নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহী নগরীর বিনোদপুর মন্ডলের মোড়ের বিবাদমান জায়গার উপর আদালত থেকে ১৪৫ ধারাজারি করা হয়েছে। নগরীর বিনোদপুর মন্ডলের মোড়ের জমির মালিক আনসার আলী গত রোববার একটি মামলা করলে রাজশাহীর বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক মির্জা ঈমান উদ্দিন মামলাটি আমলে নিয়ে এই জায়গার উপর ১৪৫ ধারাজারি করেন।
বর্তমান জায়গাটি মাসুদ রানা নামে ব্যক্তি দখল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাকে ওই জায়গায় সব ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নিদের্শ দিয়েছে আদালত। এছাড়াও নগরীর মির্জাপুর মোজার ৬৯ দাগের ওই জায়গার দলিল পর্যক্ষেন করে বেরিয়ে এসেছে অনেক তথ্য।
জানা গেছে, ৭৫৪২/৫১ নং দলিল, আর এস খতিয়ানের ১৯, ৬৫, ১৩, ৬৯ ও ৭৪ নং দাগে মোট ২৩ শতক জমি রয়েছে। ৬৯ নং দাগে ১৭ শতক জায়গা রয়েছে। যে জমির মালিক মৃত আয়ুব আলী। এছাড়াও একই দলিলমূলে প্রায় ৫ বিঘা জমি রয়েছে আয়ুব আলী। এক সময় আয়ুব আলী অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি তার ভাতিজাদের জমিটি রেকর্ড করার কথা বলেন।
এই সুযোগে তার ভাতিজা নাজের হোসেন, সাদের আলী ও আশেদা তিনজন মিলে ভুয়া দলিল করে আয়ুব আলীর জমি ১৯৬২ সালে রেকর্ড করে নেন। পরে আয়ুব আলীর ছেলে আনসার আলী বাদি হয়ে গত ১৯৯৭ সালে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালতে মামলা চলমান অবস্থায় থাকার পরও ৬৯নং দাগে তিনকাঠা জমি তিনবার হাত বদল হয়েছে। এছাড়াও আশপাশে আয়ুব আলীর বেশ কিছু জায়গা লোকজন দখল করে আছে।
জানা গেছে, প্রথমে ৬৯ দাগে তিন কাঠা জমি আশেদা বেগম বিক্রি করেন রাবির সনাবেক ভিসি আনিসুর রহমানের কাছে। আনিসুর রহমান জমি কিনে সেখানে স্থায়ী বসবাস করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু এই জায়গার কোনো রাস্তা না থাকা ও জায়গাটির দলিলে ত্রুটি থাকার কারণ তিনি ফাইজুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির কাছে জমিটি বিক্রি করে দেন। ফাইজুল ইসলাম জমিটি কেনার পর তিনিও জানতে পারেন জমিটির দলিল দস্তাবেজে অসংগতি রয়েছে। যার কারণে তিনি আবার বিক্রি করে দেন মাসুদ নামে এক ব্যক্তির কাছে। বর্তমান মাসুদ দখল করে রেখেছে জায়গাটি। মাসুদ ওই জায়গায় থাকা আনসার আলীর রোপন করা গাছগুলো কেটে ফেলেছেন।
মাসুদ রানা জমিটি কিনে রাস্তা না থাকার কারণে তার পাশের ৬৫ ও ৬৮ দাগে আলহাজ নজরুল ইসলামের ব্যক্তি মালিকানায় থাকা পুরোনো প্রাচির ভেঙ্গে রাস্তা বের করার চেষ্টা করছেন। এ নিয়ে নজরুল ইসলামের ছেলে ইশতিয়াক আহমেদ বাদি হয়ে মাসুদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
এদিকে, মাসুদ জমিটি কেনার পর থেকে আনসার আলীর পরিবারকে ভয়ভীতি দেখানো, তাদের রোপন করা গাছ কেটে ফেলাসহ নানা অপতৎপরতা চালাচ্ছেন। এ নিয়ে আনসার আলী গত রোববার আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি আমলে নিয়ে আদালত ওই জায়গার উপর ১৪৫ ধারা জারি করেছেন। কারণ মাসুদ বিবাদমান ওই জায়গাটি কেনার পর থেকে সেখানে নানা অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। যার কারণে আইনশংখলা রক্ষায় আদালত ওই জমির উপর এ জারি করেন। বিষয়টি দেখভালের জন্য আদালত নগরীর মতিহার থানাকে নিদের্শ দিয়েছে।
জানা গেছে, মাসুদ বিবআদমান ওই জমি স্বল্পমূলে কিনেছেন। নামমাত্র টাকায় তিনি জমি কিনে পাশের ৬৫ ও ৬৮ দাগে থাকা রাস্তার সাথে তিনি ৬৯দাগের রাস্তা তৈরি চেষ্টা করছেন। যদিও মাসুদের কেনা ৬৯ দাগের জমির কোনো রাস্তা নেই। যার কারণে নজরুল ইসমলামের প্রাচির ভেঙ্গে সেখানে রাস্তার চেষ্টা করছেন। আর এই রাস্তা তিনি করতে পারলে ওই জমির দাম প্রায় অর্ধকোটি টাকা হবে। এ কারণে স্থানীয় কাউন্সিলরকে হাত করে তিনি এই অপদৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।