বুধবার , ২ অক্টোবর ২০২৪ | ২১শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

অর্থনীতি-অভিবাসনসহ নানা বিষয়ে ট্রাম্প-কমলার নীতিগত অবস্থান

Paris
অক্টোবর ২, ২০২৪ ৯:৩৪ অপরাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক :

যুক্তরাষ্ট্রের ভোটাররা দেশটির আসন্ন নির্বাচনে দুই প্রার্থী—ডেমোর্ক্যাকট ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে একজনকে বেছে নেবেন। বিবিসি বুধবার এক প্রতিবেদনে বিভিন্ন বিষয়ে এই দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর অবস্থান ও তাদের নীতির তুলনা করেছে।

অর্থনীতি
কমলা বলেছেন, নির্বাচনে জয়লাভ করে দায়িত্ব নেওয়ার পর তার প্রথম দিনের অগ্রাধিকার হবে কর্মজীবী পরিবারগুলোর খাদ্য ও আবাসনের খরচ কমানো।

তিনি মুনাফা বৃদ্ধি নিষিদ্ধ করার, প্রথমবারের মতো বাড়ি কেনা ক্রেতাদের সহায়তা করার এবং আবাসনের সরবরাহ বাড়াতে প্রণোদনা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

অন্যদিকে ট্রাম্প ‘মুদ্রাস্ফীতি শেষ করার এবং যুক্তরাষ্ট্রকে আবার সাশ্রয়ী করার’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

পাশাপাশি ট্রাম্প সুদের হার কমানোর প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন, যদিও এটি প্রেসিডেন্টের নিয়ন্ত্রণাধীন নয়। এ ছাড়া তিনি দাবি করেন, অবৈধ অভিবাসীদের বহিষ্কার করলে আবাসন খাতে চাপ কমবে।

গর্ভপাত
কমলা তার প্রচারণার কেন্দ্রবিন্দুতে গর্ভপাতের অধিকারকে রেখেছেন এবং সারা দেশে প্রজনন অধিকার প্রতিষ্ঠার আইন প্রণয়নের পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন।

অন্যদিকে ট্রাম্প সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে এই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট বার্তা দিতে লড়াই করছেন। তার প্রেসিডেন্সির সময় সুপ্রিম কোর্টে নিযুক্ত তিন বিচারক ১৯৭৩ সালের রো বনাম ওয়েড নামে পরিচিত রায়ে দেওয়া গর্ভপাতের সাংবিধানিক অধিকার বাতিলের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।

অভিবাসন
কমলা যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্তে সংকটের মূল কারণগুলো মোকাবেলায় কাজ করেছেন এবং উত্তরাঞ্চলে অভিবাসন বন্ধ করতে আঞ্চলিক বিনিয়োগে বিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করতে সহায়তা করেছেন।

২০২৩ সালের শেষে মেক্সিকো থেকে অভিবাসীদের সংখ্যা রেকর্ড পর্যায়ে পৌঁছলেও এ সংখ্যা এর পর থেকে হ্রাস পেয়েছে।

এবার প্রচারণায় তিনি ক্যালিফোর্নিয়ায় তার প্রসিকিউটর হিসেবে মানবপাচারকারীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন।
অন্যদিকে ট্রাম্প সীমান্ত প্রাচীর নির্মাণ সম্পূর্ণ করা এবং প্রয়োগ বাড়ানোর মাধ্যমে সীমান্ত সুরক্ষিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে তিনি রিপাবলিকানদের কমলা সমর্থিত কঠোর সীমান্ত বিল বাদ দিতে আহ্বান জানিয়েছেন।

সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট অবৈধ অভিবাসীদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণবিতারণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যা আইনি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে বলে বিশেষজ্ঞরা বিবিসিকে জানিয়েছেন।

কর
কমলা বড় ব্যবসা ও বছরে চার লাখ ডলার বা তার বেশি উপার্জনকারী আমেরিকানদের ওপর কর বাড়াতে চান।

পাশাপাশি তিনি পরিবারের ওপর করের বোঝা কমাতে একাধিক পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে শিশুকর ছাড়ের সম্প্রসারণ।
অন্যদিকে ট্রাম্প বহু ট্রিলিয়ন ডলারের করছাড়ের প্রস্তাব করেছেন, যার মধ্যে ২০১৭ সালে তার চালু করা করছাড়ের সম্প্রসারণও রয়েছে, যা মূলত ধনীদের সহায়তা করেছে। তিনি এই করছাড়ের ব্যয় উচ্চ প্রবৃদ্ধি ও আমদানি পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের মাধ্যমে পূরণ করবেন বলে জানিয়েছেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, দুজনের কর পরিকল্পনাই বাজেট ঘাটতি আরো বাড়াবে। তবে ট্রাম্পের পরিকল্পনায় ঘাটতি বেশি হবে।

পররাষ্ট্রনীতি
কমলা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ইউক্রেনকে যত দিন প্রয়োজন, তত দিন সমর্থন করবেন। তিনি এ-ও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, নির্বাচিত হলে চীন নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্র একুশ শতকের প্রতিযোগিতায় যে বিজয়ী হয়, তা নিশ্চিত করবেন।

এ ছাড়া কমলা দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে ছিলেন এবং গাজায় যুদ্ধের অবসান চান।

অন্যদিকে ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতি অনেক বেশি বিচ্ছিন্নতাবাদী। তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে বৈশ্বিক সংঘাতে জড়ানো থেকে মুক্ত করতে চান। তিনি বলেছেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করবেন, যা ডেমোর্ক্যাটদের মতে ভ্লাদিমির পুতিনকে সাহস জোগাবে।

এ ছাড়া ট্রাম্প নিজেকে ইসরায়েলের দৃঢ় সমর্থক হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। তবে তিনি গাজায় যুদ্ধের অবসান কিভাবে করবেন, সে সম্পর্কে তেমন কিছু বলেননি।

বাণিজ্য
কমলা আমদানির ওপর ট্রাম্পের ব্যাপক শুল্ক আরোপের পরিকল্পনার সমালোচনা করেছেন। তিনি এ পরিকল্পনাকে শ্রমজীবী পরিবারগুলোর জন্য একটি জাতীয় কর হিসেবে বর্ণনা করেছেন, ফলে প্রতি পরিবারকে বছরে প্রায় চার হাজার ডলার খরচ করতে হবে। তাই তার আমদানির শুল্ক আরোপের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যভিত্তিক পদ্ধতির প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

অন্যদিকে ট্রাম্প তার প্রচারণায় শুল্ককে একটি কেন্দ্রীয় প্রতিশ্রুতি হিসেবে তুলে ধরেছেন। তিনি বেশির ভাগ বিদেশি পণ্যের ওপর নতুন ১০-২০ শতাংশ এবং চীনের পণ্যগুলোর জন্য আরো উচ্চ শুল্ক প্রস্তাব করেছেন।

জলবায়ু
কমলা ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস আইন পাস করতে সাহায্য করেছেন। এতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং বৈদ্যুতিক যানবাহনের জন্য করছাড়ের প্রগ্রামের আওয়ায় শত শত বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ সম্ভব হয়েছে। কিন্তু তিনি পরিবেশবিদদের বিরোধিতা করা গ্যাস ও তেল পুনরুদ্ধারের কৌশল র্ফ্যাকিংয়ের বিরুদ্ধে তার বিরোধিতা প্রত্যাহার করেছেন।

অন্যদিকে ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে থাকার সময় বিদ্যুৎকেন্দ্র ও যানবাহন কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমনের ওপর সীমাসহ শত শত পরিবেশ সুরক্ষা নীতি প্রত্যাহার করেছেন। এবারের প্রচারণায় তিনি আর্কটিকের খনন সম্প্রসারণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং বৈদ্যুতিক গাড়ির বিরুদ্ধে সমালোচনা করেছেন।

স্বাস্থ্যসেবা
কমলা এমন একটি হোয়াইট হাউস প্রশাসনের সদস্য ছিলেন, যা প্রেসক্রিপশনের ওষুধের খরচ কমিয়েছে এবং ইনসুলিনের দাম ৩৫ ডলারে সীমাবদ্ধ করেছে।

অন্যদিকে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে সাশ্রয়ী মূল্যের চিকিৎসা আইনটি বাতিল করার প্রচেষ্টা আর শুরু করবেন না, ফলে কোটি কোটি মানুষের বীমা বেড়েছিল। এ ছাড়া তিনি করদাতাদের অর্থায়নে প্রজনন চিকিৎসার আহ্বান জানিয়েছেন, তবে বিষয়টি কংগ্রেসে রিপাবলিকানদের বিরোধিতার শিকার হতে পারে।

অপরাধ
কমলা প্রসিকিউটর হিসেবে তার অভিজ্ঞতা এবং ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অপরাধের দায়ে দণ্ডিত হওয়ার বিষয়টিকে তুলনা করার চেষ্টা করেছেন।

অন্যদিকে ট্রাম্প মাদকচক্রগুলো ধ্বংস করা, গ্যাং সহিংসতা দমন করা এবং তিনি যেই গণতান্ত্রিক শহরগুলোকে অপরাধ গ্রাস করেছে বলে মনে করেন সেগুলো পুনর্নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

অস্ত্র
কমলা বন্দুক সহিংসতা প্রতিরোধকে একটি মূল প্রতিশ্রুতি হিসেবে রেখেছেন। তিনি ও তার রানিং মেট টিম ওয়ালজ—উভয়ই বন্দুকের মালিক হলেও প্রায়ই কড়া আইন প্রবর্তনের পক্ষে সমর্থন জানিয়ে থাকেন। কিন্তু ব্যাকগ্রাউন্ড যাচাই বাড়ানো বা আক্রমণাত্মক অস্ত্র নিষিদ্ধ করার মতো পদক্ষেপগুলোর জন্য কংগ্রেসের সাহায্য প্রয়োজন হবে।

অন্যদিকে ট্রাম্প দ্বিতীয় সংশোধনীর একজন দৃঢ় সমর্থক হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করেছেন, যা অস্ত্র বহনের সাংবিধানিক অধিকার। মে মাসে ন্যাশনাল রাইফেল অ্যাসোসিয়েশনের উদ্দেশে বলেছিলেন, তিনি তাদের সেরা বন্ধু।

 

সূত্র: কালের কণ্ঠ

সর্বশেষ - আন্তর্জাতিক