মঙ্গলবার , ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৪শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

বিশ্বের দীর্ঘতম সুড়ঙ্গের মাধ্যমে যুক্ত হচ্ছে ডেনমার্ক-জার্মানি

Paris
সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৪ ৭:৩০ অপরাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক :

অপেক্ষাকৃত কম দূরত্বের জন্য বিমানের পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব রেলপথকে উৎসাহ দিতে চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)৷ সেই লক্ষ্যে ডেনমার্ক ও জার্মানির মধ্যে দূরত্ব কমাতে একটি সুড়ঙ্গপথ নির্মাণের কাজ চলছে৷এটাই বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ সুড়ঙ্গ, যার অংশগুলো আগে থেকেই তৈরি করা হয়েছে৷

এই প্রকল্পটি সব রেকর্ড ভাঙতে চলেছে৷ ডেনমার্কের রাজা স্বয়ং প্রথম অংশটি উৎসর্গ করেছেন৷ফলে প্রকল্পটির গুরুত্ব বোঝা যাচ্ছে৷

ডেনমার্কের পরিবহণ মন্ত্রী টোমাস ডানিয়েলসেনের মতে, এটা গুরুত্বপূর্ণ এক প্রকল্প, কারণ আমরা ইউরোপের উত্তর ও দক্ষিণ অংশের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটাচ্ছি৷

ফেমার্ন এএস সংস্থার কর্ণধার হেনরিক ভিনসেন্টসেন মনে করেন, ২০২৯ সালে জার্মানির সঙ্গে সুড়ঙ্গ সংযোগ খোলার চূড়ান্ত লক্ষ্য পূরণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক৷

ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, এই প্রকল্পে চমকের অভাব নেই৷ সুড়ঙ্গ তৈরির লক্ষ্যে ইউরোপের সবচেয়ে বড় নির্মাণের সাইট সৃষ্টি করতে হয়েছে৷ বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভাসমান ড্রেজারও সেখানে ব্যবহার করা হচ্ছে৷ তবে ইউরোপের এই মেগা-প্রকল্পে চ্যালেঞ্জের মাত্রাও কম নয়৷ যেমন নির্মাণের সময় গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হলো কংক্রিট ঢালার কাজ৷ ৩০ ঘণ্টা ধরে অবিরাম কংক্রিট ঢালা হবে৷ অর্থাৎ একটি অংশের জন্যেই বিশাল পরিমাণ কংক্রিটের প্রয়োজন৷

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে প্রকল্পের ম্যানেজার গেয়ারহার্ড কর্ডেস বলেন, প্রতিটি উপাদান একবারেই ঢালা গুরুত্বপূর্ণ৷ কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে প্রথমে ফ্লোর স্ল্যাব, তারপর প্রাচীর, তারপর সিলিং তৈরি করা হবে৷ আমরা এক ঢালাইয়ের মাধ্যমেই গোটা অংশে কংক্রিট প্রস্তুত করি৷ কারণ ফাটল এড়াতে তাপমাত্রার চাপ নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করা আমাদের কর্তব্য৷ ওয়াটারলাইট কনস্ট্রাকশনে সেটা অতি গুরুত্বপূর্ণ৷

আগে থেকে প্রস্তুত করা প্রথম অংশগুলি ভালোভাবেই কাজে লাগানো গেছে৷ প্রত্যেকটি ২১৭ মিটার দীর্ঘ ও ৪২ মিটার চওড়া৷

হেনরিক ভিনসেন্টসেন বলেন, এই লক্ষ্যে পৌঁছতে আমরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে যে কাজ করেছি, এটা তার বড় স্বীকৃতি৷ ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে শুরু করে আমাদের ডিজাইনার, নির্মাণ ব্যবস্থাপনা বিভাগে আমরা এবং আমাদের আশেপাশের কাঠামো ু এটা সবারই প্রাপ্তি বটে৷

পরিবেশ বাঁচাতে রেলসুড়ঙ্গ

মোট ৮৯টি আগে থেকে তৈরি অংশ জুড়ে সুড়ঙ্গটি তৈরি করা হচ্ছে৷ দুটি টিউবে ট্রেন ও দুটিতে গাড়ি চলবে৷ বিশাল অংশগুলো সমুদ্রে ডুবিয়ে একটির সঙ্গে অন্যটি জোড়া দেওয়া হবে৷ তারপরে ভেতরেও অনেক কাজ করতে হবে৷

গেয়ারহার্ড কর্ডেস বলেন, আমরা জানি, সমুদ্রের তলদেশে খুঁড়তে শুরু করলে আমরা কিছু রিফ ধ্বংস করবো৷ কিন্তু সেটা খুবই নগন্য, মোট রিফ এলাকার মাত্র শূন্য দশমিক শূন্য পাঁচ শতাংশ৷ তবে ধ্বংসকাণ্ডের তুলনায় বাস্তবে বিভিন্ন জায়গায় আরো রিফ পুনর্গঠন করা হবে৷

সেই সুড়ঙ্গ ডেনমার্ককে জার্মানির উত্তরাংশের সঙ্গে যুক্ত করবে৷ ফলে রেলযাত্রী ও গাড়ি চালকদের আজকের তুলনায় ১৬০ কিলোমিটার কম পথ পাড়ি দিতে হবে৷ এটা ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক প্রকল্পের অংশ, যার আওতায় ইউরোপের উত্তর ও দক্ষিণ অংশের মধ্যে রেল যাত্রা আরো দ্রুত করে তুলে বিমানযাত্রার প্রয়োজন দূর করার লক্ষ্য স্থির করা হচ্ছে৷ সেই প্রকল্পের আওতায় ব্রেনার বেস টানেলও নির্মাণ করা হচ্ছে, যার মাধ্যমে অস্ট্রিয়া ও ইটালির মধ্যে সংযোগ ঘটবে৷ ৬৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সুড়ঙ্গটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় রেল টানেল হতে চলেছে৷

ডেনমার্কের প্রকল্পের ব্যয় কি সত্যি উঠে আসবে কিনা, সে বিষয়ে প্রশ্ন উঠছে৷ নির্মাণের আনুমানিক ব্যয় আপাতত ৭০০ কোটি ইউরো ধরা হচ্ছে৷

প্রকল্পের ম্যানেজার মাটিয়াস লাউবেনস্টাইন বলেন, আমাদের অনুমানের ভিত্তি পরিবহণ সংক্রান্ত এক পূর্বাভাস, যা অনুযায়ী দিনে প্রায় ১১১টি ট্রেন চলবে৷ সেটাই আমাদের আর্থিক বিশ্লেষণের ভিত্তি৷ তাছাড়া ২০৩০ সাল থেকে প্রায় ১২,০০০ গাড়ি ফেমার্নবেল্ট টানেল ব্যবহার করবে বলে আমরা ধরে নিচ্ছি৷

গাড়িপ্রতি ৭৩ ইউরো টোল ট্যাক্স নেওয়া হবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ ট্রেনের জন্য ধার্য মাসুল এখনো অজানা রয়ে গেছে৷ কিন্তু নির্মাণের ব্যয় যে কমপক্ষে ২০ বছরে উঠে আসবে না, সে বিষয়ে কোনো সংশয় নেই৷

এই বিশাল প্রকল্পে নিরাপত্তা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷ গেয়ারহার্ড কর্ডেস বলেন, সুড়ঙ্গের মাঝে পানি ঢুকে গেলে আমাদের সত্যি বড় সমস্যা হবে৷ প্রাচীরগুলি সর্বোচ্চ গতিতে ট্রেন ও গাড়ির দুর্ঘটনার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে৷ ফলে নিরাপত্তার যথেষ্ট ব্যবস্থা রাখা হয়েছে৷ সেটা সত্যি কোনো সমস্যা নয়৷

২০২৯ সালে সুড়ঙ্গটি প্রস্তুত হওয়ার কথা৷ ডেনমার্কই পুরোপুরি এর ব্যয়ভার বহন করছে, কারণ এই প্রকল্প জার্মানদের তুলনায় তাদের কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ৷

 

সূত্র: যুগান্তর

সর্বশেষ - আন্তর্জাতিক