সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক :
রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা জোরদার করতে পশ্চিমা মিত্রদের কাছ থেকে পারমাণবিক অস্ত্র চাওয়ার কোনও ইচ্ছা ইউক্রেনের নেই বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) তিনি এই মন্তব্য করেছেন। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
সাংবাদিকদের জেলেনস্কি বলেন, আমরা পারমাণবিক অস্ত্র চাচ্ছি না।
এর কয়েকদিন আগে তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক সম্মেলনে ইউক্রেন হয় ন্যাটো সদস্যপদ বা পারমাণবিক অস্ত্র চাওয়ার কথা বলেছিলেন।
১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে গেলে ইউক্রেন বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডারের অধিকারী হয়ে ওঠে। তিন বছর পর, ১৯৯৪ সালে, দেশটি রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে নিরাপত্তা নিরাপত্তা পাওয়ার শর্তে পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগ করে।
এই নিরাপত্তা নিশ্চয়তা বুদাপেস্ট মেমোরেন্ডাম নামে পরিচিত। এর আওতায় স্বাক্ষরকারী দেশগুলো ইউক্রেনসহ অন্যান্য সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও স্বাধীনতা সম্মান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।
জেলেনস্কি বলেন, আমরা পারমাণবিক অস্ত্র দিয়ে দিয়েছি। ন্যাটো পাইনি। যা পেয়েছি তা হলো পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ এবং অনেক ক্ষয়ক্ষতি। আজ আমাদের জন্য একটাই পথ খোলা।
তিনি আরও বলেন, আমাদের ন্যাটো দরকার, কারণ আমাদের কাছে সেই ধরনের অস্ত্র নেই যা পুতিনকে থামাতে পারে।
গত সপ্তাহে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্মেলনে জেলেনস্কির দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেছিলেন, ইউক্রেনের পারমাণবিক অস্ত্র প্রয়োজন যা আমাদের রক্ষা করবে, অথবা আমাদের কোনও ধরনের জোট প্রয়োজন।
তার এই মন্তব্য মস্কোতে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছিলেন, এটি একটি বিপজ্জনক উস্কানি।
পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে ইউক্রেনের এই বিতর্কপূর্ণ অবস্থান এবং ন্যাটো সদস্যপদের দাবি রাশিয়া ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। ইউক্রেন দীর্ঘদিন ধরে রাশিয়ার সামরিক হুমকি মোকাবিলায় পশ্চিমা সমর্থন ও ন্যাটো সদস্যপদের জন্য চাপ দিয়ে আসছে। যদিও পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দিচ্ছে, তবুও দেশটির পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সংঘাত তীব্র আকার ধারণ করেছে। ইউক্রেন মনে করে, ন্যাটো সদস্যপদ অর্জনের মাধ্যমে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। অন্যদিকে, রাশিয়া ন্যাটো সম্প্রসারণকে তাদের আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে দেখছে।
২০১৪ সালে ক্রিমিয়া অধিগ্রহণ এবং সাম্প্রতিক পূর্ব ইউক্রেন সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে ইউক্রেনের সরকার একাধিকবার তাদের পশ্চিমা মিত্রদের কাছে নিরাপত্তা চুক্তির পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে।
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন