সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক :
সিলেট মহানগর জামায়াতের আমির ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ফখরুল ইসলাম বলেন, গত ১৫ বছরে মানুষ স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারেনি। নিজের ঘরে মানুষ নিরাপদে থাকতে পারেনি। ব্যাংকে টাকা রাখাও নিরাপদ ছিল না।
তিনি আরও বলেন, ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতা ছাড়লে দলের ২ লাখের বেশি মানুষ খুন হবে। কারণ তারা জানতেন তারা যে অপরাধ করেছেন সেই অপরাধ মানুষ কখনো ক্ষমা করবে না। সেজন্যই তারা এমনটা আশঙ্ক্ষা করেছিলেন। তারা ভোট চুরি করেছেন। টাকা পাচার করেছেন। খুন, ঘুম করেছেন। শেখ হাসিনার নির্দেশে ২৮ অক্টোবর লগি বৈঠা দিয়ে শাপের মতো পিঠিয়ে মানুষকে হত্যা করা হয়েছে।
সিলেট মহানগর জামায়াতের আমির আরও বলেছেন, মানুষ খুন করে লাশের উপর নৃত্য করেছে। সেদিন তারা রক্তের হুলি খেলায় মেতে উঠেছিল। সারা বিশ্ব মানবতাকে হতবাক করে দিয়েছিল। সেদিন বিশ্ব বিবেক কেঁদেছিল। ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশের গণতন্ত্র পথ হারিয়েছিল। এরপর ১৫ বৎসর দেশের মানুষ স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারেনি। মানুষ নিরাপদে নিজের গরে ঘুমাতে পারেনি। ব্যাংকে রাখা আমানত লুট হয়ে গিয়েছিল। ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে অসংখ্য নিরপরাধ আলেম-উলামাদের খুন করে লাশ গায়েব করা হয়েছে। তাদের লাশ এমনভাবে গায়েব করা হয়েছে আজোবধি তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি। তারা পিলখানায় চৌকস ৫৭ জন সেনা অফিসারকে হত্যা করে দুটি বাহিনীকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল। জুলাই হত্যাকাণ্ডে ১৫ শতাধিক লোককে হত্যা করেছে ফ্যাসিস্ট সরকার।
তিনি আরও বলেন, শত শত মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। অনেককে গুম করা হয়েছে। তাদের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। বিদেশ থেকে রায় লেখে এনে মিথ্যা স্বাক্ষীর ভিত্তিতে ক্যাঙ্গারু কোর্টের মাধ্যমে জামায়াতের প্রথমসারির নিরপরাধ দেশপ্রেমিক নেতাদের হত্যা করেছে। আওয়ামী লীগ জামায়াতের শীর্ষ ১১জন নেতাকে হত্যা করেছে। কাউকে ফাঁসিতে আর কাউকে কারাগারের অন্ধ প্রকোষ্টে যন্ত্রণা দিয়ে হত্যা করেছে। তারা ভেবেছিল এদের হত্যার মাধ্যমে এদেশে জামায়াত নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। কিন্তু তারা জানে না জামায়াত নেতাদের খুন করা যায় কিন্তু তাদের আদর্শকে খুন করা যায় না। এদেশের মাটিতে সকল গণহত্যার বিচার হবে। আওয়ামী লীগের পাপের বিচার অবশ্যই বাংলার মাটিতে হবে। তাদের অপকর্মের ফল অবশ্যই ভোগ করতে হবে। এ জাতি তাদের ছাড় দেবে না।
শুক্রবার সকালে সুনামগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমির হাছনরাজা মিলনায়তনে সুনামগঞ্জ পৌর জামায়াত ও সদর উপজেলা জামায়াতের যৌথ উদ্যোগে ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর পল্টন হত্যাকাণ্ড ও জুলাই ২০২৪ অভ্যুত্থানে গণহত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পৌর জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট নুরুল আলম। পৌর জামায়াতের সেক্রেটারি আব্দুস সাত্তার মামুন ও সদর উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি সোলেমান চৌধুরীর যৌথ পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা তোফায়েল আহমেদ খাঁন, জেলা নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শামস উদ্দিন, অধ্যাপক আব্দুল্লাহ, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মমতাজুল হাসান আবেদ, জেলা জামায়াতের কর্ম পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম, ইসলামি ছাত্র শিবিরের জেলা সভাপতি মনিরুজ্জামান পিয়াস, জামায়াত নেতা অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দিন প্রমুখ।
সমাবেশে সুনামগঞ্জ পৌর ও সদর উপজেলা জামায়াতের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র: যুগান্তর