সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়ন বাণিজ্য বন্ধ করতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রার্থী মনোনয়নে তৃণমূল পর্যায়ে ভোটের ব্যবস্থা চালু হতে পারে। এ ছাড়া দলে কমপক্ষে তিন বছর সদস্য না থাকলে প্রার্থী হওয়া যাবে না—এই বিধানটি আবার ফিরে আসতে পারে। জোটবদ্ধ নির্বাচনের ক্ষেত্রে জোটভুক্ত দলগুলোর প্রার্থীদের নিজ নিজ দলের প্রতীক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হতে পারে। বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তারের ক্ষমতা পাবে সশস্ত্র বাহিনী। এছাড়াও সংরক্ষিত আসনে নারীদের জিতে আসতে হতে পারে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে। নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কারের জন্য গঠিত কমিশনের কাছে এই প্রস্তাবগুলো গুরুত্ব পাচ্ছে এবং কমিশনের সদস্যরা এসব প্রস্তাব যৌক্তিক মনে করছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে এ টি এম শামসুল হুদার নির্বাচন কমিশন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রধান আইন ‘দ্য রিপ্রেজেন্টেশন অব দ্য পিপল অর্ডার’ (আরপিও) বা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে বেশ কিছু বিধান যুক্ত করেছিল। কিন্তু নবম জাতীয় সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগ সেগুলো বাতিল করে।
সংস্কার কমিশন সেই বাতিল বিধানগুলো আবার ফিরিয়ে আনার প্রস্তাব দেবে বলে দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। এ ছাড়া সংস্কার কমিশন মনোনয়ন বাণিজ্য বন্ধে আরো কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া যায় কি না তা ভেবে দেখছে। আওয়ামী লীগ সরকার আমলের নির্বাচন কমিশন ঋণ ও বিল খেলাপিদের জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণের পথ কিছুটা সহজ করেছিল। সাত দিন আগের পরিবর্তে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিন খেলাপি ঋণ পুনঃ তফসিল ও বিল পরিশোধের বিধান করেছিল।
সংস্কার কমিশন সে সুযোগ বাতিল করে আগের বিধানে ফেরার পক্ষে। এ ছাড়া কমিশন প্রার্থীর নির্বাচনী ব্যয় পর্যবেক্ষণ এবং হলফনামায় দেওয়া তথ্য খতিয়ে দেখার জন্য এলাকাভিত্তিক পর্যবেক্ষণ গঠনের প্রস্তাবও রাখতে যাচ্ছে।
সশস্ত্র বাহিনী যে ক্ষমতা ফিরে পাবে : দেশের প্রতিটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনী (সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী) নিয়োগ করা হলেও ২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনের আগে আরপিও সংশোধন করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞায় প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগগুলো বা সশস্ত্র বাহিনীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আরপিওর ৮৭ অনুচ্ছেদে এই বিধান যুক্ত করা হয় যে ১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধি বা আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যা-ই থাকুক না কেন, নির্বাচনসংক্রান্ত দায়িত্ব পালনকালে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কোনো সদস্য একজন পুলিশ কর্মকর্তা না হয়েও নির্বাচনী অপরাধের জন্য কাউকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করতে পারবে।
এর আগের নির্বাচনগুলোতে সেনাবাহিনী নিয়োগ করা হতো ১৮৯৮ সালের প্রণীত ফৌজদারি কর্যবিধির ১২৯ থেকে ১৩১ ধারায় এবং সেনা বিধিমালা ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’-এর আওতায়।
আওয়ামী লীগ ও তাদের সমমনা দলগুলো ২০০১ সালের নির্বাচনে সেনাবাহিনীর ভূমিকায় সন্তুষ্ট ছিল না। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সরকার গঠিত হলে ওই সংসদে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞা থেকে প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগগুলো বাদ দেওয়া হয়। ফলে বিদ্যমান বিধান অনুসারে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, আনসার ও কোস্ট গার্ড সদস্যরা নির্বাচনী অপরাধের জন্য কাউকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তারের ক্ষমতা নিয়ে নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করতে পারলেও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা পারেন না। আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগীদের বাইরের দলগুলো এবং নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা সশস্ত্র বাহিনীকে এই ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার পক্ষে দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন। সে কারণে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন আরপিওর আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞায় আবারও প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগগুলোকে সংযুক্ত করার প্রস্তাব দিতে যাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।
ব্যাপক আলোচিত ৯১ অনুচ্ছেদ সংশোধন হবে : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন আরপিওর ৯১(এ) অনুচ্ছেদ সংশোধন করে ‘ইলেকশন’ শব্দটি ‘পোলিং’ শব্দ দিয়ে প্রতিস্থাপন করে। এর ফলে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে ভোট শেষ হওয়া পর্যন্ত গুরুতর অনিয়মের ক্ষেত্রে কোনো আসনের নির্বাচন বন্ধ করার ক্ষমতা হারায় নির্বাচন কমিশন। এই সংশোধনের ফলে কেবল ভোট চলাকালে কিছু ভোটকেন্দ্রের ভোট স্থগিত বা বাতিল করার মধ্যে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা সীমিত হয়ে পাড়ে। সংসদে এসংক্রান্ত বিল উত্থাপনের পর নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা আপত্তি জানালেও তা আমলে নেওয়া হয়নি। সংস্কার কমিশন এই অনুচ্ছেদটি আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে এনে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা বাড়ানের পক্ষে বলে জানা যায়।
ঐকমত্য ছাড়া ইভিএম নয় : নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে সংস্কার কমিশনের সদস্যরা আরপিওর এসংক্রান্ত অনুচ্ছেদে সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্য এবং ইভিএম আরো উন্নত করার শর্ত যোগ করার কথা ভাবছে। গত শনিবার নির্বাচন কমিশন বিটের সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘ইভিএম ত্রুটিপূর্ণ, দুর্বল যন্ত্র ছিল। এগুলো এখন বোধ হয় অকেজো হয়ে গেছে। সবচেয়ে বড় কথা, এটার জন্য রাজনৈতিক ঐক্য ও আস্থাশীলতা দরকার। রাজনীতিবিদদেরই এ বিষয়ে ভবিষ্যতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
সহজে পোস্টাল ব্যালটে ভোট : সংস্কার কমিশন পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার বিষয়টি সহজ করতে এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যসহ নির্বাচনের কাজে নিয়োজিতরা, প্রবাসীরা, দেশে নির্বাচনী এলাকার বাইরে যাদের কর্মস্থল, বৃদ্ধ ও শারীরিক প্রতিবন্ধীরাও যাতে এর মাধ্যমে ভোট দিতে পারে তার ব্যবস্থা করতে আগ্রহী। গত শনিবার নির্বাচন বিটের সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে সংস্কার কমিশনের সদস্য ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘বিদ্যমান আইনে পোস্টাল ব্যালটের ব্যবস্থা আছে কিন্তু প্রয়োগ হয় না। আমরা চাচ্ছি, যারা বিদেশে আছেন, তারা শুধু নন, যারা দেশে আছেন, অক্ষম, নারী, কর্মস্থলের কারণে নির্বাচনী এলাকার বাইরে রয়েছেন তাদের জন্যও পোস্টাল ব্যবস্থা করতে।’
মহানগরের আসনসংখ্যা বাড়বে না : জাতীয় সংসদের আসনগুলোর সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে মহানগর এলাকার আসনসংখ্যা নির্দিষ্ট করে দেওয়ার পক্ষে সংস্কার কমিশনের সদস্যরা। তাদের যুক্তি, মহানগর এলাকার জনসংখ্যা ক্রমে বাড়ছে। গ্রামাঞ্চল থেকে মহানগর এলকায় যারা আসছেন তাদের অনেকে ফিরছেন না। এ অবস্থায় সীমানা নির্ধারণে জনসংখ্যাকে প্রাধান্য দিলে মাহানগর এলাকায় আসনসংখ্যা বাড়াতে হবে। সেটি উচিত হবে না।
৫২ বছরে মোট ১৮ বার আরপিও সংশোধন : গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ প্রণীত হয়েছিল ১৯৭২ সালে। এরপর এখন পর্যন্ত ৫২ বছরে মোট ১৮ বার সংশোধন করা হয়েছে আইনটি। এ সময় সংযোজন-বিয়োজন করা হয়েছে এর বিভিন্ন অনুচ্ছেদের ২৪১টি বিষয়। আরপিও প্রথম সংশোধন করা হয়েছিল ১৯৭৮ সালে। পরে ১৯৮১, ১৯৮৫, ১৯৮৬, ১৯৯১, ১৯৯৪, ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮, ২০০৯, ২০১৩ ও ২০১৮ সালে সংশোধনী আনা হয়।
অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এম এ সাঈদের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন ২০০১ সালের জুলাইয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে আরপিও সংস্কারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু প্রস্তাব রেখেছিল। তার মধ্যে কিছু প্রস্তাব অনুমোদন পায়নি। সরকারের অনুমোদন করা প্রস্তাবগুলো ২০০১ সালের ৮ আগস্ট অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হয়। ওই প্রস্তাবগুলোর মধ্যে ছিল কর ও টেলিফোন, গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ ইত্যাদির বিলখেলাপিরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। নির্বাচনে কেউ কারচুপি করলে পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য তিনি নির্বাচনে অযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত হবেন। তিনটির বেশি আসনে কেউ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। নির্বাচনের সময় পুলিশসহ সেনাবাহিনী ও অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে নির্বাচনে বিঘ্ন সৃষ্টিকারীদের বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা দিতে হবে—এ প্রস্তাবটি এম এ সাঈদের কমিশনই ওই সময় প্রথম দিয়েছিল।
এরপর আরপিওতে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয় নবম সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরে ড. এ টি এম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কর্মকালে ২০০৮-৯ সালে।
২০০৮ সালের ৪২ ও ৪৫ নম্বর অধ্যাদেশের মাধ্যমে ব্যাপকভাবে সংশোধন করা হয় আরপিও। ওই বছরই ৫২ নম্বর অধ্যাদেশের মাধ্যমে আরো একবার সংশোধন করা হয় ৯৫টি অনুচ্ছেদসংবলিত আইনটি।
ওই সময় থেকে ভোটার না হয়েও সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়। ইসিতে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন এবং প্রার্থীকে হলফনামার মাধ্যমে নিজের সম্পর্কে আট ধরনের তথ্য প্রদান বাধ্যতামূলক করা হয়। এ ছাড়া যুক্ত করা হয় ‘না’ ভোটের বিধান, সরকারি চাকরি থেকে পদত্যাগ বা অবসরের পর তিন বছর এবং বরখাস্ত হলে পাঁচ বছর পার না হলে নির্বাচনে অযোগ্যতার বিধান। দলীয় প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে তৃণমূলের মতামত বিবেচনায় নেওয়া এবং সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে হলে নিরবচ্ছিন্নভাবে তিন বছরের বেশি সময় দলের সদস্য থাকাও বাধ্যতামূলক করা হয়। নিষিদ্ধ করা হয় দলে অঙ্গ বা সহযোগী সংগঠন হিসেবে ছাত্র, শিক্ষক ও শ্রমিক সংগঠন এবং দেশের বাইরে কোনো শাখা রাখা। যুদ্ধাপরাধীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণও নিষিদ্ধ করা হয় {পরে যুদ্ধাপরাধীদের বদলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (আইসিটি) মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দণ্ডিত ব্যক্তিদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়}। ২০২০ সালের মধ্যে (পরে এটি ২০৩০ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে) দলের কেন্দ্রীয় কমিটিসহ সব কমিটিতে ন্যূনপক্ষে ৩৩ শতাংশ সদস্য পদ নারীদের জন্য সংরক্ষণ বাধ্যতামূলক করা হয়।
নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা অর্জনের জন্য আগে কখনো নির্বাচিত না হয়ে থাকলে নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনও বাধ্যতামূলক করা হয়। নির্বাচনে অযোগ্য করা হয় ঋণখেলাপিদের সঙ্গে বিলখেলাপিদেরও। নির্বাচন কমিশন ওই সময় নির্বাচনী অপরাধের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতা লাভ করে। ওই সময় থেকে স্টিলের ব্যালট বাক্সের বদলে চালু হয় স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স।
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আরপিওর বাইরে ছবিসহ ভোটারতালিকা ও জাতীয় পরিচয়পত্রের পক্ষে আইন করা হয়। ওই নির্বাচনের পরে ২০০৯ সালে ইসির স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালনের এবং স্বতন্ত্র সচিবালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রণীত হয় ‘নির্বাচন কমিশন সচিবালয় আইন’। এ ছাড়া সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ২০১১ সালে সংবিধানের ১২৫(গ) অনুচ্ছেদে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর সেই নির্বাচনসংক্রান্ত কোনো মামলায় ইসিকে যুক্তিসংগত নোটিশ বা শুনানির সুযোগ না দিয়ে অন্তর্র্বতী বা অন্য কোনোরূপ নির্দেশ না দিতে আদালতের ওপর বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়।
কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালে ‘না’ ভোটের বিধান বাতিল করা হয়। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞা থেকে বাদ দেওয়া হয় প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগগুলো। এরপর দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৩ সালে বিলুপ্ত করা হয় দলে তিন বছর নিরবচ্ছিন্নভাবে সদস্য থাকার বিধানটি।
পদ্ধতি নয়, ব্যবস্থার সংস্কার : গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্র্বতী সরকার গঠিত নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন এই আইনসহ নির্বাচন সম্পর্কিত আইনগুলোর আবারও সংস্কারের প্রস্তাব দিতে যাচ্ছে। সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের জন্য নির্ধারিত সময় আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যেই সংস্কার প্রতিবেদন জমা দিতে পারব।’
জানা যায়, সংস্কার কমিশন এখনো নির্বাচনের পদ্ধতি নিয়ে নয়, নির্বাচনব্যবস্থার সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে কাজ করছে। এই সংস্কার কমিশনের নাম ‘নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন’। কমিশনের সদস্যরা মনে করেন, নির্বাচন পদ্ধতি পরিবর্তন করতে হলে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। বিদ্যমান ‘ফার্স্ট পাস্ট দ্য পোস্ট’ পদ্ধতির নির্বাচনের পরিবর্তে ‘প্রপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন’ বা ‘সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব’ পদ্ধতি চালু করতে হলে আগে সংবিধানে সংশোধন আনতে হবে।
এদিকে গত রবিবার অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেছেন, সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশমালার কোন অংশ সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে তার ভিত্তিতে নির্বাচনী আইন সংশোধন করতে হবে।’
সে ক্ষেত্রে সংবিধান সংস্কারের পর নির্বাচনব্যবস্থা ও পদ্ধতির পরিবর্তন এলে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনকে সেই আলোকে ৩১ ডিসেম্বরের পর নতুন আরো কিছু বিষয়ে সুপারিশ করতে হবে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন। সূত্র: কালের কণ্ঠ