সোমবার , ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

সাহাবিদের বর্ণনায় প্রিয় নবী (সা.)-এর দৈহিক অবয়ব

Paris
সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৪ ১২:০৭ অপরাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক :

পূর্ণিমার চাঁদের চেয়েও বেশি সুন্দর ছিলেন আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। চাঁদের মধ্যেও নাকি কালিমা আছে, কিন্তু আমাদের প্রিয় নবীজি (সা.) ছিলেন সব কালিমা ও মলিনতামুক্ত। একনজর তাঁর দিকে তাকালে চোখ ফেরানো যেত না।

প্রিয় নবী (সা.)-এর বিখ্যাত এক সাহাবি জাবের ইবনে সামুরা (রা.) বলেন, ‘আমি একবার পূর্ণিমা রাতে চাঁদের স্নিগ্ধ আলোতে প্রিয় নবীজি (সা.)-কে লাল চাদর ও লুঙ্গি পরিহিত অবস্থায় দেখলাম।

তখন আমি একবার আকাশের জোছনা ছড়ানো চাঁদের দিকে এবং একবার প্রিয় নবীর মোবারক চেহারার দিকে তাকাতে থাকলাম। আমার কাছে মনে হলো—তিনি পূর্ণিমার চাঁদের চেয়েও বেশি সুন্দর। (তিরমিজি, হাদিস : ২৮১১)
চাঁদের চেয়েও সুন্দর তিনি—এই অভিব্যক্তি শুধু জাবের ইবনে সামুরা (রা.)-এর নয়, বরং অমুসলিমরাও অকপটে স্বীকারোক্তি দিয়েছে এ কথার। পূর্ণিমার দ্যুতি ছড়ানো ওই চেহারা দেখে দ্বিধাহীনভাবে তারাও বলে উঠেছে—তিনি কখনো মিথ্যাবাদী হতে পারেন না।

হিজরতের পরের একটি ঘটনা স্মরণীয়। মদিনার বিখ্যাত ইহুদি ধর্মগুরু ছিলেন আবদুল্লাহ ইবনে সালাম। তাঁর কানে খবর পৌঁছল মক্কা থেকে নতুন এক দ্বিনের দাওয়াত নিয়ে মুহাম্মদ নামের এক ব্যক্তি মদিনায় প্রবেশ করেছেন। কৌতূহল চেপে রাখতে না পেরে সবার মতো তিনিও গেলেন নবাগত মানুষটির দরবারে।

প্রিয় নবী (সা.)-এর নুরানি চেহারায় প্রথম নজর পড়তেই তাঁর মন চিৎকার করে বলে উঠল—‘আন্না ওয়াজহাহু লাইসা বি ওয়াজহি কাজ্জাবিন।’ অর্থাৎ এই স্নিগ্ধ সুন্দর সুদর্শন চেহারা কোনো মিথ্যুকের চেহারা হতে পারে না। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৫৫৪)
আমাদের প্রিয় নবীজি (সা.) হলেন গোটা পৃথিবীবাসীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সুন্দর, সুদর্শন এবং সুষম দৈহিক গঠনের অধিকারী। তাঁর প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এমন সুনিপুণভাবে গঠিত, যেন তিনি যেভাবে চেয়েছেন সেভাবেই গঠন করা হয়েছে।

প্রিয় নবীজি (সা.)-এর উচ্চতা

তিনি বেশি লম্বাও ছিলেন না, আবার একেবারে বেটেও ছিলেন না।

তিনি ছিলেন মাঝারি গড়নের। আনাস ইবনে মালিক (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বেশি লম্বাও ছিলেন না, আবার একেবারে বেটেও ছিলেন না। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৯০০)
বারা ইবনে আজিব (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) ছিলেন মধ্যমাকৃতির। তাঁর দুই কাঁধের মধ্যবর্তী অংশ ছিল তুলনামূলক প্রশস্ত।(সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৫৫১)

তিনি মাঝারি গড়নের হলেও যখন সবার সঙ্গে হাঁটতেন তখন তাঁকে সবার মধ্যে সবচেয়ে বেশি লম্বা দেখাত। এটি ছিল মূলত তাঁর মুজিজা। (ফাতহুল বারি : ৬/৫৭১)

প্রিয় নবীজি (সা.)-এর গায়ের রং

প্রিয় নবীজি (সা.)-এর গায়ের রং ছিল লাল-সাদা মেশানো উজ্জ্বল ফর্সা। গোলাপি ধরনের। অনেকটা দুধে আলতা মেশানো রঙের মতো। ধবধবে সাদাও নয় কিংবা তামাটে বর্ণেরও নয়।

আনাস ইবনে মালেক (রা.) বলেন, তাঁর শরীরের রং গোলাপি ধরনের ছিল, ধবধবে সাদাও নয় কিংবা তামাটে বর্ণেরও নয়। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৫৪৭)

প্রিয় নবীজি (সা.)-এর মাথা ও চুল

তাঁর মাথা ছিল সুষম বড়। চুল ছিল ঘন কালো। পুরোপুরি সোজাও নয়, আবার একেবারে কোঁকড়ানোও নয়; বরং ঈষৎ ঢেউ খেলানো। আনাস ইবনে মালেক (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চুল পুরোপুরি সোজাও ছিল না আবার একেবারে কোঁকড়ানোও ছিল না। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৬২৩৫)

বারা ইবনে আজিব (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ঘন চুলগুলো কানের লতি পর্যন্ত লম্বা ছিল। তাঁর দেহে লাল লুঙ্গি ও লাল চাদর শোভা পেত। আমি তাঁর তুলনায় বেশি সুদর্শন অন্য কাউকে কখনো দেখিনি। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২১০; নাসাঈ, হাদিস : ৫২৩২)

প্রিয় নবীজি (সা.)-এর মুখ ও চোখ

জাবির ইবনি সামুরা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মুখ প্রশস্ত ছিল। চোখের শুভ্রতার মধ্যে কিছুটা লালিমা ছিল। পায়ের গোড়ালি স্বল্প মাংসল ছিল। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৬২১৬)

প্রিয় নবীজি (সা.)-এর ঘাম

প্রিয় নবীজি (সা.)-এর শরীরের ঘাম ছিল বিন্দু বিন্দু মুক্তার দানার মতো। যার সুঘ্রাণ মেশক আম্বরকেও হার মানায়। সহিহ মুসলিম শরিফে এসেছে, সাহাবায়ে কিরাম প্রিয় নবীজির ঘাম শিশিতে ভরে রাখতেন আতর হিসেবে ব্যবহার করতে।

প্রিয় নবীজি (সা.)-এর একজন বিখ্যাত সাহাবি, যাকে বলা হয় শায়েরুর রাসুল তথা রাসুলের কবি হাসসান বিন সাবেত (রা.) প্রিয় নবীজির শানে যে অমর কবিতা রচনা করে গেছেন, চৌদ্দ শ বছর পরও তা মুমিন হৃদয়ে মুগ্ধতার ঝড় তুলে দেয়। প্রিয় নবীজির শানে তিনি লিখেছেন—

আপনার চেয়ে সুদর্শন কোনো মানুষ/ আমার চোখ দেখেনি

আপনার চেয়ে সুন্দর কোনো পুরুষ/ জন্ম দেয়নি কোনো নারী

সকল অসুন্দর ও অসংলগ্নতা থেকে/ পবিত্র করে আপনাকে সৃষ্টি করা হয়েছে

যেন আপনি ঠিক তেমনই হয়েছেন/ যেমনটি আপনি চেয়েছেন

 

সূত্র: কালের কণ্ঠ

সর্বশেষ - ধর্ম