দেশে-বিদেশে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের ‘মাফিয়া দুঃশাসনের’ যে সংবাদ প্রচারিত হচ্ছে সেটি আড়াল করতেই শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের খেতাব কেড়ে নেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেছে বিএনপি।
আজ বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিশ্বের কাছে বর্তমান সরকারের পরিচিতি এখন মাফিয়া হিসাবে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে একের পর এক এ সরকারের ভোট ডাকাতি, অপকর্ম, লুটপাট, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েলের ফিরিস্তি উঠে আসছে।
‘বিশ্ববাসী জেনে গেছে যে, বাংলাদেশে এখন বিনা ভোটের যে সরকার ক্ষমতায় আছে তারা মাফিয়া। বাচাল মন্ত্রীরা ও তাদের দালালরা সপ্তস্বরে সরকারের পক্ষে প্রমাণহীন মিথ্যা সাফাই গাইলেও সত্যকে ঢাকতে পারছেন না।’
রিজভী বলেন, পাঁচ দিন আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন ঘোষণা করেছিলেন, আল জাজিরার বিরুদ্ধে মামলা করবেন। পরে শুনলাম মামলা করতে ভয় পেয়েছেন। কারণ মামলার পর টলমল মাফিয়া সরকারকে সামলাবে কে? এখন থলের বিড়াল বেরিয়েছে। তখন তো বাঘ বেরুবে।
‘দেশের জনগণ জানে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে যেসব অপকর্মের প্রামাণ্যচিত্র ও প্রতিবেদন প্রচারিত হচ্ছে তা প্রকৃত ভয়াবহ অবস্থার এক পার্সেন্টও না। ক্ষমতাসীনদের সবাই ডুবে আছে ফ্যাসিজম, মাফিয়া ও গুন্ডাতন্ত্রে। পুরো দেশেই মাফিয়াদের দাপটে মানুষের নাভিশ্বাস দশা।’
শহীদ জিয়া, বেগম জিয়া এবং তারেক রহমানের নামে বিষোদগার করলেই আওয়ামী নেতাদের কবিরা গুণাহ মাফ করে দেন প্রধানমন্ত্রী এমন দাবি করে রিজভী বলেন, ‘রাষ্ট্রযন্ত্রের নিষ্ঠুর থাবায় জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করতে না পেরে দেশমাতৃকার এ মহান বীরের অবদানকে মুছে ফেলার জন্য ব্যর্থ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই সরকারপ্রধানের পদলেহনকারী কতিপয় ব্যক্তি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, ফরিদপুরের কালকিনি থেকে নিজেদের দলের বিদ্রোহী প্রার্থীকে পুলিশ সুপারের মাধ্যমে মাফিয়া স্টাইলে তুলে আনা হচ্ছে ঢাকায় আওয়ামী লীগ অফিসে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে। যশোরের কেশবপুরের অটো ভোটের এমপি শাহীন চাকলাদার তার এলাকার থানার ওসিকে থানায় বোমা মেরে একজন পরিবেশ কর্মীকে ফাঁসানোর নির্দেশ দিচ্ছেন। তাকে ফেলে দেয়ারও হুকুম করছেন। এই কাজটি সম্পূর্ণরুপে মাফিয়া ডনদের কাজের অনুরুপ।
‘কুমিল্লার লাকসাম উপজেলায় গোবিন্দপুর ইউনিয়নে রোববার একটি মাহফিলে অস্ত্র নিয়ে মঞ্চে উঠে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন শামীম বক্তাকে লাঞ্ছিত করেছেন। নিজেকে সন্ত্রাসী এবং গুন্ডাদের চেয়ারম্যান হিসাবে ঘোষণা করছেন। মাহফিলে হুমকি দিয়ে বলছেন, আমি গুন্ডা-মাস্তান থেকে বিনা ভোটে চেয়ারম্যান হয়েছি।
রিজভী বলেন, বাংলাদেশের চারদিকে আওয়ামী দুর্বৃত্তপনার যে বিভিষিকা পরিব্যাপ্ত হয়েছে সেগুলোকে আচ্ছাদিত করতেই জিয়াউর রহমানের যুদ্ধের খেতাব কেড়ে নিতে যাচ্ছে মাফিয়া রাষ্ট্রযন্ত্র।
সুত্রঃ যুগান্তর