীবন। তাদের দুঃসময়ের পঞ্চাশ দিন এবং মানুষের সু সময়ের পঞ্চাশ দিন কি এক? দুঃসময়ের এক মিনিট সহজে অতিক্রম হতে হয়না। আমাদের সকলের জীবন সত্যের উপর টিকে থাকুক এ দোয়া করি । পরিশেষে সূরা আত্-তাওবার ১১৮ নং আয়াতের সরল অর্থ লিখে মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে ভুল ত্র“টি ক্ষমা চেয়ে এবং নবী (সাঃ) এর প্রতি দরূদ পেশ করে শেষ করছি। “এবং অপর তিনজনকে যাদেরকে পেছনে রাখা হয়েছিল, যখন পৃথিবী বি¯তৃত হওয়া সত্ত্বেও তাদের জন্য সংকুচিত হয়ে গেল এবং তাদের জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠল, আর তারা বুঝতে পারল যে, আল্লাহ ব্যতীত আর কোন আশ্রয়স্থল নেই অতঃপর তিনি সদয় হলেন তাদের প্রতি যাতে তারা ফিরে আসে। নিঃসন্দেহে আল্লাহ দয়াময় ও করুনাশীল।”
লেখকঃ শিক্ষক, প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট