নিজস্ব প্রতিবেদক:
সৎ মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে নবাব আলী ওরফে লোবা (৩৭) নামে এক ব্যক্তির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড। আজ বুধবার দুপুরে রাজশাহীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মনসুর আলম এক জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন।
নবাব আলী রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার চন্দনমাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবার নাম আশরাফ আলী। রায় ঘোষণাকালে তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ইসমত আরা জানান, ঘটনার সময় মামলার বাদী ১৪ বছরের কিশোরী ছিল। সে সম্পর্কে নবাব আলীর সৎ মেয়ে। আপন বাবা মারা যাওয়ার পর তার মায়ের সঙ্গে নবাব আলীর বিয়ে হয়। ২০১১ সালে নবাব তার দ্বিতীয় স্ত্রী ও তার মেয়েকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেন। এরপর তিনি মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন। ঘটনার পর মেয়েটি তার নানীকে বিষয়টি জানান।তবে মেয়ের সংসার ভেঙে যাওয়ার ভয়ে তিনি বিষয়টি গোপন রাখেন।
এ ঘটনার সাত মাস পর ২০১২ সালের ৪ এপ্রিল নবাব তার স্ত্রীকে জুসের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ান। এতে তিনি ঘুমিয়ে পড়লে রাতে আবারও ওই মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয়। এই ঘটনার পরবর্তী সময়ে মেয়েটি গর্ভবতী হয়ে পড়ে। এ সময় তাকে চাচার বাড়ি টাঙ্গাইলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরে ওই কিশোরী আবারও ফিরে আসে।
পরে ঘটনাটি প্রকাশ্যে নিয়ে এসে ওই বছরের ১৯ জুলাই মেয়েটি বাদী হয়ে তার সৎ বাবার বিরুদ্ধে থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করে। ঘটনা জানার পরেও গোপন করার চেষ্টা করার অভিযোগে ওই মামলায় তার নানীকেও আসামি করা হয়।
তবে আদালত তার নানিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন। এছাড়া রায় ঘোষণাকালে সৎ বাবার হাতে মেয়ে ধর্ষণের ঘটনাটিকে সামাজিক অবক্ষয় হিসেবে উল্লেখ করেন আদালত। মোট ছয় জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আজ আসামি নবাবের উপস্থিতিতেই এ রায় ঘোষণা করা হয়। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট ইসমত আরা। আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাভোকেট খায়রুন্নাহার কাজল।
স/শ