নিজস্ব প্রতিবেদক :
‘মালদ্বীপ, নেপাল ও শ্রীলঙ্কা যদি পারে আমরা কেন পারব না’ এই স্লোগান নিয়ে ভারতীয় ৫২৭টি খাদ্যপণ্য স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক উল্লেখ করে তা বর্জনের ডাক দিয়েছে ১২ দলের নেতারা। রোববার সকালে লিফলেট বিতরণ কালে ১২ দলের নেতার এই আহ্বান জানান।
লিফলেট বিতরণ কালে সাংবাদিকদের ব্রিফ করার সময় ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা বলেন, আধিপত্যবাদ, আগ্রাসন ও গণতন্ত্র হত্যার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষ রুখে দাঁড়াচ্ছে। বাংলাদেশের উপর সীমাহীন আগ্রাসন ও শোষণ, সীমান্তে হত্যা, ২৬ লক্ষ অবৈধ ভারতীয় এদেশে চাকুরী, ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবি, বাংলাদেশের রাজনীতিতে নগ্ন হস্তক্ষেপ, একদলীয় শাসন পাকাপোক্ত করার ভূমিকা এবং দেশকে একটি করদ রাজ্যে পরিণত করার প্রতিবাদে ও ভারতীয় পণ্য বর্জনের এবং ভারতের কর্তৃত্ববাদী সরকারকে লাল কার্ড প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা।
নেতারা বলেন, তারা বিশ্ব সংবাদ মাধ্যম ও দেশের সংবাদ মাধ্যমে দেখছেন ভারতের ৫২৭টি পণ্যের মধ্যে বিষক্রিয়া পাওয়া গেছে। ইউরোপিয় ইউনিয়ন সেগুলো নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। সর্বশেষ যুক্তরাজ্য, মালদ্বীপ, নেপাল ও শ্রীলঙ্কা ভারতের পণ্যগুলো বাজেয়াপ্ত করেছে। তাদের দুইটি ওষুধে ক্যানসারের মিশ্র উপাদান পাওয়া গেছে। সিঙ্গাপুর ও হংকং সে ওষুধ গুলো বন্ধ করে দিয়েছে।
বিগত ১৬ বছরে সীমান্তে ১২০০ এর অধিক নিরীহ নাগরিককে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ফেলানীর লাশ যখন সীমান্তে ঝুলে থাকে তখন মনে হয় সমগ্র বাংলাদেশ আজকে কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলে আছে। নেতারা বলেন, যদি বন্ধু হও, যদি আমাদের প্রতিবেশী হও, তাহলে সীমান্তে অহরহ গুলি কেন? তাই আজকে বাংলার জনগণ, বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্রের জন্য লড়াই শুরু করেছে।
তারা আরো বলেন, তারা ভারতের জনগণের বিরুদ্ধে নয়, ভারতের বন্ধু হতে চায়। কিন্তু যে বন্ধু এদেশের মানুষকে শোষণ করবে, যে বন্ধু ফারাক্কা, তিস্তা, টি পাইয়ের ন্যায্য হিস্যা দেয় না, সে কি বন্ধ হতে পারে? কোনোদিনও বন্ধু হতে পারে না। তাই আমরা ভারতীয় পণ্য বর্জন করে বলতে চাই, সীমান্ত হত্যা বন্ধ করো, আগ্রাসন নীতি পরিহার করো, বাংলাদেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ বন্ধ করো। কারণ আপনার দেশে গণতন্ত্র থাকবে, আর আমার দেশে গণতন্ত্র যাতে না থাকে সেই ব্যবস্থা করবেন, বাংলার মানুষ তা কোনোদিন গ্রহণ করবে না।
নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা আগ্রাসন মানি না, আমরা সীমান্ত হত্যা মানি না, আমরা ভারতীয় পণ্য বর্জন করবো। এই সামাজিক আন্দোলন ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে। নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, গণসচেতনতা তৈরি লক্ষে ভারতীয় পণ্যের বিষক্রিয়ার কথা বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে এই লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া হবে।
রাজশাহী মহানগরের জিরো পয়েন্ট এলাকায় ১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র শাহাদাত হোসেন সেলিমের নেতৃত্বে লিফলেট বিতরণে উপস্থিত ছিলেন জোটের সমন্বয়ক বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান এডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবীব লিংকন, জমিয়াতে ওলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা’র) সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান।
এছাড়াও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ , বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, ইসলামী ঐক্য জোটের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল করিম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আব্দুল মালেক চৌধুরী, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কাশেম, বাংলাদেশ এলডিপির যুগ্ম মহাসচিব চাষী এনামুল হক ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের ভাইস চেয়ারম্যান সারোয়ার আলম সহ জোটের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।