প্রতিবেশী তিন দেশের সহযোগিতায় ভারত মহাসাগরে চীন নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের জন্য অবস্থান নিয়েছে। চীনের এমন কাছে ভারতও বসে নেই। উল্টো বেইজিংকে চাপে ফেলতে পাল্টা ব্যবস্থার পরিকল্পনা নিয়েছে দিল্লি। চীনকে এর কড়া জবাব দিতেই দক্ষিণ চীন মহাসাগরে দিল্লি নিয়ন্ত্রতিত দ্বীপগুলোতে ব্যাপক সেনা মোতায়েন করবে ভারত।
বলা হচ্ছে, মিয়ানমার, পাকিস্তান ও ইরানের বন্দরগুলোর সাহায্যে চীনা নৌবাহিনী ভারত মহাসাগরে আধিপত্যের জন্য অবস্থান নিয়েছে। এর পাল্টা জবাব দিতে ভারত তার গণ্ডির মধ্যে থাকা দক্ষিণ চীন সাগরে নৌ চলাচল চলাচলে বাধা দূর করতে আঞ্চলিক ভূখণ্ডের মধ্যে থাকা দ্বীপগুলোতে দ্রুত অবকাঠামোগত উন্নয়নের পরিকল্পনা করছে।
সামরিক সূত্রের বরাত দিয়ে হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, ভারত খোহাসা, উত্তর আন্দামানের শিবপুর ও নিকোবারে বিমানবাহিনীর পরিপূর্ণ যুদ্ধঘাঁটি তৈরি করবে। বঙ্গোপসাগর ও মালাক্কা প্রণালী এবং আরব সাগর থেকে আদেন উপসাগর পর্যন্ত উভয় এলাকার নিরাপত্তার জন্য লক্ষদ্বীপের আগাত্তি আকাশপথটি সামরিক অভিযানের জন্য উন্নত করা হবে।
তিন বাহিনীর কমান্ডার বলেন, দুই দ্বীপের অঞ্চলগুলো ভারতের নতুন রণতরীর মতো কাজ করবে। কারণ নৌবাহিনী মূল ভূখণ্ড থেকে ওই অঞ্চলে পৌঁছতে অনেক সময় লাগে। উভয় দ্বীপের এই সমুদ্র পথ দিয়ে বিশ্বের অর্ধেকের বেশি বাণিজ্য চলমান রয়েছে। এটি একটি ব্যস্ততম সমুদ্র পথ।
এদিকে লাদাখে সীমান্ত নিয়ে চীনের সঙ্গে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ভারতের পক্ষ থেকে শান্তিপূর্ণ আলোচনার কথা বলা হচ্ছে। তবে আলোচনায় সমাধান না হলে লাদাখে চীনা ‘আগ্রাসন’ ঠেকাতে প্রয়োজনে সেনা অভিযান চালানো হবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন ভারতের চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ (সিডিএস) বিপিন রাওয়াত।এজন্য সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বার্তা সংস্থা এএনআইকে দেয়া সাক্ষাৎকারে রাওয়াত বলেন, ‘শান্তিপূর্ণভাবে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছে ভারত। তবে দু’দেশের মধ্যে যদি সেনা এবং কূটনৈতিক পর্যায়ের আলোচনা ব্যর্থ হয়, তা হলে সেনা অভিযানকেই বিকল্প পথ হিসেবে বেছে নেব আমরা।’
লাদাখের পরিস্থিতি নিয়ে কী কী পদক্ষেপ করা যায় পুরো বিষয়টি প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল পর্যালোচনা করছেন বলেও জানান রাওয়াত।
তিনি বলেন, ‘চীনা সেনারা যেন লাদাখে না ঢুকতে পারে সেজন্য কেন্দ্রীয় সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা শান্তিপূর্ণ পথে দু’দেশের বিতর্ক মিটিয়ে ফেলার পক্ষপাতী। কিন্তু নিয়ন্ত্রণ রেখায় আগের অবস্থা ফিরিয়ে আনার সব চেষ্টা যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে সেনাবাহিনী তৈরি আছে।’
প্রায় তিন মাস ধরে ভারত-চীনের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে ঘাঁটি গেড়েছে চীন। বার বার তাদের সঙ্গে আলোচনা করেও এ বিষয়ে এখনও কোনো সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।
গালওয়ান, হটস্প্রিং, ফিঙ্গার পয়েন্ট ফোর থেকে সেনা সরালেও ভারতীয় ভূখণ্ডের প্যাংগং, দেপসাঙে এখনও ঘাঁটি গেড়ে বসে আছে চীনা সেনারা।