সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক :
রাজধানী ঢাকার গুলশানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নৃশংসভাবে ছাত্রহত্যাকারী তানভীর আলী রিমান্ড শেষে তার সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে তিনি অর্থ,অস্ত্র ও সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে তিনি তৎকালীন সরকার শেখ হাসিনাকে সহায়তা করেছেন। তবে গণহত্যাসহ এসব অভিযোগ তার বিরুদ্ধে থাকলেও রিমান্ড শেষে তিনি জামিনে মুক্ত হয়েছেন।
শিক্ষার্থী হত্যার অভিযোগে গুলশান থানার একটি দায়ের করা মামলায় গত শনিবার তানভীরকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।
সেখানেই বেরিয়ে আসে আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য। হত্যাকাণ্ড ছাড়াও আরো নানা বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। গত শনিবার দেশত্যাগ করে পালানোর সময় গুলশানের বাসা থেকে পুলিশ এই বিশিষ্ট ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করে।
গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদ আলম এ বিষয়ে বলেন, ব্যবসায়ী তানভীর আলীকে জিজ্ঞাসাবাদ করার এক পর্যায়ে তিনি ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেন।
শিক্ষার্থী হত্যার ঘটনা ছাড়াও আরো নানা অবৈধ কর্মকাণ্ডেও তার সম্পৃক্ততার স্বীকারোক্তি পাওয়া গেছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গুলশান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রুমিন মিয়া জানান, গত ১৯ জুলাই বিকাল সাড়ে ৩টায় গুলশানের কালাচাঁদপুর এলাকার বারিধারা পার্ক রোডে আন্দোলনের সময় হামলার ঘটনা ঘটে। সেই হামলায় শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল আবির, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে পরদিন ২০ জুলাই সকালে আবিরের মৃত্যু হয়।
এই ঘটনায় গত ২০ আগস্ট হাসান মাহমুদ নামে একজন বাদী হয়ে গুলশান থানায় হত্যা মামলা করেন। গত শনিবার ওই মামলার অন্যতম আসামি তানভীর আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তাকে আদালতে হাজির করে অধিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চাওয়া হয়। আদালত তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এসআই রুমিন মিয়া বলেন, রিমান্ডে নেওয়ার পর থেকেই তানভীর আলী বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন।
ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে তিনি অর্থ, অস্ত্র ও সন্ত্রাসী দিয়ে সহায়তা দেওয়ার কথাও স্বীকার করেছেন। তাকে আবারো রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে মামলা ও হত্যা সম্পর্কে আরও প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়া যেতে পারে।
পুলিশ সূত্র জানায়, আসামি তানভীর আলীর বিরুদ্ধে বিগত ১৫ বছর ধরে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ অর্থ উপার্জন, ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের একাধিক মামলা চলমান রয়েছে। অবৈধ অর্থ উপার্জনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন একাধিকবার নোটিশ করলেও তিনি হাজির হননি।
এই হত্যা মামলায় তানভীর আলী ছাড়াও অন্যান্য আসামিদের মধ্যে আছে- ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাকের হোসেন বাবুল, ১৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা শিমুল, গুলশান থানা ছাত্রলীগ নেতা আনিসুর রহমান সুজন, মানিক, সোহাগ, গুলশান থানা শ্রমিক লীগ নেতা মো. মহসিন ওরফে কাকরা মহসীন, গুলশান থানা যুবলীগ নেতা মো. জামিল হোসেন, মো. শহিদুল ইসলাম, গুলশান থানা আওয়ামী ওলামা লীগের সহ-সভাপতি মো. আব্দুল হামিদসহ ১৫০-২০০ জন অজ্ঞাতনামা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী।
সূত্র: কালের কণ্ঠ