আমানুল হক আমান, বাঘা:
বাঘার ৫০০ বছরের ঐতিহাসিক ঈদ মেলায় মেলায় লাখো মানুষের ঢল নেমেছে। ঈদের নামাজ শেষে লাখ লাখ মানুষ বিভিন্ন এলাকা থেকে এই মেলায় আসতে শুরু করেছে। মেলায় হাজার হাজার ব্যবসায়ীরা পরসা নিয়ে বসেছে। মেলার বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে রয়েছে সার্কাস, যাত্রা, নাগর দোলা, মটোরসাইকেল, কারগাড়ি ঘোরানো খেলা।
দুই সপ্তাহব্যাপী মেলা ঈদুল ফিতরের ঈদের দিন থেকে মেলা শুরু হয়েছে। মেলা দেখা ও আনন্দ উপাভোগ করার জন্য দেশের দূর-দূরান্ত থেকে হাজার হাজার নারী-পুরুষ আসছে। মুসলমানদের ধর্মীয় প্রধান উৎসব হলেও সকল সম্প্রদায়ের মানুষ আসে এ মেলায়। মেলাই পাওয়া যাচ্ছে সব ধরনে মিষ্টি, বাচ্চাদের খেলনা, মনোহারি সামগ্রী, লোহা জাত দ্রব্য, কাঠের আলনা, চেয়ার, টেবিল, খাট, ড্রেসিং টেবিল, পালঙ্ক, সুকেচ, মাটির হাড়ি পাতিল, প্রসাধনী সামগ্রী, মাংস, বেকারী দ্রব্যাদি, শামুকের মালা, কাঠের সামগ্রী, বেলুন, বাঁশি এছাড়া ছবির দোকান, খাবার হোটেল, সদর ঘাটের পান, চা স্টল প্রভৃতি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানান যায়, মহৎ এক পুরুষ আব্বাসী। তাঁর বংশের হযরত শাহ মোয়াজ্জেম ওরপে শাহদৌলা (রঃ) ও ছেলে হযরত আঃ হামিদ দানিশ মন্দ (রঃ) এর উরশকে কেন্দ্র করে ঈদের দিন থেকে বাঘা ওয়াকফ এষ্টেটের বিশাল এলাকা জুড়ে শুরু হয় মেলা। ঈদের তৃতীয় দিন ওরশ মোবারক অনুষ্ঠিত হয়। ঈদের তৃতীয় দিনে জোহর নামাজের পর তবারক বিতরণ হয়।
রাজশাহী বিভাগীয় শহর থেকে প্রায় ৪৯ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণ কোনে বাঘায় হযরত শাহদৌলা (রঃ) ও ছেলে হযরত আঃ হামিদ দানিশ মন্দ (রঃ) সাধনার পীঠস্থান। বাঘা শাহী মসজিদের ভিতরে প্রবেশ পথের উত্তর গেটের বামদিকে হযরত শাহদৌলা (রঃ) রওজা শরীফ অবস্থিত।
প্রায় ৫০০ বছর আগে বাগদাদ থেকে ৫ জন সংগীসহ ইসলাম প্রচারের জন্য পূর্ব-দক্ষিণ কোনে পদ্মা নদীর কাছে বাঘা নামক স্থানে বসবাস শুরু করেন। তারপর নিজের চরিত্র, মাধুর্য্য, ব্যবহার ও আত্মিক শক্তির বলে এই এলাকার জনগণের মধ্যে ইসলাম প্রচারে আকৃষ্ঠ করেন তিনি। এই এলাকার মানুষ তার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে তাঁর আত্মিক ক্ষমতার প্রভাবে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে মানুষ। তাঁর স্বরণে প্রায় ৫০০ বছর যাবত চলছে ঈদ মেলা।
মেলা কমিটির সহ-সভাপতি ও বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হামিদুল ইসলাম বলেন, সুষ্ট সুন্দর পরিবেশে মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। যাতে কোন অপ্রীতিকর না ঘটে, সে জন্য পুলিশ বাহিনী সতর্ক রয়েছেন।
স/আর