নাটোরের লালপুরের আজিমনগর রেলওয়ে স্টেশনে বিনামূল্যে প্রতিদিন এক বেলার খাবার বিতরণ করছে লাভলী ফাউন্ডেশন নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। ‘এক বেলার হাসি’ নামে এ কার্যক্রমে প্রতিদিন তিন শতাধিক ছিন্নমূল মানুষকে দুপুরের খাবার দেওয়া হয়। যা হাজারো মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়েছে।
বুধবার (৬ ডিসেম্বর ২০২৩) এ কার্যক্রমের ৫৬তম দিনে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার আজিমনগর স্টেশনের পাশে কড়ইতলায় রান্নার কর্মযজ্ঞ শেষে খাবার পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। পাশে অপেক্ষায় রয়েছেন শিশু থেকে বৃদ্ধ বিভিন্ন বয়সের অসহায়, দরিদ্র ও ভাসমান মানুষ।
বৃদ্ধা আম্বিয়া বেগম (৬১) বলেন, এ কার্যক্রম শুরুর পর থেকে প্রতিদিন তার নাতনীকে নিয়ে দুপুরের খাবার খেতে আসেন। ভাতের সাথে মাছ, মাংস ও ডিম-এমন উন্নতমানের খাবার খেতে পেয়ে তারা খুশি।
ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী জাবেদ মন্ডল বলেন, তিনি গ্রাম গ্রাম ঘুরে বিভিন্ন ভাঙা জিনিসপত্র কেনেন। প্রতিদিন দুপুরে না খেয়ে একবারে সন্ধ্যায় বাড়ি গিয়ে পেট পুরে ভাত খেতেন। লোকমুখে বিনামূল্য খাবারের কথা শুনে এখন দুপুর হলেই খাবার খেতে চলে আসেন।
আয়োজকরা জানান, ফাউন্ডেশনটির চেয়ারম্যান সিলভিয়া পারভীন লেনির উদ্যোগে কল্যাণমূলক এই কাজে যুক্ত রয়েছে এক ঝাঁক তরুণ সেচ্ছাসেবক। তারা সম্পূর্ণ বিনাপারিশ্রমিকে এই প্রকল্পে কাজ করছেন। শুরুতে শতাধিক হতদরিদ্র মানুষের খাবার আয়োজন করা হয়। এখন সেটা আশেপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ায় ৩ শ জনে বৃদ্ধি করা হয়েছে।
লাভলী ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমরা পথে অনেক ক্ষুধার্ত মানুষকে দেখি। ওরা এক বেলা খাবারের জন্য সবার কাছে হাত পাতে। তখন সিলভিয়া পারভীন লেনির উদ্যোগে মূলত ক্ষুধার্ত ভাসমান মানুষের জন্য এক বেলার খাবার বিতরণের আয়োজন হয়। বিনামূল্য খাবার পাওয়ার বিষয়টি চারেদিকে ছড়িয়ে পড়লে আশেপাশের এলাকারও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার নিম্নবিত্ত মানুষ এখানে দুপুরের খাবার খেতে আসেন। বিনামূল্য খাবার পেয়ে তারা খুশি। আমরাও চেষ্টা করি তাদের সাধ্যমত আপ্যায়ন করতে। বিত্তশালীদের আরও সহযোগিতা পেলে এই কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়া সহজ হবে। শুধু এই বেলার খাবার নয়, বিভিন্ন মাদ্রাসা, এতিমখানাসহ বিভিন্ন জায়গায় এমন কাযক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়া প্রতি ঈদে ঈদ সামগ্রী, শীতবস্ত্র বিতরণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করাসহ বিভিন্ন সমাজকল্যাণ মূলক কাযক্রম চলমান রয়েছে।