রবিবার , ১৮ আগস্ট ২০২৪ | ৪ঠা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

এখনও ফিরেনি কাশিমপুর জেল থেকে পালানো ২০৩ আসামি

Paris
আগস্ট ১৮, ২০২৪ ৪:৩৬ অপরাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া ২০৩ জন আসামির কেউই এখনও কারাগারে ফিরে আসেনি। তাদের গ্রেপ্তারও করা যায়নি। রোববার দুপুর পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতারও করতে পারেনি। এছাড়া পালিয়ে যাওয়া আসামিদের ফিরিয়ে আনতে কারা কর্তৃপক্ষেরও তেমন কোনো তৎপরতা নেই। তবে এ ঘটনায় জেলার মো. লুৎফর রহমান বাদি হয়ে কোনাবাড়ি থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে গত ৬ আগস্ট বিদ্রোহ করে গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগার থেকে বৈদ্যুতিক পোল দিয়ে মই বানিয়ে ২০৩ বন্দি পালিয়ে যান। এ সময় কারারক্ষীদের গুলিতে ৬ আসামির মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে সেনা সদস্যরা কারাগারে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। কারাগারের নিরাপত্তায় সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা এখন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করছেন।

এদিকে পালিয়ে যাওয়া আসামিদের নাম পরিচয় ঠিকানা এবং ছবিসহ সমস্ত তালিকা পুলিশের কাছে দেওয়া আছে। পুলিশি তৎপরতা শুরু হলে আসামিদের গ্রেপ্তারের কার্যক্রম চলবে বলে জানিয়েছেন গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম।

কারারক্ষীদের গুলিতে নিহত আসামিরা হলেন- রাধেশ্যাম হরিজন, আফজাল হোসেন, আসলাম হোসেন ওরফে র‌্যাশ, স্বপন শেখ, ইমতিয়াজ পাভেল ও মো. জিন্নাহ। তাদের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, ৬ আগষ্ট কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে অবস্থানরত বিভিন্ন ধরনের দুর্র্ধষ বন্দি দাঙ্গা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। বিশৃঙ্খলা ও দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণে কারা বিধি অনুযায়ী প্রথমে সতর্ক করা হলেও তারা দাঙ্গা হাঙ্গামা চালিয়ে ২৫-৩০ কারারক্ষীকে গুরুতর আহত করে। এক পর্যায়ে তারা কারাগারের দেয়াল ভেঙে ফেলে এবং বৈদ্যুতিক পোল উপড়ে ফেলে মই বানিয়ে কারাগারের দেয়াল টপকে ২০৯ জন বন্দি পালিয়ে যায়।

এ সময় বিশৃঙ্খলা ও দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণে কারা বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিলে ৬ জন বন্দি নিহত হয়। ওই ঘটনার একদিন পরই গাজীপুর জেলা কারাগারের বন্দিরাও মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। দুটি কারাগারই বর্তমানে সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তারা কারাগারের সামনে কাটাতার ফেলে এবং সাজোয়া যান নিয়ে সেখানে অবস্থান করছে।

কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারের জেলার মো. লুৎফর রহমান বলেন, কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া ২০৯ জনের মধ্যে ৬ জন গুলিতে মারা যায়। পলাতক আছে ২০৩ জন। এখন পর্যন্ত তাদের কোনো খোঁজা পাওয়া যায়নি বা কেউ ফিরে আসেনি। এ ঘটনায় জিএমপির কোনাবাড়ি থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এদিকে বুধবার সকালে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে গিয়ে দেখা গেছে, কারাগারের মূল ফটকের প্রায় ৩-৪ ফুট দূরে কাটাতার ফেলে রাখা হয়েছে। কাটাতারের সামনে লেখা রয়েছে প্রবেশ নিষেধ। সেখানে বেশ কয়েকজন সেনা সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের সঙ্গে দুজন কারারক্ষীও রয়েছেন। জামিন প্রাপ্তদের বের করে নিয়ে এসে তাদের স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হচ্ছে।

কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর সারা দেশে ১ থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত গ্রেফতার শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তির আদেশ দেওয়া হয়। এর পর থেকেই কারাগারগুলো থেকে তাদের পর্যায়ক্রমে মুক্তি দেওয়া হয়। এ সময় মাদক, জঙ্গি ও হত্যা মামলায় বন্দিরা কারাগারের ভেতরে মুক্তির দাবিতে বিদ্রোহ শুরু করে এবং কারাগার থেকে পালানোর চেষ্টা করে।

এ সময় কারারক্ষীরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। কারাগারের দেয়াল টপকে পালিয়ে যান ২০৩ বন্দি। পালিয়ে যাওয়ার সময় গুলিতে নিহত হন জঙ্গিসহ ৬ জন। পরে সেনাবাহিনীর অল্পসংখ্যক সদস্য তাদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন। এর মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়ে গেলে দুপুর দেড়টার দিকে অতিরিক্ত আরও সেনাসদস্য হেলিকপ্টারযোগে কারা অভ্যন্তরে এসে বন্দিদের নিয়ন্ত্রণ করেন।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, আন্দোলনের সময় গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ি, বাসনসহ বেশ কয়েকটি থানায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে পুলিশের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। কয়েকদিন হয়েছে আমরা পুলিশি কার্যক্রম শুরু করেছি। এখন আমরা পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করব।

তিনি আরও বলেন, পলাতকদের মধ্যে জঙ্গি সদস্য আছে কি না, সেটি এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

গাজীপুর জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম বলেন, কারা কর্তৃপক্ষ পালিয়ে যাওয়া আসামিদের তালিকা পুলিশকে দিয়েছে। পুলিশ সেই তালিকা ধরে কাছ শুরু করবে। পালিয়ে যাওয়া আসামিদের গ্রেফতার করতে পুলিশের তৎপরতা শুরু করার জন্য বলা হয়েছে।

সর্বশেষ - জাতীয়