নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহীর বাগমারায় আব্দুস সালাম (৪০) নামের এক পল্লী চিকিৎসককে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার সোয়া ৯টার দিকে উপজেলার তালতলি বাজারে নিজের ঔষুধের দোকান থেকে তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে গোয়ালকান্দি ইউনিয়ন পরিষদে নির্যাতন করা হয়।
খবর পেয়ে বাগমারা থানা পুলিশ দুপুর ১২টার দিকে ওই ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান বাগমারা থানার ওসি নাছির আহমেদ।
নির্যাতনের শিকার আব্দুস সালামের বাড়ি ওই ইউনিয়নের কনোপাড়া গ্রামে। তালতালি বাজারে তার ঔষুধের দোকান রয়েছে। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে বলে জানায় প্রত্যক্ষদর্শীরা।
প্রত্যক্ষদর্শী ইব্রাহিম হোসেন জানান, সোয়া ৯টার দিকে আব্দুস সালাম তার ঔষুধের দোকানে ছিলেন। এ সময় দুইটি মোটরসাইকেল নিয়ে পাঁচজন ব্যক্তি তার দোকানে যায়। যাদের মধ্যে একজন গ্রাম পুলিশের পোষাক পরা ছিল। মোটর সাইকেল থেকে নেমেই তারা স্থানীয় ইউপি সদস্য আবেদ আলী মোল্লার উপস্থিতিতে দোকানের ভিতর প্রবেশ করে আব্দুস সালামকে পিটিয়ে জখম করে এবং টেনে হিচড়ে বের করে। এ সময় দোকানের আসবাবপত্র ভাংচুর করা হয়। পরে আব্দুস সালামকে মোটর সাইকেলে তুলে নিয়ে যায় তারা।
আহত আব্দুস সালাম বলেন, কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই তারা আমার দোকানের ভিতরে প্রবেশ করে মারপিট শুরু করে। এসময় তারা দোকানে ভাংচুর চালায় এবং ক্যাশ বাক্স থেকে ১০ হাজার টাকা লুট করে। এরপর তারা আমাকে তুলে নিয়ে যায় গোয়ালকান্দি ইউনিয়ন পরিষদে। সেখানে ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর সরকারের সামনে তারা আমাকে নির্যাতন করে। পরে পুলিশ গিয়ে আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে বলে জানান আব্দুস সালাম।
ইউপি সদস্য আবেদ আলী মেম্বার বলেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে রামরামার আরঙ্গবাদ গ্রামের শফিকুল ইসলাম ইউনিয়ন পরিষদের অভিযোগ করে। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে শনিবার ইউনিয়ন পরিষদের শালিস বৈঠক ডাকা হয়। যা নোটিশ দিয়ে আব্দুস সালামকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু শালিসে উপস্থিত না হওয়ায় চেয়ারম্যান একজন গ্রাম পুলিশসহ ৪/৫ জন লোক পাঠিয়ে ছিল সালামকে ডেকে নিয়ে যেতে। তবে সে সেচ্ছায় যেতে রাজি না হওয়ায় তাকে জোর করে ধরে নিয়ে গেছে। তবে আব্দুস সালামকে নির্যাতনের বিষয়টি অস্বীকার করেন আবেদ আলী।
এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর সরকারের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।
বাগমারা থানার ওসি নাছিম আহমেদ সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, খবর পেয়ে এসআই শাহীনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল গোয়ালকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের গিয়ে আহত অবস্থায় আব্দুস সালামকে উদ্ধার করে। সেখান থেকে পুলিশ তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করে। পরে সালামের ঔষুধের দোকান পরিদর্শণ করে এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের জবানবন্দী নেয়া হয়েছে। যাতে সালামের দোকানে ভাংচুর ও লুটপাটের প্রমান পেয়েছে পুলিশ।
এ ব্যাপারে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান ওসি।
স/শ