সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
আন্দ্রে রাসেল কথা বলেন খুবই আস্তে, কিন্তু ছক্কা মারার সময় গ্যালারি গর্জে ওঠে। মুশফিকুর রহিমের ছক্কা বেশি বড় নয়।
আগেরদিন প্রায় হারা ম্যাচ জিতিয়ে রাজশাহীকে ফাইনালে তুলে দেয়া অধিনায়ক রাসেলকে দেখা গেল উচ্ছ্বাসহীন। ট্রফি দেখে উচ্ছ্বাসে ‘ওয়াও’ বলে উঠলেন খুলনা টাইগার্সের অধিনায়ক মুশফিক। ট্রফি উন্মোচন শেষেও উচ্ছ্বাসের রেশ তার কাটল না।
গত ৮ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু বিপিএলের উদ্বোধন হয়েছিল। খেলা শুরু হয় ১১ ডিসেম্বর। ফ্র্যাঞ্চাইজি ছাড়া বিসিবির ব্যবস্থাপনায় বিপিএলে মাঠের লড়াই হয়েছে দুর্দান্ত।
লন্ডন থেকে তৈরি করে আনা বিপিএলের বিশেষ ট্রফি জিততে ফাইনালে আজ মুখোমুখি খুলনা ও রাজশাহী। ৩৮ দিনের এই টি ২০ টুর্নামেন্টের শেষদিনে সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হওয়া ম্যাচ জিটিভি ও মাছরাঙা টেলিভিশন সরাসরি সম্প্রচার করবে।
অবাক করা বিষয় হল, এবার বিপিএলে কোনো প্রাইজমানি নেই! শুধু ট্রফি দিয়েই শেষ হবে টুর্নামেন্ট। ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট পাবেন মাত্র এক হাজার ডলার। সঙ্গে একটি মোটরসাইকেল। রাজশাহী এর আগে একবার ফাইনালে উঠলেও এই প্রথম ট্রফির লড়াইয়ে নামবে খুলনা। দু’দলের কেউই এখনও শিরোপার স্বাদ পায়নি।
এবার নতুন চ্যাম্পিয়ন পাচ্ছে বিপিএল। অন্য আসরের তুলনায় এবার প্রচুর রান হয়েছে। বিতর্ক হয়েছে তুলনামূলক কম। একই সঙ্গে পেসাররা দাপট দেখিয়েছেন।
ঘরোয়া ক্রিকেটে অধিনায়ক হিসেবে মুশফিকুর রহিমের সাফল্যের চেয়ে ব্যর্থতার পাল্লা ভারি। বিপিএলে প্রতিবারই মাঝপথে নেতৃত্ব ছাড়েন। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগেও তার ট্রফি জয়ের উদাহরণ নেই। সেই মুশফিকের নেতৃত্বেই এবার দারুণ খেলেছে খুলনা। দলের দুই দক্ষিণ আফ্রিকান রাইলি রুশো ও রবি ফ্রাইলিঙ্ক মুশফিকের নেতৃত্বগুণে মুগ্ধ।
খুলনা শুরু করেছিল টানা তিন জয়ে। এরপর ঢাকা প্লাটুনের বিপক্ষে দু’শর বেশি রান তাড়া করে জিতে হয় গ্রুপপর্বের এক নম্বর দল। প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচে রাজশাহীকে হারিয়ে প্রথম দল হিসেবে ফাইনাল নিশ্চিত করেন মুশফিকরা। টপঅর্ডারে খুলনার মেহেদী হাসান মিরাজ নিয়মিত ভালো শুরু করেছেন। সবশেষ ম্যাচ দুটি জিতিয়েছেন আরেক ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত। দেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে এবার বিপিএলে সেঞ্চুরি করেছেন তিনি।
মিডলঅর্ডারে রুশো ও মুশফিক দলের মূল কাণ্ডারি। বোলিং লাইনআপ তাদের আরও বেশি শক্তিশালী। কোয়ালিফায়ার ম্যাচে ছয় উইকেট নিয়ে বিপিএলে নতুন রেকর্ড গড়েন পাকিস্তানের মোহাম্মদ আমির। রয়েছেন শফিউল, শহিদুল, ফ্রাইলিঙ্করা। খুলনার কোচ জেমস ফস্টার বলেন, ‘ছেলেরা আত্মবিশ্বাসী। রাজশাহী খুবই ভালো দল। প্রতিপক্ষের কাউকে নিয়ে আলাদা পরিকল্পনা নেই। সবাইকে নিয়েই পরিকল্পনা রয়েছে।’
গ্রুপপর্বে দু’দলের প্রথম মুখোমুখিতে ১৯০ রান তাড়া করে জেতে খুলনা। পরের ম্যাচে সাত উইকেটে জয় পায় রাজশাহী। প্রথম কোয়ালিফায়ারে আবার জেতে খুলনা।
রাজশাহী অলরাউন্ডারে ভরা দল। আট নম্বর পর্যন্ত তাদের ব্যাটসম্যান। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত হার্ডহিটার ব্যাটসম্যান। বিশেষ করে ওপেনিংয়ে লিটন দাস, মাঝে রাসেল ও মোহাম্মদ নওয়াজ ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন। প্রতি ম্যাচেই বোলিং করেন আট-নয়জন! দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে চট্টগ্রামের মুঠো থেকে জয় ছিনিয়ে ফাইনালে উঠেছে তারা। ফাইনালে ফেভারিট নিয়ে আন্দ্রে রাসেল বলেন, ‘কঠিন প্রশ্ন। অবশ্যই আমরা ট্রফি জিততে চাইব। দল হিসেবে খেলে ফাইনালে উঠেছি। সবাই দেখেছে আমরা কি করতে পারি। আগামীকালও (আজ) দল হিসেবে খেলতে চাই।’