সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
বরগুনার চাঞ্চল্যকর রিফাত শরীফ হত্যা মামলার চার্জশিট দাখিলের জন্য আগামী ৩ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার বরগুনার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালত এই দিন ধার্য করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা কাদের বলেন, আজ এ মামলার চার্জশিট দাখিল করার কথা থাকলেও পুলিশ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেনি। তাই আগামী ৩ সেপ্টেম্বর এ মামলার চার্জশিট দাখিলের দিন ধার্য করেছেন আদালত।
এদিন রিফাত হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার ১৪ জনকে আদালতে হাজির করা হয়। রিফাতের স্ত্রী মামলার প্রধান সাক্ষী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকেও আদালতে হাজির করা হয়। পরে আদালতের কার্যক্রম শেষে সব অভিযুক্তকে আবার জেলহাজতে পাঠানো হয়।
এ বিষয়ে বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মজিবুল হক কিসলু বলেন, আজ আদালতে পুলিশ চার্জশিট দাখিল করেনি। পরবর্তী তারিখ বা তার আগেই পুলিশ আদালতে চার্জশিট দাখিল করতে পারে।
তিনি জানান, এ মামলার আসামি আরিয়ান শ্রাবণ, কামরুল ইসলাম সাইমুন এবং মো. সাগরের জামিনের আবেদন করা হলেও মূল নথি এই আদালতে না থাকায় পরবর্তীতে জামিন শুনানির কথা বলেন বিচারক।
২৬ জুন রিফাতকে বরগুনার রাস্তায় প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সে সময় স্বামীকে বাঁচাতে মিন্নির চেষ্টার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে আলোচনার সৃষ্টি হয়।
পর দিন রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরিফ ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন, তাতে প্রধান সাক্ষী করা হয়েছিল মিন্নিকে। পরে মিন্নির শ্বশুর ছেলে হত্যায় পুত্রবধূ মিন্নির জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করলে ঘটনা নতুন দিকে মোড় নেয়।
১৬ জুলাই মিন্নিকে বরগুনার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। মিন্নি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন বলে পুলিশ জানায়। পরে মিন্নি জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন করেন আদালতে। মিন্নির বাবার অভিযোগ, ‘নির্যাতন করে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে মিন্নিকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে বাধ্য করেছে পুলিশ।’
গত ৩০ জুলাই মিন্নির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালত।
এর আগে ২২ জুলাই বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে প্রথমবার মিন্নির জামিনের আবেদন করেন আইনজীবী মো. মাহবুবুল বারী আসলাম। ওই দিনই শুনানি শেষে আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজী মিন্নির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
পরে ২৩ জুলাই ‘মিস কেস’ দাখিল করে বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আসাদুজ্জামানের আদালতে ফের জামিনের আবেদন করেন মিন্নির আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম। পরে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতের নথি তলব করে ৩০ জুলাই জামিন শুনানির দিন ধার্য করেন।
সেদিন তিন ঘণ্টার বেশি সময় ধরে উভয়পক্ষের শুনানি হয়। এ সময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব করেন আদালত। তদন্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির আদালতে উপস্থিত হলে এ হত্যাকাণ্ডে মিন্নির সম্পৃক্ততার বিষয়ে তথ্য জানতে চাওয়া হয়। সবার উপস্থিতিতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ল্যাপটপে হত্যাকাণ্ডের আগের ও পরের ভিডিও ফুটেজ দেখান। এ ছাড়া মিন্নির ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দিসহ হত্যার আগে ও পরে প্রধান আসামি কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত নয়ন বন্ডসহ অন্যান্য আসামির সঙ্গে মিন্নির কললিস্টের তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করেন। শুনানি শেষে মিন্নির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন জেলা ও দায়রা জজ আদালত।