শনিবার , ১৩ এপ্রিল ২০১৯ | ১৬ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

পরিকল্পনায় অধ্যক্ষ সিরাজ, জড়িত ১৩, সরাসরি আগুন দেয় ৪ জন

Paris
এপ্রিল ১৩, ২০১৯ ৩:২২ অপরাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিল ওই মাদ্রাসার শিক্ষক সিরাজ উদ দৌলা। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ১৩ জনের সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পেয়েছে পুলিশ। আর নুসরাতের গায়ে সরাসরি আগুন দেয় চারজন। তাদের মধ্যে একজন ছিল শাহাদাত হোসেন শামীম। আরেকটি মেয়ে ছিল (যার পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে)। আগুন দিয়ে মাদ্রাসার মূল গেট দিয়েই পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।

শনিবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) হেড কোয়ার্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়। ব্রিফিং করেন পিবিআইয়ের ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার।

জড়িত ১৩

পিবিআই জানায়, নুসরাত জাহান রাফির গায়ে অগ্নিসংযোগ করে হত্যার ঘটনার সঙ্গে ১৩ জনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। এর মধ্যে মামলার এজাহারভুক্ত সাতজন এবং সন্দেহভাজন হিসেবে ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নুসরাতের গায়ে সরাসরি আগুন দেয় যে চারজন তার মধ্যে এক নারীসহ দুইজনকে চিহ্নিত করা গেছে। এই দুইজনের একজন শাহাদাত হোসেন শামীমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে তাকে এখনও পিবিআই’র কাছে হস্তান্তর করা হয়নি। পিবিআই তাকে নিয়ে সংশ্লিষ্ট আরও কয়েকজনকে গ্রেফতারের অভিযানে আছে।

গ্রেফতার যারা

এজাহারভুক্ত সাতজন গ্রেফতার আছে। তারা হলো- মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা (৫৫), মাদ্রাসার ছাত্র নূর উদ্দিন (২০) ও শাহাদাত হোসেন শামীম (২০), পৌর কাউন্সিলর মাকসুদ আলম (৪৫), জোবায়ের আহম্মেদ (২০), জাবেদ হোসেন (১৯) এবং আফসার উদ্দিন (৩৫)। এজাহারে নাম উল্লেখ থাকা হাফেজ আবদুল কাদের পলাতক আছে। বাকি পাঁচজনকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

সন্দেহভাজন যে ছয়জন গ্রেফতার আছে তারা হলো কেফায়েত উল্লাহ জনি, সাইদুল ইসলাম, আরিফুল ইসলাম, উম্মে সুলতানা পপি, নূর হোসেন ও আলাউদ্দিন।

পুরো ঘটনায় দুই নারীর সম্পৃক্ততা পেয়েছে পিবিআই।

যেভাবে পরিকল্পনা

পিবিআইয়ের ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার জানান, গত ৪ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার সঙ্গে কারাগারে দেখা করে কয়েকজন। এদের মধ্যে ছিল শাহাদাত হোসেন শামীম, জাবেদ হোসেন, হাফেজ আবদুল কাদেরসহ কয়েকজন। দেখা করার পর সিরাজের নির্দেশে হত্যার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শামীম নুসরাতকে পুড়িয়ে মারার প্রস্তাব দেয়। কীভাবে হত্যা করা হবে পরে নূরউদ্দিন ও শামীমের নেতৃত্বে তার বিশদ পরিকল্পনা করা হয়।

দুই কারণে হত্যার পরিকল্পনা

পিবিআই জানায়, দুই কারণে নুসরাতকে হত্যার পরিকল্পনা করে তারা। অধ্যক্ষ সিরাজের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির মামলা করে নুসরাত আলেম সমাজকে হেয় করেছে বলে মনে করে তারা। আরেকটি কারণ হলো শামীম দীর্ঘদিন ধরে নুসরাতকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। নুসরাত তা বারবারই প্রত্যাখ্যান করছিল। এই ক্ষোভ থেকে শামীম তাকে পুড়িয়ে হত্যার প্রস্তাব দেয়। দুই কারণ মিলিয়ে নুসরাতকে গায়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়।

যেভাবে হত্যা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন

ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার জানান, ৬ এপ্রিল আলিম পরীক্ষা শুরুর আগে থেকেই ওই মাদ্রাসায় লুকিয়ে ছিল হত্যাকারীরা। সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে দুটি টয়লেটে লুকিয়ে ছিল তারা। চার হত্যাকারীর মধ্যে যে মেয়েটি ছিল সেই মেয়েই বাকি তিনজনকে বোরকা ও কোরোসিন এনে দেয়। আর চম্পা নামের একটি মেয়ে (পঞ্চম জন) পরীক্ষার হলে গিয়ে নুসরাতকে বলে তার বান্ধবী নিশাতকে মারধর করা হচ্ছে। এই কথা শুনে নুসরাত দৌড়ে ছাদে যায়। এরপর তার হাত-পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

সবার সামনে দিয়ে পালায় হত্যাকারীরা

হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া চারজন এবং নুসরাতকে ডেকে ছাদে নিয়ে আসা চম্পা অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর সবার সামনে দিয়েই মাদ্রাসার মূল গেট দিয়ে পালিয়ে যায়। নূরউদ্দিন ও হাফেজ আবদুল কাদেরসহ পাঁচজন আগে থেকেই গেটে পাহারা দিচ্ছিল। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পর সবাই গা ঢাকা দেয়।

সর্বশেষ - জাতীয়