কানাডায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, কানাডায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা সাত লাখ ২৫ হাজার ৪৯৫ জন, মৃত্যুবরণ করেছেন ১৮ হাজার ৪৬২ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ছয় লাখ ৩৮ হাজার ৬২০ জন।
কানাডার প্রধান চার প্রদেশ অন্টারিও, ব্রিটিশ কলম্বিয়া, আলবার্টা ও কুইবেকেও করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে হাসপাতাল এবং নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে ব্যাপকহারে চাপ বেড়েছে।
গত ২৫ ডিসেম্বর থেকে কুইবেকে আবার লকডাউন শুরু হয়েছে। একমাত্র জরুরি ফার্মেসি, গ্রোসারি ছাড়া সব বন্ধ।
কুইবেকের জনসাধারণকে বলা হয়েছে, একান্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া গ্রোসারি স্টোরগুলোতে কেউ যেন একই দিনে বারবার ছোটখাটো পণ্য ক্রয়ে না যান এবং রেস্টুরেন্টগুলো শুধু টেকআউট ও ড্রাইভ থ্রো খোলা থাকবে।
তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মাস্ক পরে এবং দূরত্ব বজায় রেখে চলতে হবে। পুলিশ, স্বাস্থ্য পরিদর্শকরা কড়াকড়িভাবে নজরদারিতে রয়েছে।
কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় করোনা মহামারীর দ্বিতীয় পর্যায়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিনই বেড়েই চলেছে। সামাজিক দূরত্ব, স্বাস্থ্যবিধি, সরকার কর্তৃক বিভিন্ন বিধিনিষেধ দেওয়া সত্ত্বেও করোনাভাইরাসকে কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।
ভয়াবহ এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন প্রদেশে ইতিমধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ বিভিন্ন নিয়মকানুন চলমান রয়েছে।
কানাডার বিভিন্ন প্রদেশে কড়াকড়ি নজরদারিও চলছে। লোক সংখ্যার দিক থেকে কানাডার বৃহওম প্রদেশ অন্টারিওতে প্রতিদিনই প্রচুরসংখ্যক করোনা আক্রান্ত রোগীর খবর পাওয়া যাচ্ছে।
এর মধ্যে খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া অন্টারিওবাসীকে বাড়িতে অবস্থান করতে বলা হয়েছে। অস্বাভাবিক সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকায় এই নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন অন্টারিওর প্রিমিয়ার ডাগ ফোর্ড।
ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতেই এ উদ্যোগ বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে নতুন বিধিনিষেধ রয়েছে; সেগুলো হলো- এজেক্স, পিল রিজিয়ন, টরন্টো, ইয়র্ক রিজিয়ন ও হ্যামিলটনে ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শ্রেণিকক্ষে কোনো পাঠদান হবে না। সুযোগ থাকলে কর্মীদের বাড়িতে বসে কাজের সুযোগ দিতে হবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে।
ঘরের বাইরে পাঁচজনের বেশি মানুষ এক জায়গায় জড়ো হতে পারবে না। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনগুলোর ভেতরে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরতে হবে। এছাড়া আউটডোরে দুই মিটারের শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব না হলে সেক্ষেত্রেও মাস্ক পরার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
অনাবশ্যক সব খুচরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রাত ৮টার মধ্যে অবশ্যই বন্ধ করতে হবে এবং কোনোমতেই সকাল ৭টার আগে খোলা যাবে না। তবে খাদ্যপণ্য বিক্রয়কারী দোকান, গ্যাস স্টেশন, ফার্মেসি, কনভিনিয়েন্স স্টোর বা টেক-আউট সেবা প্রদানকারী রেস্তোরাঁর ক্ষেত্রে সময়ের এ বাধ্যবাধকতা প্রযোজ্য হবে না।
অনাবশ্যক নির্মাণকাজের ওপরও আরও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। তবে জরিপ কাজকে এ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই প্রতীক্ষিত ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হয়েছে কানাডায়। তবুও করোনা নিয়ন্ত্রণে অনেক ক্ষেত্রেই হিমশিম খেতে হচ্ছে নীতিনির্ধারকদের। কানাডায় আনুষ্ঠানিকভাবে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে গত ১৪ ডিসেম্বর থেকে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন বর্তমান পরিস্থিতিতে ভ্যাকসিনের পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ব ও মাস্ক ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই।
সুত্রঃ