জিম্মি-বন্দি বিনিময় এবং ত্রাণ সরবরাহ অব্যাহত রাখতে গাজা উপত্যকায় অস্থায়ী মানবিক বিরতির মেয়াদ আরও বৃদ্ধির পক্ষে থাকলেও এখনই সেখানে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চাইছে না যুক্তরাষ্ট্র।
ব্রিফিংয়ে জন কিরবি বলেন, ‘আমরা এখনই (গাজায়) কোনো স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চাইছি না। তবে আমরা চাই, গাজায় যে মানবিক বিরতি চলছে— তা আরও বৃদ্ধি পাক।’
প্রসঙ্গত, কিরবির এই ব্রিফিংয়ের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই গাজা উপত্যকায় ফের অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি স্থল ও বিমান বাহিনী। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে বলেছে, হামাস যুদ্ধবিরতির শর্ত ভাঙার কারণে এই অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
সেই প্রস্তাবে গোষ্ঠীটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ইসরায়েল যদি গাজা উপত্যকায় চার দিনের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে, রাফাহ ক্রসিংয়ে অপেক্ষারত ত্রাণ, জ্বালানি ও মানবিক সহায়তা পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে প্রবেশ করতে দেয় এবং ইসরায়েলি কারাগারগুলো থেকে অন্তত ১৫০ জন বন্দিকে মুক্তি দেয়, তাহলে নিজেদের হাতে থাকা জিম্মিদের মধ্যে থেকে ৫০ জনকে ছেড়ে দেবে হামাস।
সেই প্রস্তাব মেনে নিয়ে ২৫ নভেম্বর চার দিনের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে ইসরায়েল। পরে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার, মিসর, ইউরোপ ও অন্যান্য মধ্যস্থতাকারীদের তৎপরতায় যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আরও তিন দিন বাড়ানো হয়।
যুদ্ধবিরতির ৬ দিন ২৫-৩০ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ৯৪ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। বিপরীতে ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগার থেকে ১৮০ জনকে ছেড়ে দিয়েছে ইসরায়েলও। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছিলেন, হামাস যদি প্রতিদিন ১০ জন জিম্মিকে মুক্তি দেয় তাহলে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ একদিন করে বাড়ানো হবে।
অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি চুক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত ছিল—বিরতির এক একটি দিনে যেসব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে— তাদের নামের তালিকা স্থানীয় সময় সকাল ৭ টার (বাংলাদেশ সময় বেলা ১১টা) আগে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করবে হামাস।
গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত হামাস এই শর্ত মানলেও শুক্রবার নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও গোষ্ঠীটি সেই তালিকা সরবরাহ করেনি বলে জানিয়েছে আইডিএফ।
তাছাড়া এই দিন শেষ রাতে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর হিলটের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে গাজা উপত্যকা থেকে কয়েকটি রকেট ছোড়া হয়েছে বলেও নিজেদের বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী।
শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টা (বাংলাদেশ সময় বেলা ১১টা) থেকে গাজায় অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলের বিমান ও স্থলবাহিনী। সেই অভিযানে এখন পর্যন্ত সেখানে নিহত হয়েছেন ৩২ জন।