সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
সমকালের প্রধান শিরোনাম, ‘ভঙ্গুর আইনশৃঙ্খলায় পুলিশের খোলনলচে বদলের উদ্যোগ’।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিগত সরকারের আমলে রাজনৈতিক পরিচয় ও আর্থিক লেনদেনে বদলি ,পদোন্নতি ও নানা ক্ষেত্রে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মত ঘটনায় সমালোচিত হয়েছে পুলিশ।
বার বার এমন অপেশাদার আচরণের কারণে পুলিশ মানুষের আস্থার হারিয়েছে। বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে পেশাদারিত্ব নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।
তবে জুলাই অগাস্ট আন্দোলনে নির্বিচারে অস্ত্র ব্যবহারের কারণে পুনরায় সমালোচনার খাতা খোলে পুলিশ। তারা নতুন অন্তর্র্বতী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরে পুলিশ সংস্কারের ওপর সবচেয়ে বেশি জোর দিয়েছে।
এরিমধ্যে পুলিশ সংস্কার কমিশন কাজ শুরু করেছে। পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট প্রধানের পাশাপাশি বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তার সঙ্গে কমিশনের একাধিক বৈঠক হয়েছে। সেখানে নানা মত উঠে আসছে।
এদিকে ভয়ংকর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করা ও পুলিশের খোলনলচে বদলে যাওয়ার চ্যালেঞ্জ এখন বাহিনীর সামনে।
শেখ হাসিনা পতনের পর পুলিশের ভেতর থেকেও সংস্কারের দাবিদাওয়া সামনে আসে। বলয় মুক্ত হতে হয়ে বদলাতে চায় তারা।
বিশেষজ্ঞদের মতে পুলিশের সংস্কারে তিনটি বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া যেতে পারে। প্রথমত, নিয়োগ বদলি ও পদোন্নতি রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত করা। আর এসব কর্মকাণ্ড তদন্তে স্বতন্ত্র কমিশন গঠন কাজ করবে।
দ্বিতীয়ত, ১৮৬১ সালের উপনিবেশিক পুলিশ আইনের কিছু বিষয়ে পরিবর্তন আনার জরুরি। পুলিশ সংস্কার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এরই মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওয়েবসাইটে ‘কেমন পুলিশ চাই’ এই শিরোনামে জনমত চাওয়া হয়েছে।
প্রথম আলোর প্রধান শিরোনাম, ‘১৫ বছরে বিচার ছাড়াই ১৯২৬ জনকে হত্যা’।প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরে ‘বন্দুকযুদ্ধ’ বা ‘ক্রসফায়ারের’ নামে অন্তত এক হাজার ৯২৬ জন বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে নিহত হওয়ার এই হিসাব বেসরকারি মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক)। তারা এই পরিসংখ্যান তৈরি করেছে সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবর থেকে।
পুলিশ শুরু থেকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এলেও পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) ২০১৫ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সাত বছরের ক্রসফায়ারের তথ্য সংরক্ষণ করেছে।
এতে দেখা যায়, এই সাত বছরেই ‘ক্রসফায়ার’ বা ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন এক হাজার ২৯৩ জন। দেশের এমন কোনো জেলা নেই যেখানে বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনা ঘটেনি। এর মধ্যে অনেক রাজনৈতিক নেতা–কর্মীও রয়েছেন।বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীর পরিবারগুলো মামলা করার সাহস পেত না।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘ক্রসফায়ারের’ মাধ্যমে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে শায়েস্তা করার প্রবণতা শুরু হয় মূলত ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর। এসব ঘটনায় জড়িত কর্মকর্তাদের কেউ কেউ অর্থের বিনিময়ে বা অন্যের দ্বারা প্রভাবিত হয়েও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।
তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, নিহতদের নামের পাশে পরিচয়ের ঘর রয়েছে। তাতে নিহত ব্যক্তিদের ২৩ ধরনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এর মধ্যে বিএনপি ও জামায়াতের নেতা–কর্মীও রয়েছেন।
তবে বেশির ভাগ নামের পাশে ‘সন্ত্রাসী’, ‘দুষ্কৃতকারী’, ‘বন্দুকধারী’ বা ‘অস্ত্রধারী’, ‘মাদক কারবারি’, ‘জলদস্যু’, ‘বনদস্যু’, ‘ডাকাত’, ‘ছিনকাইকারী’, ‘মামলার আসামি’, ‘চরমপন্থী’ ইত্যাদি পরিচয় দেওয়া হয়েছে। অনেক রাজনৈতিক কর্মীকেও এসব পরিচয়ে ক্রসফায়ারে মারা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, নিহত এসব ব্যক্তির অনেকে নানা ধরনের অপরাধে জড়িত বা মামলার আসামি এটা যেমন ঠিক, আবার এসবের সঙ্গে জড়িত নয় এমন ব্যক্তিকেও কোনো না কোনো তকমা দিয়ে ক্রসফায়ারের নামে হত্যা করার অভিযোগ রয়েছে।
কালের কণ্ঠের প্রধান শিরোনাম, ‘বিক্রি কমে ব্যবসা লাটে’।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, সরকার পতনের পর আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণে একদিকে কারখানায় উৎপাদন যেমন কমেছে তেমনি উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে ব্যয় কমাতে বাধ্য হচ্ছে মানুষ। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে বন্যার নেতিবাচক প্রভাব।
এ অবস্থায় খাদ্যপণ্যের পাশাপাশি খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের চাহিদা বেশি কমেছে। এতে এই খাতগুলোর বিক্রি ব্যাপকভাবে কমে যাওয়ায় ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা।
বাজারে নিত্যপণ্যের দামে লাগাম টানতে দফায় দফায় সুদের হার বাড়িয়ে টাকার প্রবাহ কমানোর কৌশল নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ সংকুচিত। ডলারের উচ্চমূল্য ঘি ঢেলেছে বাজারে। অথচ মানুষের আয় বাড়েনি, বরং জিনিসপত্রের বাড়তি দামে তারা প্রায় দিশাহারা।
উন্নয়ন প্রকল্পে স্থবিরতায় কাজ কমেছে সাধারণ মানুষের। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের কারণে জনজীবনে অস্থিরতা, আস্থাহীনতা।
ছোট-বড় সব বিনিয়োগ বা ব্যবসা প্রসারে স্থবিরতা। নিত্য দিনযাপনে মানুষের মধ্যে অস্থিরতার প্রভাব ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান সর্বত্র।
এর ফলে একদিকে যেমন উৎপাদনশীলতায় স্থবিরতা চলছে, তেমনি মানুষেরও ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে। তারা সীমিত করছে কেনাকাটা, যার প্রভাবে বেচাবিক্রিও কমেছে ব্যবসায়।
বিশেষ করে খুচরা বিক্রিতে মন্দা চলছে। ব্যবসার এই ভাটার টানে ক্রমেই দুর্বল হচ্ছে ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তাদের ব্যাবসায়িক সক্ষমতা।
যুগান্তরের প্রধান শিরোনাম, ‘সংবিধান সংশোধন না পুনর্লিখন সিদ্ধান্ত আলোচনার পর’।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, সংবিধান সংশোধন, পুনর্বিন্যাস নাকি পুনর্লিখন হবে-তা রাজনৈতিক দল ও অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে সংবিধান সংস্কার কমিশন।
আগামী সপ্তাহে অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ শুরু হচ্ছে। আর রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত ও প্রস্তাব নিতে আগামীকাল মঙ্গলবার ওয়েবসাইট খোলা হবে।
সংবিধান সংস্কার কমিশন সরাসরি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বসবে না। অন্তর্র্বতী সরকার দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করবে।
আওয়ামী লীগ সমর্থনকারীদের সুপারিশ নেবে না কমিশন। রোববার জাতীয় সংসদের এলডি হলে সংবাদ সম্মেলনে সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ এসব কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম বলেন, এক দফা ঘোষণার পর পুরাতন রাজনীতির সেটেলমেন্ট খারিজ করছি। আমরা নতুন রাজনীতির বন্দোবস্ত চাই। নতুন রাজনীতি বন্দোবস্ত মানে নতুন সংবিধান।
এর উদ্দশ্যে হল: ভবিষ্যতে যে কোনো ধরনের ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থার উত্থান রোধ, রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গ-নির্বাহী বিভাগ, আইনসভা ও বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ ও ক্ষমতার ভারসাম্য আনা, রাষ্ট্রক্ষমতা ও প্রতিষ্ঠানের বিকেন্দ্রীকরণ ও পর্যাপ্ত ক্ষমতায়ন এবং রাষ্ট্রীয়, সাংবিধানিক এবং আইন দ্বারা সৃষ্ট প্রতিষ্ঠানের কার্যকর স্বাধীনতা ও স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিতকরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। সূত্র: বিবিসি বাংলা