সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক
দেশে সাড়ে তিন কোটি বিদ্যুৎ মিটারের মধ্যে পাঁচ লাখে ত্রুটি রয়েছে, যা শতাংশের হিসাবে প্রায় দেড় শতাংশ। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বৈঠকে ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিল, প্রি-পেইড ও পোস্টপেইড মিটারের ত্রুটি নিয়ে সদস্যরা আলোচনা করেন। এ দিকে বৈঠকে কমিটির সদস্য তানভীর শাকিল জয় একটি মিটার নিয়ে আসেন, যাতে সংযোগ ছাড়াই চালু থাকার সংকেত দেখাচ্ছিল।
এ বিষয়ে সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল বলেন, আমি একটি মিটার সংসদীয় কমিটিতে নিয়ে গিয়েছিলাম। সেটাতে সংযোগ ছাড়াও লাল বাতি জ্বলছিল। এটা নিয়ে গ্রাহকের মধ্যে শঙ্কা আছে, সংযোগ না থাকলেও বিল উঠছে বলে তাদের ধারণা। তাই বিষয়টি যাচাই করে ক্লিয়ার করার জন্য বলেছি।
বৈঠকে একাধিক সদস্য গ্রাহক পর্যায়ে ব্যবহারের অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিলের বিষয়ে কথা বলেন। তারা বলেছেন, বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুৎ বিল বেশি আসে। সেটা সংশোধন করতে গেলে গ্রাহকরা হয়রানির শিকার হন। এগুলো বন্ধ করার জন্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়েছে। এ সমস্যা সমাধানে মন্ত্রণালয় কী ব্যবস্থা নিচ্ছে, তা দ্রুত প্রতিবেদন আকারে সংসদীয় কমিটিতে উপস্থাপনের জন্য বলা হয়।
কমিটির সদস্য কানন আরা বেগম বলেন, বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আমাদের বলা হয়, এখনো শতভাগ প্রি-পেইড মিটার হয়নি। সেখানে কিছু ত্রুটি আছে বলে জানায়। এছাড়া আমরা বলেছি, কিছু মিটার বিদ্যুৎ না থাকলেও ঘুরে। আমাদের সদস্য তানভীর শাকিল ওই রকম একটি মিটার বৈঠকে নিয়ে আসেন, যা সংযোগ ছাড়াও চলছে বলে সবাইকে দেখান। আমরা বলেছি, মিটারগুলোর সমস্যা কী, সেগুলোর মানোন্নয়ন ও ব্যবস্থা নিয়ে আগামী বৈঠকে প্রতিবেদন উপস্থাপনের জন্য মন্ত্রণালয়কে বলেছি।
বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সাড়ে ৩ কোটি মিটারের মধ্যে ৫ লাখে ত্রুটি পাওয়া গেছে, যা ১ দশমিক ৫ শতাংশ। তারপরও যে সমস্যাগুলো এসেছে, সেগুলোর প্রতিবেদন আগামী বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে।
সূত্র জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে সামিট গ্রুপের এলএনজি টার্মিনাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে সারা দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ায় লোডশেডিং বেড়েছে বলে কমিটিকে জানায় বিদ্যুৎ বিভাগ। টার্মিনাল মেরামত করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করে আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে দেশের বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলেও জানানো হয়। এছাড়া ডলার সংকটের কারণে জ্বালানি আমদানিতে ব্যাঘাত হচ্ছে বলেও কমিটিকে জানায় বিদ্যুৎ বিভাগ। এ সময় আরও বলা হয়, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনে আসলে দেশের বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান হবে।
বৈঠকে প্রিপেইড মিটারে গ্রাহকের আস্থা অর্জন এবং নিম্নমানের মিটার ক্রয় হয়েছে কিনা, সেটি খতিয়ে দেখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কমিটি মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করে। নবায়নযোগ্য জ্বালানির মধ্যেও পরিবেশবান্ধব বিকল্প মাধ্যম ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি এবং বোর্ডের মধ্যে বিদ্যমান সমস্যা চিহ্নিত করে টেকসই সমাধানের জন্য কমিটি গুরুত্বারোপ করে।
কমিটির সভাপতি জিয়াউর রহমানের সভাপতিত্বে বৈঠকে আরও অংশগ্রহণ করেন কমিটির সদস্য আবু জাহির, সেলিম মাহমুদ, আব্দুর রউফ, ওমর ফারুক।