শুক্রবার , ৪ অক্টোবর ২০২৪ | ২২শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

সরকার বদলালেও বদলায়নি বাজারের চিত্র

Paris
অক্টোবর ৪, ২০২৪ ২:৩৮ অপরাহ্ণ

 

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক:

নিত্য পণ্যের বাজারে অস্থিরতা থামছেই না। সপ্তাহ ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে সব ধরনের সবজি, মাছ, মুরগি ও ডিমের দাম বেড়েছে। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর সপ্তাহখানেক দাম কিছুটা সহনীয় থাকলেও নিত্যপণ্যের বাজারে সব পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। শুক্রবার  বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহ ব্যবধানে সব ধরনের সবজি দাম ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। গ্রীষ্মকালীন সবজি কচুরমুখী ৭০ থেকে ৮০ টাকা, বেগুন প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা, করলা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকায়, প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৩০ টাকা, ধুন্দুল ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮০ টাকা, কচুর লতি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, ঝিঙা ৮০ টাকা, শসা ৮০ থেকে ১০০ টাকা এবং কাঁচামরিচ কেজিতে ১৪০ টাকা বেড়ে প্রকারভেদে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারগুলোতে শীতকালীন সবজি সিম ৩০০ টাকা কেজি, ফুলকপি ৬০ থেকে ৭০ টাকা পিস, পাকা টমেটো প্রকারভেদে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, গাজর ১৬০ টাকা, মুলা ৬০ টাকা এবং জলপাই ১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারগুলোতে সপ্তাহ ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজ ১২০ টাকা, আদা ২৮০ টাকা, রসুন ২২০ টাকা এবং আলু কেজি ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে গত সপ্তাহের মতো চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের মুরগি। গত সপ্তাহের তুলনায় ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে ১৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। একই সঙ্গে সোনালি মুরগি ২৭০- ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সোনালি হাইব্রিড ২৫০ টাকা, দেশি মুরগি ৫০০ টাকা, লেয়ার লাল মুরগি ৩১০ টাকা এবং সাদা লেয়ার ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে গরুর মাংস কেজি প্রতি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস কেজি প্রতি ১১৫০-১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বাজারগুলোতে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়, হাঁসের ডিম ২৩০ টাকায়, দেশি মুরগির ডিমের হালি ৯০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

অন্যদিকে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ মাছ। বাজারগুলোতে ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১০০০ থেকে ১১০০ টাকা এবং ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের মাছ ১৩০০ থেকে ১৪০০ টাকা, ১ কেজি ওজনের ইলিশ ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকা এবং দেড় কেজি ওজনের ইলিশ ২২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এসব বাজারে শিং মাছ চাষের (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৪৫০ টাকায়, প্রতি কেজি রুই মাছ ৩৩০ থেকে ৫০০ টাকায়, দেশি মাগুর মাছ ৮০০ থেকে ১১০০ টাকা, মৃগেল ৩২০ থেকে ৪০০ টাকা, চাষের পাঙাস ২০০ থেকে ২২০ টাকায়, চিংড়ি প্রতি কেজি ৭০০ থেকে ১৪০০ টাকায়, বোয়াল মাছ প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায়, কাতল ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়, পোয়া মাছ ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায়, পাবদা মাছ ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়, তেলাপিয়া ২২০ টাকায়, কৈ মাছ ২২০ থেকে ২৩০ টাকায়, মলা ৫৫০ টাকা, টেংরা মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি মাছ ৫০০ টাকায়, পাঁচ মিশালি মাছ ২২০ টাকায়, রূপচাঁদা ১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

ক্রেতাদের অভিযোগ, পূর্বের সরকারের সময় সিন্ডিকেট ও চাঁদাবাজের দোহাই দিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। কিন্তু নতুন সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে অনেকটাই উদাসীন।  বাজার করতে আসা ক্রেতা মতিন মিয়া বলেন, ‘নতুন সরকারের কাছে সবার দাবি ছিল বাজার নিয়ন্ত্রেণে আনার। কিন্তু সেই চিত্র নেই গত দুই মাসেও। আসলে সবাই সমান। গরীবের কথা কেউই ভাবে না।’

মাছ কিনতে আসা উজ্জল বিশ্বাস বলেন, ‘এ বছর পূজার জন্য ইলিশ মাছ কিনতেই পারলাম না। প্রতিবছর পূজার আগে একটা হলেও ইলিশ মাছ কিনি। কিন্তু এ বছর মাছের কাছেও যাওয়া যাচ্ছে না।’

ডিম কিনতে আসা ক্রেতা হালিমা খাতুন বলেন, ‘বাসায় প্রতিদিন অনেক ডিম লাগে। আগে এক ডজন কিনলেও এখন এক হালি কিনতে কষ্ট হয়। ডিম ছাড়াই নাস্তা খেতে হচ্ছে। কেনো এত দাম বাড়ছে বুঝতেই পারছি না।’

জিহাদ তালুকদার নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘সরকার পরিবর্তনের পর কয়েকদিন দাম কিছুটা কমেছিল। কিন্তু বর্তমানে আবারও সেই একই চিত্র। সরকার বদলালেও বদলায়নি বাজারের চিত্র। এখনও বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে ভোক্তাদের পকেট কাটছেন ব্যবসায়ীরা।’

তাদের মতে, শুধু সরকার পরিবর্তন হলেই চলবে না, অতিমুনাফা করার মানসিকতাও পরিবর্তন করতে হবে ব্যবসায়ীদের।

ভোক্তা সংগঠন কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) বলেছে, সরকার ডিম-মুরগির যে দাম বেঁধে দিয়েছে তা ব্যবসায়ীদের মুনাফা বাড়াচ্ছে ঠিকই, ঠকাচ্ছে সাধারণ ভোক্তাদের। এখনো বিগত পদ্ধতিতেই দাম নির্ধারণ করা হচ্ছে, যাতে সরকার বদলালেও বদলায়নি বাজারের সিন্ডিকেট।

 

 

সর্বশেষ - জাতীয়