শনিবার , ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ | ২৫শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

জঙ্গিদের কোনো মানবাধিকার নেই: আইজিপি

Paris
সেপ্টেম্বর ৩, ২০১৬ ২:৪৪ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

জঙ্গিদের জন্যে কোনো মানবাধিকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হক। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ শনিবার দুপুরে পুলিশ লাইন মাঠে কমিউনিটি পুলিশিং এবং জঙ্গিবাদ বিরোধী মহাসমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।

আইজিপি বলেন, কল্যানপুর ও নারায়নগঞ্জে আমরা জঙ্গিদের অনেক সময় দিয়েছি। কিন্তু তারা আত্মসমর্থন করেনি। উল্টো পুলিশকে বোমা মেরেছে, গুলি মেরেছে। যারা জঙ্গিদের মানবাধিকারের কথা বলেন, জঙ্গিদের আবার কীসের মানবাধিকার। আগে দেশকে বাঁচাতে হবে, জনগণকে বাঁচাতে হবে। তারপর রাজনীতি, দেশের স্বার্থেই রাজনীতি। সব বিষয়ে বিরোধীতা করলে হবে না।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে একেএম শহীদুল হক আরো বলেন, জঙ্গিরা দেশের অগ্রগতিতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে, তারা সফল হবে না, আমরা জনগণের সমর্থন পাচ্ছি। এই দেশকে জঙ্গিদের দেশ করতে দিব না, দেশকে অকার্যকর করতে দেওয়া হবে না। এই দেশকে নিরাপদ, উন্নত বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলবো।

বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর প্রধান শহীদুল হক বলেন, জঙ্গিরা ইসলামের অপব্যাখা দিয়ে জান্নাতের প্রলোভন  দেখিয়ে তরুণদের বিপথে নিয়ে যাচ্ছে। মুসলমান হয়ে আরেক মুসলমানকে হত্যা করছে। হত্যার ধর্ম ইসলাম হতে পারে না। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ইসলামকে রক্ষা করতে হবে। পাড়ায়-মহল্লায় জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে হবে। প্রত্যেকটা এলাকায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আপনারা চোখ কান খোলা রাখবেন, কার কথায়, কার চলাফেলায় জঙ্গিবাদী আচরণ লক্ষ্য করা যায়, যদি পারেন আপনারা তাদের সঠিক পথে আনবেন, না হয় আইন শৃঙ্খলাবাহিনীকে জানাবেন।
বিপথগামী তরুণদের জঙ্গিবাদের পথ থেকে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়ে আইজিপি শহীদুল হক বলেন, যারা ভুলবসত জঙ্গি সংগঠনের সাথে যোগাদান করেছেন, কিন্তু এখনো কোনো অপরাধ করেননি, হত্যাকাণ্ড ঘটাননি, এসব ব্যক্তিদের যদি সুবুদ্ধির উদয় হয়, তাহলে দয়া করে নিজ পরিবারে কাছে চলে আসেন, সমাজে চলে আসেন, সঠিক পথে চলে আসেন।

পুলিশ প্রশাসন আপনাদের সব ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা করবে, আপনাদের হয়রানি করবে না। আর যদি অপরাধ করে থাকেন, হত্যা করে থাকেন, তাহলে দেশের প্রচলিত আইনের বিচার হবে, এর বেশি কিছু হবে না। সেই নিশ্চিয়তা আমি দিলাম। আমি আশা করবো, আপনারা যারা বিপথগামী তরুণ, যুবক, দয়া করে সঠিক পথে চলে আসেন। আপনাদের বাবা-মা কেমন আছেন বুঝতেই পারছেন। গুলশানে যারা মারা গেছে, তাদের বাবা-মা বুকের ব্যাথায় কাতরাচ্ছেন, তবুও লাশ গ্রহণ করেনি, ঘৃনাভরে প্রত্যাখান করেছে।
আইজিপি আরো বলেন, বুঝতে হবে, এই দেশের লোক ধর্মপ্রাণ লোক, বাংলার লোক জঙ্গি-মৌলবাদ পছন্দ করে না।  যদি আপনারা বলেন, এই বাংলায় মুসলমানের সংখ্যা বেশি, জঙ্গিদের ঊর্বর ক্ষেত্র, তাহলে আহম্মক হিসেবে বাস করছেন। এই দেশে জঙ্গিদের ঊর্বর ক্ষেত্র নয়, জঙ্গিবাদের স্থান বাংলার মাটিতে হবে না।
পুলিশ প্রধান একেএম শহীদুল হক বলেন, জঙ্গিদমনে পুলিশের সাফল্য যচেষ্ট। গুলশান ও শোলাকিয়ায় পুলিশের অভিযানে শতভাগ সচ্ছতা ছিল। শতভাগ সাফল্য ছিল। একটি মহল পুলিশের এই সাফল্যকে বির্তকিত করতে বিভিন্ন কথা বলছে। আমরা জনগণকে সাথে নিয়ে কাজ করছি।
পুলিশ মহাপরিদর্শক বলেন, জঙ্গিদের গ্রেপ্তার করা সহজ বিষয় না। তারা আত্মঘাতী, তারা মেন্ট্রালি মৃত্যুর জন্য প্রস্তত থাকে। তারা নিজেরা বলে, আমরা মরবো, জান্নাতে যাব, যাদের মারবো, তারা জাহান্নামে যাবে। তারা কখনো আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে নিজেকে ধরা দিতে চান না। ওর (জঙ্গি) কাছে বোমা আছে, ওর আগ্নেয়াস্ত্র আছে, ধারালো অস্ত্র আছে, তাকে চুমা দিয়ে, আদর দিয়ে তো গ্রেপ্তার করা যায় না।
পৃথিবীর কোনো দেশ জঙ্গিদের গ্রেপ্তার করে না উল্লেখ করে আইজিপি শহীদুল হক বলেন, আল-কায়দা নেতা লাদেনকে কত বছর চেষ্টার পর আমেরিকা পাকিস্তান থেকে গ্রেপ্তার করলো, তাকে জীবিত রেখেছে? যাওয়ার পথে মেরে সমুদ্রে ফেলে গেছে। এমন একটা প্রমাণ দেখান যে জঙ্গিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সম্ভব না জঙ্গিদের গ্রেপ্তার করা, তাদের গ্রেপ্তার করতে গেলে নিজেদের মরতে হবে। যারা পুলিশের সাফল্য সম্পর্কে বির্তকিত মন্তব্য করছেন, তাদের সুবুদ্ধির উদয় হোক। আমাদের পুলিশের সাফল্য পৃথিবীতে রোল মডেল হিসেবে নেওয়া যেতে পারে বলে আমি মনে করি।
পুলিশ মহাপরিদর্শক বলেন, পুলিশের স্বল্পতার কারণে কমিউনিটি পুলিশিং বিষয়টি এমন নয়। পুলিশের সাথে জনগণের সম্পৃক্ততার জন্যই কমিউনিটি পুলিশিং। পুলিশের গাফিলতি থাকলেও কমিউনিটি পুলিশিং টিকিয়ে রাখতে হবে।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের কমিশনার শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি খোরশেদ হোসেন, র‌্যাব-৫ এর অধিনায়ক লে.কর্নেল মাহবুব আলম, রাজশাহীর বিজিবির ব্যাটালিয়ন ১ এর পরিচালক লে. কর্নেল শাহাজাহান সিরাজ, রাজশাহী জেলা প্রশাসক কাজী আশরাফ উদ্দিন, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল হান্নান, রাজশাহী মহানগর কমিউনিটি পুলিশিং এর আহ্বায়ক প্রফেসর আব্দুল খালেক, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ প্রমুখ।
এরআগে সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও থানা থেকে খন্ড খন্ডভাবে মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে জড়ো হন কমিউনিটি পুলিশের সদস্যরা। দুপুরের মধ্যে সমাবেশস্থল প্রায় সহস্রাধিক মানুষের সমাগমে পরিণত হয়।

 

স/আ

সর্বশেষ - রাজশাহীর খবর