সি্কিসিটিনিউজ ডেস্ক:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে আগুন সন্ত্রাসীদের বিচারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, আন্দোলনের নামে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে হত্যাকারী এবং তাদের হুকুমের আসামিদেরও বিচারের সম্মুখীন করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার রাতে স্থানীয় গ্রান্ড হায়াৎ হোটেলে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ প্রদত্ত নাগরিক সংবর্ধনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে, যুদ্ধাপরাধীদের হত্যার বিচার চলছে, কাজেই আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার স্বার্থে সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার আমরা করব। আগুন সন্ত্রাসীদেরও বিচার বাংলার মাটিতে হবে।’
হুকুমের আসামি হিসেবে খালেদা জিয়াকেও একদিন বাংলার মাটিতে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, কোনো রাজনীতিবিদ ভুল করলে তার ভুলের খেসারত কে দেবে। ট্রেন যদি চলে যায় তাহলে পরের ট্রেনের জন্য তো অপেক্ষা করতেই হবে।
তিনি বলেন, এখন তারা (বিএনপি) আবার রাজনীতিতে স্পেস চায়। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে টানা ৯২ দিনের আন্দোলনের নামে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা, মানুষের জানমালের ক্ষতির জন্য যদি দেশীয় আইনে কারো বিরুদ্ধে মামলা হয়, তো হতেই পারে। তাকে রাজনৈতিক মামলা বলা যায় কি-প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসলে স্পেস নয়, কৃত অপরাধের জন্য তাদের জেলে যাওয়া উচিত। তখন অ্যারেষ্ট করা হয়নি সেটাই তার ভাগ্য (খালেদা জিয়ার)। তবে, একদিন এই অপরাধে খালেদা জিয়ার বিচারও বাংলার মাটিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় প্রবাসীদেরকে দেশের বিরুদ্ধে বিরোধী মহলের অপপ্রচার সম্পর্কে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘যে যেই স্থানেই থাকেন সেখানকার জনপ্রতিনিধিদের কাছে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের বাস্তব চিত্রটা তুলে ধরবেন। এটা করার জন্য আমি আপনাদের সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। তাহলে আর কেউ আমাদের দেশ সম্পর্কে ভুল তথ্য দিয়ে আর দেশের ভাবমূর্তিকে সংকটে ফেলতে পারবে না।’
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুসহ তাঁর পরিবারের শহীদদের, মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধসহ দেশের সব গণ আন্দোলনে শহীদ এবং যুক্তরাষ্ট্রে নাইন ইলেভেনে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এর পরেই স্থানীয় শিল্পীদের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে সবাই একযোগে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশে এবং যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সংগীতে কণ্ঠ মেলান।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭১ তম অধিবেশনে বক্তৃতা শেষে প্রধানমন্ত্রী এই নাগরিক সংবর্ধনায় যোগ দেন। এই সংবর্ধনায় যোগ দিতে নিউ ইয়র্কের বাইরে ও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকে হাজারো আওয়ামী লীগের সমর্থক ও নেতা-কর্মীরা সংবর্ধনাস্থল গ্রান্ড হায়াতে ভিড় করেন।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এক নজর দেখার জন্য সংবর্ধনা স্থলের বাইরেও অন্তত আড়াই থেকে তিন হাজার নেতা-কর্মী সমর্থক গভীর রাত পর্যন্ত অপেক্ষমান ছিলেন।
সূত্র: এনটিভি