নিজস্ব প্রতিবেদক:
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ বলেছেন, জুলাই-আগস্টে আহত-নিহতদের তালিকা করা হচ্ছে। একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধাদের বাহক বর্তমান ২৪-এর মুক্তিযোদ্ধারা। একেবারে স্বচ্ছভাবে তালিকা করা হচ্ছে। যার কারণে সময় লাগছে। সময় দিতে হবে। না হলে এক লাখ মুক্তিযোদ্ধা তিন লাখ হয়ে যাবে। এ ঘটনা যাতে না ঘটে, এজন্য সময় দিয়ে তালিকা করা হচ্ছে।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে শিল্পকলা একাডেমী হলরুমে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে জুলাই আগস্টে রংপুর বিভাগের সকল শহীদ পরিবারের মাঝে আর্থিক সহযোগিতার চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা বলেন, স্বাধীনতার পর আমরা ন্যায্যতা পাইনি। একাত্তরের এক লাখ মুক্তিযোদ্ধা ন্যায্যতা পায়নি। তাদের ভেতরে ৯০ ভাগ মুক্তিযোদ্ধাই হলো গ্রামের ছেলেরা। তাদের সেদিন গ্রামে ফিরতে হয়েছে, খালি হাতে-খালি পায়ে। তাদের দেশ গড়ার কাজে লাগানো হয়নি। যা ছিলো অন্যায়। কিন্তু ২৪-এর বেলায় বীর সন্তানদের চিহ্নিত করে মর্যাদা দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, যারা ভাবছেন, আবু সাঈদের গল্প বলে অন্য শহীদদের ভুলে যাচ্ছি। আমরা এটা করছি না। আবু সাঈদ একটা সিম্বল হতে পারে, সে সকলকে প্রতিনিধিত্ব করছে। আমরা আপনাদের সকলের কাছে পৌঁছাতে চাই। এজন্য সময় লাগছে। আমাদের কথায় ও কাজে ভুল হতে পারে, এজন্য আমাদের উপর রাগ করবেন, সমালোচনা করবেন এবং তিরস্কারও করবেন কিন্তু মুখ ফিরিয়ে নিয়েন না। কারণ আমরা অন্তর থেকে আপনাদের পাশে আছি। আমরা ভুল শুধরে এগিয়ে যেতে চাই। জুলাই-আগস্টে নিহত-আহত এবং যারা জয়ী হয়ে জীবন নিয়ে ফিরে এসেছে, তাদের সকলের পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
এদিকে, একই অনুষ্ঠানে মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার বলেন, এই রংপুরের শহীদ আবু সাঈদ সারা বিশ্বকে পরিচিত করিয়ে দিয়েছে সাহসের প্রতীক হিসেবে। আবু সাঈদ বিশ্ববাসীর মধ্যে জাগরণ সৃষ্টি করে দিয়েছিল। সকলে জুলাই আগস্টকে ভুলে গেলেও শহীদ পরিবারগুলোকে কোনোদিন ভুলতে পারবে না। শহীদদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতাকে টিকিয়ে রাখতে হবে বলে তিনি তরুণ সমাজের প্রতি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে রংপুর বিভাগে শহীদ হওয়া ৬৫ জনের মধ্যে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ৪৪ জনের পরিবারকে ৫ লাখ টাকা করে আর্থিক সহায়তার চেক বিতরণ করা হয়। পর্যায়ক্রমে বাকি শহীদ পরিবারের নিকট এ সহায়তা প্রদান করা হবে বলে জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে জাতীয় সংগীত ও জুলাই বিপ্লবে নিহতদের স্মরণে নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় আনুষ্ঠানিকতা। এরপর অনুষ্ঠানে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সিইও মীর মাহবুব আলম স্নিগ্ধের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সারজিস আলম, রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক রবিউল ফয়সাল, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরিফ উদ্দিন, শহীদ সাংবাদিক তাহির জামান প্রিয়র মা শামসি আরা জামান কলিসহ অন্যান্য অতিথিরা।