সোমবার , ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

ভালো নির্বাচনের পরে ভালো সরকার দেখতে চাই: জি এম কাদের

Paris
সেপ্টেম্বর ৯, ২০২৪ ৯:৪৯ অপরাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক :

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, আমি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্রদের বলেছিলাম তোমরা শহীদ মিনারে গিয়ে শপথ নাও। শহীদ মিনার হচ্ছে বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনের প্রতীক। স্বাধীনতা যুদ্ধে লক্ষ্য ছিল বৈষম্যমুক্ত নিজেদের একটি দেশ। জাতীয় স্মৃতিসৌধ হচ্ছে বৈষম্যমুক্ত রাষ্ট্র গঠনের চেতনার প্রতীক।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দেশে বৈষম্য সৃষ্টি করেছিল, তাদের শোষণ ও নির্যাতনের জন্যই তাদের পতন হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগের পতন হয়নি। সরকারের পতন হয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অন্দোলনের মুখে। আমরা সব সময় বৈষম্য ও দুর্নীতি ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে কথা বলেছি। সাধারণ মানুষের ধারণা ছিল, ছাত্ররা রাজনীতিতে আসতে চায় না। কেউই বুঝতে পারেনি, ছাত্ররা এতটাই রাজনীতি সচেতন। প্রমাণ করেছে, ছাত্ররা আমাদের চেয়ে বেশি রাজনীতি বোঝে। ছাত্রদের প্রধান শক্তি হচ্ছে একতা আর দ্বিতীয় শক্তি হচ্ছে জনগনের আস্থা। ছাত্রদের প্রতি জনগণের আস্থা ছিল, তারা দেশের জন্যই আন্দোলন করেছে। সেজন্যই ছাত্রদের ঐক্য ধরে রাখতে হবে এবং ক্ষমতা ও লোভ লালসার বাইরে থাকতে হবে।
সোমবার জাতীয় ছাত্র সমাজের কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান আরও বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আমরা শুরু থেকেই ছাত্রদের ন্যায্য দাবির পক্ষে ছিলাম। কোটা পদ্ধতির বিপক্ষে আমরা সংসদে কথা বলেছি। সংসদের বাইরেও বলেছি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি হচ্ছে সংবিধান পরিপন্থি।
আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতি, টাকা পাচার, বৈষম্যের মাধ্যমে জাতিকে বিভাজন করার বিরোধীতা করে আমরা সব সময় কথা বলেছি। সংসদে আমি শেখ হাসিনার সামনেও আওয়ামী লীগের দুর্নীতি-দুঃশাসনের বিরুদ্ধে কথা বলেছি। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আমাদের দলকে নষ্ট করতে চেয়েছে, একইসঙ্গে আমাদের রাজনীতি করতেও বাঁধা দিয়েছে। দল না থাকলে রাজনীতি থাকে না, আবার রাজনীতি না থাকলে দলও থাকে না। জনগণের পক্ষে রাজনীতি না থাকলেও দল থাকে না। আমাদের রাজনীতির জন্য দলকে স্যাক্রিফাইজ করতে হয়েছে। আবার দলের জন্যও রাজনীতি স্যাক্রিফাইজ করতে হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি আমাদের দলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে, সেই ষড়যন্ত্র এখনও চলছে।
জি এম কাদের বলেন, জাতীয় পার্টি সব সময় জনগণের সঙ্গেই ছিল। তাই ৩৪ বছর পরেও জাতীয় পার্টি রাজনীতির মাঠে টিকে আছে। জাতীয় পার্টিকে বাদ দিয়ে কেইউ কিছু চিন্তা করে না। আমরা এখনই নির্বাচন চাই না। কারণ ভালো নির্বাচন আমরা অতীতে অনেক দেখেছি। ভালো নির্বাচনের পরে ভালো সরকার হয় না। ভালো নির্বাচনের পরে ভালো সরকার দেখতে চাই।যাদের জনগণের কাছে জবাবদিহিতা থাকবে। যারা ব্যক্তিগত ও দলীয় সম্পদ হিসেবে দেশকে ব্যবহার করবে না। সেই রকম সরকারের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে, সেজন্য বর্তমান সরকারকে আমরা সময় দিতেও রাজি আছি। ভালো নির্বাচনে নির্বাচিত সরকার বেশিরভাগ সময়ে স্বৈরশাসক হয়েছিল। কিন্তু অনির্বাচিত সরকারগুলো অনেক বেশি গণতন্ত্রমনা ছিল। অনির্বাচিত সরকারগুলোই জনগণের মতামতের বেশি গুরুত্ব দেয়। তাই অনির্বাচিত সরকারকে সংস্কারের জন্য সময় দিতে আমাদের আপত্তি নেই।
তিনি বলেন, আমরা চাই বর্তমান সরকার যেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে পারে, দ্রব্যমূল্য যেন নিয়ন্ত্রণে থাকে, কর্মসংস্থান যেন থাকে, তাহলে আমাদের অপেক্ষা করতে আপত্তি নেই।
রাজনীতিতে অনেক হিসাব-নিকাশ আছে। আওয়ামী লীগ মাঠে নেই, কিন্তু তাদের একটি সমর্থক গোষ্ঠী আছে। আগামী নির্বাচনে তাদের একটা ভূমিকা থাকবে। আমাদের দুর্ভাগ্য হচ্ছে, বিএনপি ক্ষমতায় না এসেই তাদের নেতা-কর্মীরা যে অবস্থা সৃষ্টি করেছে তা সাধারণ মানুষ পছন্দ করছে না। রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের সঙ্গে বিএনপির মুখোমুখি অবস্থা। কেউ দখলবাজি শুরু করলে, ছাত্ররা তার প্রতিবাদ করছে। শেষ পর্যন্ত জনগণ কার পক্ষে থাকবে তা এখনও নিশ্চিত নয়। তিনি বলেন, জাতীয় ছাত্রসমাজকে আরও সংগঠিত হতে হবে। ছাত্র রাজনীতি করতে হবে সুশৃঙ্খলভাবে। বর্তমানে দেশে বিশৃঙ্খলা আছে, এটা চলতেই থাকলে জনগণ এই সরকারের ওপর বিরক্ত হয়ে উঠবে। আবেগ ও জীবন দিয়ে দেশ রক্ষা করা যায় কিন্তু দেশ চালানো যায় না। দেশ চালাতে জ্ঞান, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা দরকার হবে। এককভাবে ছাত্ররা দেশ রক্ষা করতে পেরেছে, কিন্তু এককভাবে ছাত্ররা দেশ চালাতে পারবে না।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, জহিরুল ইসলাম জহির, শেরীফা কাদের, মাসরুর মওলা, জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া, আরিফুর ইসলাম খান, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মোঃ খলিলুর রহমান খলিল, মইনুর রাব্বী চৌধুরী রুম্মন, মোঃ মোস্তফা মহসিন, ভাইস চেয়ারম্যান সুলতান আহমেদ সেলিম।

সূত্র: যুগান্তর

সর্বশেষ - রাজনীতি