সোমবার , ৮ আগস্ট ২০১৬ | ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

সোনামসজিদ বন্দরের কাস্টমস কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ

Paris
আগস্ট ৮, ২০১৬ ৫:৩৫ অপরাহ্ণ

ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি:
সোনামসজিদ স্থলবন্দরে এক সময় ছিল প্রাণচাঞ্চল্য। ব্যবসায়ীদের আনাগোনায় মুখরিত থাকত সারাদিন। কিন্তু এখন আর সেই অবস্থা নেই। আগের মত নেই ব্যবসায়ীদের আনাগোনা। কাজ না থাকায় শ্রমিকের সংখ্যা কমে গেছে। আমদানি পণ্যবাহী গাড়ির সংখ্যা কমে যাওয়ায় অলস সময় পার করছেন পানামার কর্মকর্তা কর্মচারিরাও। ফলে বন্দর পরিচালনায় তাদেরও প্রতিমাসে বড় ধরণের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। এনিয়ে বন্দর সংশ্লিষ্টদের মধ্যে চরম হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।

 
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নৌ-পরিবহনমন্ত্রী প্রায় তিন মাস আগেও বন্দরে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সোনামসজিদ স্থলবন্দরকে সোনার বন্দরে পরিণত করার ঘোষণা দেন। কিন্তু এতকিছুর পরও এক শ্রেণীর অসাধূ কর্মকর্তারা নেমেছেন বন্দরটি ধ্বংসের জন্য। বন্দরে ফলসহ অন্য পণ্য আমদানি কমে যাওয়ায় রাজস্ব ঘাটতি অব্যাহত রয়েছে।

 
আর রাজস্ব ঘাটতির কারণ হিসাবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, সোনামসজিদ বন্দরে কর্মরত কাস্টমস কর্মকতাদের ব্যবসায়ীদের সাথে দুর্ব্যবহার ও হয়রানি। কাস্টমসের কিছু অসাধু কর্মকর্তা আমদানী করা পণ্য আটকে রেখে অর্থ আদায় করেন। তাদের দাবিকৃত অর্থ পরিশোধ না করলে পণ্যছাড় দেয়া হয় না। এনিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করলেও বাড়তি ঝামেলার কারণে কেউ মুখ খুলতে চাইনা। এখানকার ঝামেলা এড়াতে চলে যাচ্ছেন অন্যবন্দরে।

 
তারা আরও বলেন, কাস্টমস কর্মকর্তাদের কাছে পণ্য ছাড়ের জন্য কাগজপত্র নিয়ে গেলে তাতে স্বাক্ষর না করে আগে মাইকওয়ানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। তার কাছে ‘পেমেন্ট’ হলেও ‘সিগন্যাল’ আসে কাগজ ছাড়ের। না হলে দিনের পর দিন গাড়ি আটকা থাকে সংশ্লিষ্ট ইয়ার্ডগুলোতে।

 
ব্যবসায়ী নেতারা নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানান, কাস্টমস কর্তৃপক্ষ টিটন নামে এক কর্মকর্তাকে ক্যাশিয়ার নিয়োগ দিয়ে রেখেছেন। যার নাম তাদের ভাষায় ‘মাইকওয়ান’। তিনিই মূলত অর্থ আদায়ের কাজটি করে থাকেন।

 
সোনামসজিদ বন্দরের দায়িত্বে থাকা কাস্টমসের রাজশাহী বিভাগীয় সহকারী কমিশনার মোয়াজ্জেম হোসেন নিয়মিত অফিস না করার কারণে আমদানি করা পণ্যবোঝাই গাড়ি কয়েক সপ্তাহ ধরে পানামার মধ্যে লোড-আনলোডের জন্য আটকে থাকে। ফলে আমদানিকারকদের বড় ধরণের মাশুল দিতে হয়। এছাড়া তিনি সোনামসজিদের জন্য আলাদা অঘোষিত নিয়ম চালু করেছেন বলে ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন। তার জন্যই এ বন্দরটি আজ ধ্বংসের মুখে বলে অভিযোগ করেন তারা।

 
স্থলবন্দর কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থ বছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৮৩১ কোটি ৪১ লাখ ৫৭ হাজার টাকা। কিন্তু আদায় হয়েছে ৫২৮ কোটি ৫৮ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। তবে জুলাই মাসে রাজস্ব আদায় কিছুটা বেড়েছে বলে কাস্টমস সূত্র জানিয়েছে।

 
সোনামসজিদ স্থলবন্দরে ফলসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করায় ফলসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানিকারকরা এই বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি না করে অন্য বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি করছে। সোনামসজিদ বন্দরে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ‘সুবিধা’ না পেয়ে আমদানিকারকরা পণ্য আমদানিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। তারা অধিক সুবিধা পেয়ে অন্য বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি করছেন। ফলে বর্তমানে এ স্থলবন্দর দিয়ে ছাই, পাথর, ও পেঁয়াজ, ভূষি, ভুট্টা ছাড়া অন্য পণ্য খুব কম আসছে। সোনামসজিদ স্থল বন্দর ফল আমদানির ক্ষেত্রে কড়াকড়ি করা হলেও ভোমরা বন্দরে আমদানিকৃত ফলের রাজস্ব আদায়ে বিশেষ ছাড় দেয়া হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে।

 
সোনামসজিদ আমদানি ও রফতানিকারক গ্রুপের সধারণ সম্পাদক আবু তালেব ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হারুন-অর-রশিদ সিল্কসিটি নিউজকে জানান, সোনামসজিদ স্থলবন্দরে কাস্টমসের ব্যাপক কড়াকড়ির কারণে ফল আমদানিকারকরা এ বন্দর ছেড়ে ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ফল আমদানি করছে। আর এ কারণেই সোনামসজিদ স্থলবন্দরে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য মাত্রা অর্জিত হচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে বন্দর সংশ্লিষ্ট সংগঠনের নেতৃবৃন্দ একাধিকবার কাস্টমসের রাজশাহী বিভাগীয় সহকারী কমিশনার মোয়াজ্জেম হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করলেও কোনো সুরাহা হয়নি।

 
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ সোনামসজিদ বন্দরে পণ্য আমদানিতে ১০০ ভাগ স্বচ্ছতা থাকলেও মোয়াজ্জেম হোসেন অজ্ঞাত কারণে দীর্ঘদিন ধরে পণ্য আটকে রেখে হয়রানি করছেন। এ বিষয়ে বক্তব্য নেয়ার জন্য একাধিকবার রাজশাহী বিভাগীয় সহকারী কাস্টমস কমিশনার মোয়াজ্জেম হোসেনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
স/শ

সর্বশেষ - রাজশাহীর খবর