সোমবার , ২৫ জুলাই ২০১৬ | ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

অননুমোদিত প্রতিষ্ঠানের কাগজ কিনছে এনসিটিবি

Paris
জুলাই ২৫, ২০১৬ ৮:৫৩ পূর্বাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

বিনা মূল্যের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণের কাগজ কেনার ক্ষেত্রে সরকারের মান নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ বিএসটিআই’র (বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন) নির্দেশনা অনুসরণ করছে না এনসিটিবি (জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড)। কাগজ কেনার ক্ষেত্রে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের মান নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সনদ আছে কি-না, তা দেখা হচ্ছে না।

 

জানা যায়, মানসংক্রান্ত সনদ থাকার বিষয়টি টেন্ডারের শর্তে রাখাই হয়নি। এ সুযোগেই অননুমোদিত প্রতিষ্ঠানের মানহীন কাগজ কিনতে যাচ্ছে বিএসটিআই, যার খেসারত দিতে হবে দেশের মাধ্যমিক স্তরের প্রায় এক কোটি শিক্ষার্থীকে, যাদের হাতে পৌঁছাবে এই মানহীন কাগজে ছাপা পাঠ্যপুস্তক।

 

লেখা ও ছাপার কাগজের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ মান অনুযায়ী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বিএসটিআই থেকে সিএম (সার্টিফিকেশন মার্কস) লাইসেন্স গ্রহণ বাধ্যতামূলক। সিএম লাইসেন্স গ্রহণ ছাড়া ছাপা ও লেখার কাগজ বিক্রয়, বিতরণ ও বিজ্ঞাপন প্রচার করা বিএসটিআই অর্ডিন্যান্স, ৩৭ (১৯৮৫) ও বিএসটিআই (অ্যামেন্ডমেন্ট) অ্যাক্ট ২০০৩ অনুসারে আইনত নিষিদ্ধ ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ বিধান অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কারাদণ্ড অথবা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রয়েছে। কিন্তু এ আইনের তোয়াক্কা করছে না এনসিটিবি।

 

সরকারের এ প্রতিষ্ঠান আগামী বছরের মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যের বইয়ের কাগজ কেনার জন্য যে দরপত্র আহ্বান করেছে তাতে সিএম লাইসেন্স প্রদর্শনের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করেনি। এ কারণে বিএসটিআইয়ের অনুমোদনহীন প্রতিষ্ঠানও টেন্ডারে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। ভুঁইফোঁড় এসব প্রতিষ্ঠানের কারণে মানসম্পন্ন কাগজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিযোগিতায় টিকতে পারেনি বলে জানা গেছে।

 

এনসিটিবি দীর্ঘদিন থেকে বিএসটিআইয়ের আইন উপেক্ষা করে এসেছে। এ কারণে গুণগত মানসম্মত কাগজ কেনার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য বিএসটিআইয়ের পক্ষ থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের কাছে তাগিদপত্রও পাঠানো হয়েছে। ওই পত্রে বলা হয়েছে, কতিপয় প্রতিষ্ঠান বিএসটিআইয়ের সিএম লাইসেন্স গ্রহণ না করে গুণগত মান যাচাই ব্যতীত অবৈধভাবে লেখা ও ছাপার কাগজ বিক্রয়/বিতরণ করে আসছে মর্মে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। ফলে বাজারে নিম্নমানের লেখা ও ছাপার কাগজের আধিক্য যেমন দেখা যাচ্ছে, পাশাপাশি সরকারও প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ রাজস্ব প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ অবস্থায় শিক্ষা ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠানের জন্য ছাপার কাগজ কেনার ক্ষেত্রে বিএসটিআইয়ের সিএম লাইসেন্স জমাদানের শর্তারোপ করার অনুরোধ জানানো হয়।

 

এনসিটিবি গত মার্চ মাসে মাধ্যমিক স্তরের ২৩ কোটি ৪৪ লাখ ৮২ হাজার পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণের ১৬১ কোটি টাকার কাগজ কেনার জন্য যে টেন্ডার আহ্বান করে তাতে সিএম লাইসেন্স জামাদানের শর্ত আরোপ করেনি। এ সুযোগে বিএসটিআইয়ের সিএম লাইসেন্স গ্রহণ না করা অননুমোদিত প্রতিষ্ঠান কাগজ সরবরাহের জন্য নির্বাচিত হয়েছে। ফলে মানহীন কাগজেই এবার ছাপা হবে পাঠ্যপুস্তক।

 

দেশের প্রায় পাঁচ কোটি শিক্ষার্থীর পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন ও মুদ্রণ হয়ে থাকে এনসিটিবির তত্ত্বাবধানে। প্রাথমিক ও মাদ্রাসার এবতেদায়ির বই মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহ করা হয় আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে। এতে দরদাতা প্রতিষ্ঠানই দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী কাগজ কিনে বই মুদ্রণ করে জেলা পর্যায়ে সরবরাহ করে থাকে। কেবল মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্য বই ছাপা হয় স্থানীয় দরপত্রের মাধ্যমে। এ ক্ষেত্রে এনসিটিবি নিজস্ব উদ্যোগে কাগজ কিনে দরপত্রের মাধ্যমে মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠানকে সরবরাহ করে।

 

প্রাথমিকের বই মুদ্রণের আন্তর্জাতিক দরপত্রের শর্ত অনুসারে দরদাতা প্রতিষ্ঠান কী মানের কাগজ সরবরাহ করবে, তার নমুনা কাগজ জমা দিতে হয়। কিন্তু মাধ্যমিকের কাগজ কেনার ক্ষেত্রে নমুনা কাগজ জমা দেওয়ারও শর্ত আরোপ করা হয়নি। এর ফলে মাধ্যমিকের বই ছাপার ক্ষেত্রে মানসম্পন্ন কাগজ দেওয়া হচ্ছে কি না, তা যাছাইয়েরও আর সুযোগ থাকছে না।

 

কাগজের মান নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি টেন্ডারের শর্তে উল্লেখ না করা প্রসঙ্গে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, মান নিয়ন্ত্রণের লাইসেন্স প্রদর্শনের বিষয় সংক্রান্ত বিএসটিআইয়ের একটি পত্র আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পেয়েছি। কিন্তু এ পত্রটি এসেছে টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর। তাই এবারের কাগজ কেনার ক্ষেত্রে এ শর্ত আরোপ করা যায়নি। তবে ভবিষ্যতে এ বিষয়টি টেন্ডারের শর্ত হিসেবেই উল্লেখ করা হবে।

সূত্র: বাংলা নিউজ

সর্বশেষ - জাতীয়