রবিবার , ১৫ জানুয়ারি ২০১৭ | ১৬ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

রাজশাহীতে ১০ বছরের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড: শীতে কাবু মানুষ

Paris
জানুয়ারি ১৫, ২০১৭ ৯:৩৪ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহীতে বছরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে গতকাল শনিবার। এদিন সকালে রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৫ দশকি ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অথচ আগের দিন শুক্রবারই ছিল ৯ দশকি ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেই হিসেবে মাত্র ২২ ঘন্টার ব্যবধানে গতকাল তাপমাত্রা ৪ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে নেমে আসে ৫ দশিক ১ ডিগ্রিতে। যা চলতি বছরের এটিই ছিল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এছাড়াও গত পাঁচ বছরের মধ্যে রাজশাহীতে এটিই ছিল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এর আগে ২০১৩ সালে রাজশাহীতে সর্বনিন্ম তাপামাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফলে ১০ বছরের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হলো কাল। তবে আজ রবিবার তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে দাড়িয়েছে ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

 

এদিকে গতকাল শনিবার তাপমাত্রা হঠাৎ করে নিচে নেমে যাওয়ায় শীতে আরো অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে জনজীবন। বিশেষ করে তীব্র শীতে খেটে খাওয়া মানুষ ও ছিন্নমূল মানুষের মাঝে নেমে আসে চরম দুর্ভোগ। নিবারণ করতে অনেককে খুড়কুটো জ্বালিয়ে রাখতে দেখা যায়। কিন্তু ছিন্নমূল বা খেটে খাওয়া হতদরিদ্র মানুষের মাঝে তেমন সাহায্য নিয়ে হাত বাড়ানোর তেমন কোনো খবর পাওয়া যায়নি। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন এসব মানুষরা।


রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক লতিফা হেলেন সিল্কসিটি নিউজকে জানান, গতকাল শনিবার রাজশাহীতে বছরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৫ দশকি ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটিই ছিল চলতি বছরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এমনকি নিচে নামার পাশাপাশি উত্তরের হিমেল হাওয়া মানুষকে ঠান্ডার পরিমাণ আরো কয়েকগুন বেড়ে যায়। আগামী দুই-একদিন এইরকম ঠান্ডা থাকতে পারে বলেও জানান তিনি।তবে আজ রবিবার তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে। সকালে আজ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে উত্তরের হিমেল বাতাস থাকায় ঠান্ডার পরিমাণ ছিল অনেক বেশি।

 
আবহাওয়া অফিস থেকে পাওয়া তথ্য মতে, ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা তার আগের ১০ বছরের মধ্যে রেকর্ড সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল। এর আগে ২০০৩ সালের ২৩ জানুয়ারি সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর ২০০৪ সালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

 

  • এরপর ২০০৫ সালে ৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০০৬ সালে ৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০০৭ সালে ৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০০৮ সালে ৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০০৯ সালে ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১০ সালে ৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১১ সালে ৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১২ সালে ৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১৩ সালে ৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১৪ সালে ছিল ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ২০১৫ সালে রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর ফলে গত ৫ বছরের মধ্যে রাজশাহীতে গতকাল শনিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

 
এদিকে তীব্র শীতে অতিষ্ঠ রাজশাহীসহ গোটা উত্তরাঞ্চলের মানুষ। যেন শীতে কাহিল হয়ে পড়েছেন। এমনই অবস্থা বিরাজ করছে গত তিন-চার দিন ধরেই।

 

  • সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, তীব্র শীতের কারণে কাতর হয়ে পড়েছেন কর্মজীবিরা থেকে শুরু করে শিশু ও ছিন্নমূল মানুষগুলো। শীতের কারণে মানুষের চলাফেরা ও কার্যক্রমে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। অনেককে খড়কুটো সংগ্রহ করে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করতে দেখা গেছে। আবার অনেকেই তীব্র শীত উপেক্ষা করেই কাজের সন্ধানে বেরিয়ে পড়েন রাস্তায়। ফলে শীতে কাহিল হয়ে পড়েন তারা।

 
নগরীর শিরোইল কলোনী বস্তির বাসিন্দা নাজমা খাতুন বলেন, ‘খুব কষ্টে আছি। এতো শীত তাও একটি গরম কাপড় কেউ দিয়ে যায়নি। শীতের কারণে ঘর থেকেই বাইর হতে পারছি না। তাই কখনো আগুন জ্বালাইয়ে আবার কখনো ঘরের মধ্যে বসে থেকে শীত তাড়ানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু গরম কাপড় গায়ে জড়াতে পারছি না।’

 

  • দরিখরবোনা এলাকার বাসিন্দা হযরত আলী বলেন, ‘যে শীত তাতে অনেক গরম কাপড়ের প্রয়োজন। কিন্তু পাবো কোথায়? কে দিবে আমাদের কাপড়। যাদের আছে-তারাই হয়তো পাচ্ছে। আমাদের মতো গরীব লোকেরা পাবে না। গরম কাপড় পেলে এতো কষ্ট করে রিকশা চালাতে হতো না।’

 
তবে রাজশাহী জেলা প্রশাসক কাজী আশরাফ উদ্দিন বলেন, আমাদের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ শীতের কাপড় আছে। গত কয়েকদিন ধরেই আমরা উপজেলা পর্যায়েই শীতের কম্বল বিতরণ করেছি। এখনো করছি। নগরীতে তিনটি টিমের মাধ্যমে শীতের কম্বল বিতরণ করা হচ্ছে। কাজেই কোনো শঙ্কট নাই।’

স/আর

সর্বশেষ - রাজশাহীর খবর