নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহীতে লাইভ চলাকালে দুই সাংবাদিকের ওপর হামলার অংশ নেওয়া বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) কার্যালয়ের এক কর্মচারীর পদোন্নতি হয়েছে। এই কর্মচারীর নাম মো. সেলিম রেজা। তিনি সাংবাদিকের করা মামলায় এজাহারভুক্ত তিন নম্বর আসামি। গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিএমডিএর সচিব শরিফ আহম্মেদ এই আদেশে সই করেন। একদিন পর এটি বিএমডিএর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
বিএমডিএ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ মার্চ এক অফিস আদেশে মোট ৩১ জনের পদোন্নতি দেওয়া হয়। এর মধ্যে তালিকার ১৪ নম্বরে আছেন সাংবাদিকদের ওপর হামলা মামলার আসামি সেলিম রেজার নাম। বিএমডিএর সদর দপ্তরের অফিস সহায়ক থেকে তাঁকে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। তিনি সাংবাদিক পেটানোর মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। বিএমডিএর নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রশীদের দপ্তরের অফিস সহায়ক ছিলেন তিনি। এ মামলার প্রধান আসামি নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রশীদ।
মামলার বাদী ও এটিএন নিউজের রাজশাহী প্রতিনিধি বুলবুল হাবিব বলেন, তাঁর নিজেরই বোধগম্য হচ্ছে না, একজন ফৌজদারি মামলার আসামি কীভাবে পদোন্নতি পায়? তাঁরা কী আইনের উর্ধ্বে? একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান কী ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা ও জবাবদিহিহীনতার মধ্যে থাকলে এমনটি ঘটতে পারে।
রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, একজন ফৌজদারী মামলার আসামিকে পদোন্নতি দিয়ে বিএমডিএ আইনকে বৃদ্দাঙ্গলি দেখিয়েছে। তাঁরা কোনো কিছুইকেই তোয়াক্কা করছে না। খুব শীঘ্রই রাজশাহীর সাংবাদিকদের নিয়ে তাঁরা কর্মসূচি হিসেবে তাঁরা বিএমডিএ ঘেরাও করবেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও রাজপাড়া থানার উপপুলিশ পরিদর্শক কাজল কুমার নন্দী বলেন, ইতিমধ্যে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছেন তাঁরা। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ তৎপর আছে। তার মধ্যে সেলিম রেজাও আছে।
এ বিষয়ে জানতে বিএমডিএর সচিব শরিফ আহম্মেদ বলেন, এটা বিএমডিএর বোর্ড ডিরেক্টরে আগে থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া ছিল। তিনি সচিব হিসেবে শুধু স্বাক্ষর করেছেন। পদোন্নতি পাওয়া ব্যক্তির বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। বিজ্ঞ আদালত যে আদেশ দেন, সেই মোতাবেক পরবর্তীতে তা পালন করা হবে।
৫ সেপ্টেম্বর সকালে রাজশাহীর বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) কার্যালয় থেকে টেলিভিশন লাইভ চলাকালে এটিএন নিউজের রাজশাহী প্রতিনিধি বুলবুল হাবিব ও ক্যামেরাপারসন রুবেল ইসলামের ওপর হামলা করা হয়।
এ ঘটনায় ওই রাতেই বিএমডিএর নির্বাহী পরিচালক মো. আবদুর রশীদসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে এবং ৮ থেকে ১০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে নগরের রাজপাড়া থানায় মামলা করেন বুলবুল হাবিব। সাংবাদিকদের আন্দোলনের মধ্যে ১৪ দিনের মাথায় ওই মামলায় ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে বিএমডিএর ভান্ডাররক্ষক মো. জীবন ও গাড়িচালক আবদুস সবুরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা মামলার ২ ও ৭ নম্বর আসামি। বর্তমানে তাঁরা কারাগারে আছেন।
এদিকে মামলার প্রধান আসামিসহ অন্যদের গ্রেপ্তার না করায় সাংবাদিকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছেন। এ জন্য তাঁরা বিভিন্ন কর্মসূচিও পালন করে আসছেন।
স/আর