নাজমুল হক নাহিদ আত্রাই:
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সব চেয়ে বড় উৎসবকে সামনে রেখে নওগাঁর আত্রাইয়ের শিল্পীর রঙ তুলির আঁচড়ে মূর্ত হয়ে উঠেছে দেবীর রুপ। শিল্পীদের নিপুন হাতে ইতোমধ্যে মাটির কাজ শেষ করে চলছে রঙতুলির কাজ। শিল্পীর রঙতুলির আঁচড়ে গড়ে তোলা হচ্ছে দশভ’জা দেবীদুর্গাসহ বিভিন্ন দেবদেবীর প্রতিমূর্তী।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে দেবীদুর্গা শক্তি ও সুন্দরের প্রতীক। প্রতি বছর অশ্বরের বিনাশ কল্পে মা দেবী দূর্গা এই ধরাধামে আবির্ভুত হয়। তাই সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন, সমাজ থেকে অন্যায় অবিচার গ্লানি দূর করার জন্যই এই পূজার আয়োজন।
এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে সারাদেশের ন্যায় নওগাঁর আত্রাইয়ে শুরু হতে যাচ্ছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবাচাইতে বড় উৎসব দুর্গা পুজা। আর এ পুজাকে কেন্দ্র করে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎ শিল্পীরা। শিল্পীর তুলির রঙয়ের আঁচড়ে মূর্ত হয়ে উঠেছে দেবীর রুপ। এদিকে উপজেলার সকল হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা মা দেবী দুর্গাকে বরণ করতে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। মায়ের জন্য তাদের এখন শুধু অপেক্ষার পালা । এরই সুবাদে ঘরে ঘরে চলছে আনন্দ উৎসব ও পুজার প্রস্ততি । নির্ধারিত সময় অনুযায়ী আগামী ২৬ সেপ্টম্বর শুরু হবে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শ্বারাদীয় দুর্গাপুজা এবং দশমী পূজা শেষে প্রতিমা বির্সজনের মধ্য দিয়ে ৩০ সেপ্টেম্বর উৎসবের সমাপ্তি ঘটবে।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন দুর্গা মন্দির ঘুরে দেখা যায়, শ্বারদীয় দুর্গাপুজার প্রস্ততি মুলক কাজ প্রায় শেষের দিকে। উপজেলা পুজা উদযাপন কমিটির তথ্যমতে এবার ৪৮ টি মন্ডবে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
আলাপচারিতায় নিজের সম্পর্কে ভবানীপুর গ্রামের ভবেশ মালাকার যা বললেন, ছোটবেলা থেকে কাদামাটি ও রঙতুলির সঙ্গে বেড়ে ওঠা ভবেশ মালাকারের জন্মস্থান নওগাঁ জেলার আত্রাই থানার ভবানীপুর গ্রামে। এখানে তিনি প্রতিমা তৈরি করে থাকেন। প্রতি বছর তিনি ২৫ থেকে ৩০ সেট প্রতিমা তৈরির অর্ডার নেন। এবার ও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। ইতোমধ্যে ৭ সেট প্রতিমা ডেলিভারি দিয়েছেন তিনি। প্রতি সেট প্রতিমা তৈরিতে ব্যয় হয় প্রায় ১৫ হাজার টাকা। তা আবার বিক্রি হয় ২৫ হাজার টাকায়।
এ ব্যাপারে আত্রাই উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রী বরুন কুমার ও সভাপতি, শ্রীঃ মধু সুদন প্রামানিক বলেন, আমরা পূজা উদযাপন পরিষদেও পক্ষ থেকে দুর্গোৎসব শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন করতে প্রায় সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। তারা আরো জানান, এবার উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে মোট ৪৮টি মন্ডপে পূজা উদযাপন হবে এবং উপজেলার ৪৮টি পূজা মন্ডপের মধ্যে ১৮টি ঝুঁকিপূর্ণ মন্ডপকে বিশেষ নজরদারিতে রাখার জন্য প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ভানীপুর চৌধুরী বাড়ী সর্বজনীন দুর্গা মন্দির কমিটির সভাপতি শ্রীঃ অভিজিৎ চৌধুরীর সাথে কথা বললে তিনি জানান, বর্তমান সরকার তাদের সার্বিকভাবে সহ যোগীতার পাশাপাশি আর্থিক ভাবে ও সহযোগীতা করে আসছে। এবং এবারের পূজায় তাদের আনন্দো ও বেশি হবে।
পুজাকে সামনে রেখে সম্ভবনার কথা জানালেন আত্রাই থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বদরদ্দোজা, তিনি বলেন শান্তিপূর্ন ভাবে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজা অনুষ্ঠান সম্পূন্ন করার লক্ষে আইন শৃংখলা বাহিনী সজাগ দৃষ্টি রাখছে। আইন শৃংখলা বাহিনীর পক্ষ থেকে তিন স্থরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে এবং থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) দের বিভিন্ন মন্ডপের দায়িত্ব দিয়ে নিয়মিত টহল দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশা পাশি সবকটি পূজা মন্ডপ গোয়েন্দা নজরদারিতে থাকবে বলেও তিনি জানিয়েছেন। অন্যান্য বছরের চাইতে এবার জোরালো প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। আশাকরি কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবেনা এবারের পুজায়। তবে এ জন্য তিনি সকল স্তরের মানুষের সহযোগীতা কামনা করেন।
স/অ