বাঘা প্রতিনিধি:
রাজশহীর বাঘায় পদ্মার চরে শুরু হয়েছে ব্যাপক ভাঙ্গন । এক সপ্তাহে প্রায় কয়েক হাজার বিঘা জমি নদী গর্ভে চলে গেছে। এছাড়া গত কয়েক বছরে পদ্মার ভাঙনে বিলিন হয়ে গেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার, ঘর-বাড়িসহ কয়েক হাজার আবাদি-অনাবাদি জমি ও গাছপালা। আর কয়েক গজ ভাঙলেই চকরাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পূর্ব চকরাজাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়, চৌমাদিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পদ্মার আঘাত হানবে। ফলে হুমকির মধ্যে রয়েছে বিদ্যালয় তিনটি।
পদ্মার ভাঙন শুরু হয়েছে পদ্মার মধ্যে চকরাজাপুর ইউনিয়নের আতারপাড়া, চৌমোদিয়া, চকরাজাপুর, টিকটিকিপাড়া, মানিকের চর, গোকুলপুর, কিশোরপুর, আলাইপুর, হরিরামপুর এলাকায়।
ভাঙনের তীব্রতা দেখে অনেকেই গাছপালা ও অপরিপক্ক রবি ফসল কেটে নিচ্ছেন। যা কোন ফসল হিসেবে কাজে না আসলেও গরু ছাগলের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করছেন।
শনিবার (৩০ জুলাই) নদী ভাঙন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, চকরাজাপুর চরের সিদ্দিক হোসেনের সাত বিঘা, নুর ইসলামের ৮ বিঘা জমিতে রোপন করা আম বাগান, খেজুর গাছ, সামাদ আলী, মজিবর রহমান আতু, নয়ন মন্ডল, জিলুর রহমান, লালু, আব্দুল হাকিমের খেঁজুর, আম বাগান, কুল বাগান কয়েক বছরে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। গত চারদিন আগেও নদী ছিল প্রায় এক কিলোমিটার দুরে।
বর্তমানে চকরাজাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় ভাঙ্গন থেকে ৮০ মিটার দুরে রয়েছে। চকরাজাপুর ইউনিয়নের ভাঙনে আলহাজ্ব এরশাদ আলীর চার বিঘা, আলহাজ্ব আরশাদ আলীর চার বিঘা, মুস্তাক আহমেদের সাড়ে তিন বিঘা, বাবলু দেওয়ানের পাঁচ বিঘা, জহুর আলীর দুই বিঘা, নেফাজ আলীর এক বিঘা জমির ধান, আখ পানির নিচে রয়েছে।
এছাড়া শফি মোল্লার ৭ বিঘা, হাকিম মোল্লার ৯ বিঘা, মছের আলীর ২ বিঘা, নুরুল ইসলামের ৭০ বিঘা, জানু মহাজনের ৩৫ বিঘা ও আব্দুল কুদ্দুসের ২৫ বিঘা, আলিফ হোসেনের ৩ বিঘা, সোবহান মোল্লার ৪ বিঘা, হাশেমের ৩ বিঘা, জলিল, কালু মহাজন, মনি মহাজন, গাজি মহাজন, মজি মহাজনসহ এই গ্রামের আরো অর্ধশতাধিক ব্যাক্তির জমি-গাছপালা কয়েক বছরে নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। আলিফ হোসেন বলেন, গত ৮ বছরে তার দাদার প্রায় ২০০ বিঘা, সোবহান মোল্লার ৭৫ বিঘা, সাধু ডাক্তারের শতাধিক বিঘা জমিসহ গাছপালা কয়েক বছরে বিলিন হয়েছেপদ্মার ভাঙনে। রাজ্জাক, কাজল, লিটন, শাকিবুল, আফাজ, সাইদুর ও আব্দুর রহিমের একইঅবস্থা।
শনিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হামিদুল ইসলাম ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন এবং ক্ষতিগ্রস্থ শতাধিক মানুষকে ত্রান বিতরণ করেন। ত্রান হিসেবে তিনি ১০ কেজি চাউল, দুই কেজি চিড়া ও আধা কেজি গুড় প্রদান করেন।
এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বাঘা উপজেলা শাখার জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার সভাপতি আমানুল হক আমানসহ উপজেলা প্রশাসনের কর্মচারী। এছাড়া নির্বাহী কর্মকর্তা চকরাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের সাথে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বিরোদী মতবিনিময় করেন।
এর আগে নির্বার্হী কর্মকর্তা চকরাজাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কমিউনিটি ক্লিনিক পরিদর্শন করেন।
স/শ