সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক :
লবণ খেলে শরীরে পানিধারণ ক্ষমতা বাড়ে ঠিকই, কিন্তু পরিমাণের অতিরিক্ত লবণ খেলে শরীরের ক্ষতিও হবে। হৃদ্যন্ত্র ভাল রাখতে লবণ একেবারেই এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। লবণ উচ্চ রক্তচাপের সমস্যাও বাড়িয়ে তোলে। শিশুদের খাবারে পরিমিত পরিমাণে লবণ যোগ করাই উচিত।
কারণ আয়োডিন মস্তিষ্কের গঠনে বিশেষ ভূমিকা নেয়। তবে কোন বয়সের শিশুকে কতটুকু লবণ খাওয়ানো উচিত, তা জেনে রাখা ভালো। পরিমাণে বেশি হওয়া মানেই এ ক্ষেত্রে শরীরের ক্ষতি।
এই বিষয়ে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা বলেন, ৬ মাস বয়স পর্যন্ত শিশু মায়ের দুধই খাবে।
তাই লবণের প্রয়োজন নেই। ৬ মাসের পর থেকে একটু একটু করে শিশুকে খাবার খাওয়ানোর অভ্যাস করাতে হয়। সেই সময়ে এক চিমটের বেশি লবণ দেওয়া যাবে না। সারা দিনের খাবারে ওইটুকুই জরুরি।
এর পর ধাপে ধাপে পরিমাণ কিছুটা বাড়বে, তবে বেশি নয়।
চিকিৎসকদের মতে, ৬ মাস থেকে ১ বছর পর্যন্ত শিশুর দিনে ১ গ্রামের বেশি লবণ খাওয়া ঠিক নয়। ১ গ্রাম মানে আধ চা চামচেরও কম। ১ থেকে ৩ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের প্রতিদিন ২ গ্রাম পর্যন্ত অর্থাৎ আধ চা চামচের মতো লবণ দেওয়া যেতে পারে। ৪ থেকে ১০ বছর বয়স পর্যন্ত এবং ১০ বছরের ঊর্ধ্বে প্রতিদিনের খাবারে লবণের পরিমাণ সামান্য বাড়িয়ে দিনে ৩ গ্রামের মতো করা যেতে পারে।
অর্থাৎ আধ চামচের সামান্য বেশি। সারা দিনের খাবারে ওইটুকুই দিতে হবে শিশুকে।
চিনি যেমন পরিমিত খাওয়া জরুরি, লবণও তাই। এমনই মত পুষ্টিবিদদের। তাদের পরামর্শ, একজন পূর্ণবয়স্ক সুস্থ মানুষের প্রত্যেক দিন এক চা চামচ লবণ খাওয়া উচিত। অর্থাৎ পাঁচ-ছয় গ্রাম লবণ খাদ্যতালিকায় রাখাই যায়। তবে কাঁচা লবণ নয়, রান্নায় নুন দিয়ে খাওয়াই ভালো। অন্যথায় শুকনো কড়াইয়ে লবণ নেড়ে তা খেতে পারেন। যদি উচ্চ কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপ ও কিডনির সমস্যা থাকে, তাহলে কাঁচা লবণ একেবারেই এড়িয়ে চলা উচিত। সাধারণ মাখন, চিজ়, পাউরুটিতে লবণ থাকে। তাই শিশুকে এসব খাওয়ালে প্রতিদিনের রান্নায় লবণ কম দিতে হবে। বাজারচলতি প্যাকেটজাত খাবার, যেমন, চিপস, নাচোজ থেকে শুরু করে হ্যাম, সসেজ, টম্যাটো সসেও লবণ থাকে। এ সব খাবার শিশুকে বেশি দেওয়া যাবে না।
কী ধরনের লবণ খাচ্ছেন, তাও কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। পুষ্টিবিদের কথায়, শিশুদের সাদা লবণের থেকে সি সল্ট বা সৈন্ধব লবণ খাওয়ানোই ভাল। সৈন্ধব লবণের দানা হয় বড় বড়। অনেক সময় ডেলার মতোও হয়। আর এর রংও ধবধবে সাদা নয়। কিছুটা লালচে ভাব থাকে। প্রক্রিয়াকরণের আগের পর্যায় হলো এই সৈন্ধব নুন। লবণে শতকরা ৯৭-৯৯ ভাগই হলো সোডিয়াম ক্লোরাইড। একেবারেই লবণ খাওয়া বন্ধ করে দিলে রক্তচাপের হেরফের হতে পারে। সোডিয়ামের মাত্রার ঘাটতি হলে অন্য শারীরিক সমস্যাও হতে পারে। তাই লবণ খেতে হবে, তবে পরিমিত পরিমাণে।
সূত্র: কালের কণ্ঠ