নিজস্ব প্রতিবেদক:
তখন নিস্তব্ধ রাত। প্রকৃতি যেন নিরব অবস্থায় রাত্রি জাপন করছে। যেন ব্যস্ততম নগরীও নিরব হয়ে আছে। একটি মাত্র সুতায় বাঁধা পরিবারের চারটি জীবন। পরে আছে একই ঘরের দুটি খাটে। হঠাৎ বিকট শব্দ। কিছু বুঝে ওঠার আগেই এক ছোবলে কেড়ে নিলো দু’টি জীবন। অল্পের জন্য বেঁচে যায় তাদের স্নেহের দু’টি সন্তান আলিফ ও রাহাত।
বলছিলাম রাজশাহী নগরীর বহরমপুর রেলক্রসিং এলাকার ভ্যান চালক বশিরের বাড়ির কথা। মঙ্গলবার রাতে বেপরোয়া বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়ে বশির ও তার স্ত্রী রেশমা নিহত হন।
সামনে পরে আছে বাবা মার নিথর দেহ। ছেলে দু’টির কান্নায় যেন বাতাস ভাড়ি হয়ে গেছে। আশে পাপশের মানুষ তাদের কান্না আর আহজারিতে ছুটে আসে। আর বাসের ভেতরে যাত্রীদের চিৎকার আর আহজারি। কোন মতে বাস থেকে যাত্রীরা নেমে ধ্বংসস্তুপের মধ্য থেকে শিশু দুটিকে বের করে। তার আগেই তাদের মা বাবা না ফেরার দেশে চলে গেছে। যে একটি দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্নায় পরিণত হলো।
‘মা বাবা ঘর বাড়ি কিছুই নাই। কেউ রইলো না তাদের দু’জনের। এই শিশু দুটি এখন কোথায় যাবে আর কাছে থাকবে। তাদের বেঁচে থাকার জন্য এখন ক্ষতিপূরণ চাই। এটি না করলে তাদের আর দেখার কেউ থাকবে না। কিন্তু এই দুই শিশু সন্তানের কি হবে? কে নিবে তাদের দায়িত্ব নেবে।’
বুধবার বহরমপুর রেলক্রসিং এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত রেশমার বোন শিল্পী খাতুন সিল্কসিটি নিউজকে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বশিরের পুরো বাড়ি মিলে একটি ঘর। তাতে আবার টিনের ছাউনি। সে মানুষের বাড়ি পরিবর্তন করার কাজ করে। তিনি মানুষের সংসার এক স্থান থেকে আরেক স্থানে সরানোর কাজ করেন। কিস্তু আজ তারই সংসার চিরদিনের জন্য সরে গেলো।’
স্থানীয়রা আরো বলছেন, ওই ঘটনায় পাশের আরো তিনটি ঘর ভেগে চুরমার হয়ে যায়। এর একটি ছিল ক্লাব ঘর এবং একটি ছিল রেলওয়ের গেটম্যানে দিপু এবং তার স্ত্রী চাম্পার বসবাসের ঘর।
ওই ঘটনায় ক্লাব ঘরে শুয়ে থাকে গেটম্যান দিপু (৪০) ও তার স্ত্রী চাম্পা খাতুন (৩৫) এবং ক্লাব ঘরে শুয়ে থাকা মানিক (১৬) ও জাকিরসহ (১৯) অন্তত ১৫ জন বাসযাত্রীও আহত হন।
স/আ