দেশের অন্যতম প্রধান লিচু উৎপাদন এলাকা হিসেবে পরিচিত পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা। অন্যান্য বছরের মতো এবারও উপজেলায় লিচুর ফলন ভালো হয়েছে। তবে করোনা সংকটের কারণে লিচু বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন চাষিরা। আর এক সপ্তাহ পর বাজারে আসার কথা লিচু। কিন্তু পাইকার নেই বাগান এলাকায়। ফলে এই উপজেলায় উৎপাদিত প্রায় ৫০০ কোটি টাকার লিচু বিক্রি অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
উপজেলার সাহাপুরের লিচুচাষি আলাউদ্দিন বিশ্বাস বলেন, পাঁচ বিঘা জমিতে লিচু বাগান আছে আমার। ফলনও এবার ভালো। কিন্তু ঢাকার কোনো পাইকার এখনও আসছেন না। এই লিচু বিক্রির আয় থেকে পারিবারিক অনেক চাহিদা মেটান চাষিরা। এই অবস্থা থাকলে এবার কোনো কিছু করা সম্ভব হবে না।
এদিকে শনিবার (১৬ মে) দুপুরে চলমান করোনা সংকটে ঈশ্বরদীসহ পাবনা জেলায় উৎপাদিত লিচু ও আম কীভাবে বাজারজাত করা যায় তা নিয়ে কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গ কৃষি বিভাগের জেলা কর্মকর্তারা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মতবিনিময় করেছেন। সভায় পাবনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা অংশ নেন।
সভায় অংশ নেয়া ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল লতিফ বলেন, এবার এই উপজেলায় ৩ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হয়েছে। এ থেকে ফল উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা আছে ৩৪ হাজার মেট্রিক টন। এই পরিমাণ লিচুর বাজার মূল্য প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। কয়েকদিনের মধ্যে গাছ থেকে লিচু নামানো শুরু হবে। এই পরিস্থিতিতে লিচু বিক্রির ব্যবস্থা করতে না পারলে চাষিরা ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।
ঈশ্বরদী উপজেলার দাশুড়িয়া, সলিমপুর, সাহাপুর, লক্ষ্মীকুন্ডা, পাকশীসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের লিচু চাষিরা প্রয়োজনীয় পরিচর্যা শেষ করে এখন বিক্রির অপেক্ষায় রয়েছেন। আর এক সপ্তাহের মধ্যে অধিকাংশ বাগানের লিচু পরিপক্ব হবে।
লিচুচাষি আজগর মল্লিক জানান, এই ফল স্বল্প সময় রাখা যায়। ১৫-২০ দিনের মধ্যে লিচু গাছ থেকে নামাতে হয়। কিন্তু এবার করোনা সংকটে ঢাকাসহ অন্যান্য জেলার পাইকাররা ঈশ্বরদীতে এখনও আসেননি। অন্যান্যবার এর আগেই তারা যোগাযোগ করতেন।
ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল লতিফ বলেন, জেলা কর্মকর্তারা মন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন। আমরা আশা করছি দু-একদিনের মধ্যে এটার সমাধান হবে।
সুত্রঃ জাগো নিউজ