অবশেষে বগুড়া শহর যুবলীগের সাবগ্রাম বন্দর কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবু তালেব হত্যার রহস্য উন্মোচন হয়েছে। সেই সাথে আসামীদের গ্রেপ্তার ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। শুক্রবার সন্ধ্যায় শহরের বারপুর এলাকা থেকে রক্তমাখা পোশাক পরা অবস্থায় পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে।
গত ১৪ জুন রবিবার দুপুর দেড়টার দিকে শহরের আকাশতারা জুট মিলের সামনে আবু তালেবকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার পরদিন নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে বগুড়া সদর থানায় তিন জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৭/৮ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে শহরের বারপুর এলাকা থেকে রক্তমাখা পোশাক পরা অবস্থায় মামলার আসামীদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, বগুড়া সদর থানার আকাশতারা মধ্যপাড়া এলকার আফছার প্রামাণিকের ছেলে চাঁন মিয়া (২১) ও একই এলাকার কাইয়ুম প্রামাণিকের ছেলে বাপ্পারাজ ওরফে বাপ্পা।
বগুড়া জেলা গোয়েন্দা শাখার পরিদর্শক এমরান মাহমুদ তুহিন জানান, হত্যাকাণ্ডের পর থেকে আসামীরা পালিয়ে বেড়ানোর কারণে রক্তমাখা পোশাক পরেই ঘুরছিল। এমন অবস্থাতেই তাদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। গ্রেপ্তারের পর হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জানায়, মামলার তিন আসামিই অস্ত্রবাজ ও একসাথে চলাফেরা করতো। এর মধ্যে প্রধান আসামি ফিরোজ ওরফে ফোকরার সাথে তালেবের সম্প্রতি নানা বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। তাছাড়া চান ও বাপ্পার সাথেও তালেবের ভালো সম্পর্ক যাচ্ছিল না। তাছাড়া তালেবের ‘বড় ভাই সুলভ’ আচরণ তারা তিনজনই মেনে নিতে পারছিল না। ফলে তালেব বিভিন্ন সময়ে তাদের বিভিন্ন ইস্যুতে ডাকলেও তারা সাড়া দিত না।
এমন পরিস্থিতিতে ঘটনার দিন তিন আসামী ঘটনাস্থলের পাশে আইয়ুবের দোকানে পান খাচ্ছিলের। এমন সময় তালেব একটা মোটরসাইকেল নিয়ে সেখানে আসে। মোটরসাইকেল থেকে নেমে তালেব চাঁনকে ডাক দিলে তিনজনই এগিয়ে আসে। এসময় তালেব চাঁনকে জিজ্ঞেস করে “কিরে,কথা শুনিস না কেন, বেশি সেয়ানা হয়ে গেছু? কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে চাঁন চাকু বের করে তালেবের বুকে আঘাত করে। তালেব দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় পিছন থেকে তিনজনই তালেবকে এলোপাথারি ছুরি মারতে থাকে। তালেব মাটিতে পড়ে যাবার পরেও তারা মারতে থাকে।
এ সময় ফিরোজের চাকুর আঘাতে তালেবের শ্বাসনালী প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। তাদের নিজেদের এলোপাথারি কোপে চাঁনের ডান হাতের কনে আংগুল এবং ফিরোজের ডান কনুই কেটে যায়। তাছাড়া আসামীদের দেয়া তথ্যমতে আকাশতারা-গাবতলী রোডে একটি বাগানের মধ্যে থেকে হত্যাকান্ডের সময় ব্যবহৃত চাকু উদ্ধার করা হয়।
এ ব্যাপারে বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আলী আশরাফ ভূঁঞা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত অপর আসামী ফিরোজ ওরফে ফোকরাকে গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সূত্রঃ কালের কণ্ঠ