সোমবার , ১ জুলাই ২০২৪ | ১০ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

বাঘায় বাবুল হত্যার প্রধান আসামি মেয়র আক্কাছ ১০ দিন থেকে অফিসে অনুপস্থিত

Paris
জুলাই ১, ২০২৪ ৮:২৫ অপরাহ্ণ

বাঘা প্রতিনিধি :
রাজশাহীর বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল হত্যার প্রধান আসামি মেয়র আক্কাছ আলী ১০ দিন থেকে অফিসে অনুপস্থিত রয়েছে।

সোমবার (১ জুলাই) বাঘা পৌর কার্যালয়ে গিয়ে তাকে দেখা যায়নি। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে ২২ জুন সংঘর্ষের পর থেকে তাকে অফিস করতে দেখা যাচ্ছেনা। ফলে পৌরসভার মানুষ সেবা নিতে এসে ফিরে যাচ্ছে।

সংঘর্ষের বাবুল নিহতের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলা দুটিতে নামে ও ও বেনামেসহ আসামী করা হয়েছে ৫২৮ জন। এরমধ্যে একটি মামলা হয়েছে বাঘা থানায় ও আরেকটি হয়েছে রাজশাহীর আদালতে। এ মামলায় ১০ জন আসামী গ্রেফতার হলেও প্রধান আসামী বাঘা পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আক্কাছ আলীকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এরপর থেকে বাবুল হত্যা মামলার আসামীদের গ্রেফতার করে দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে আসছেন আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের নের্তৃবৃন্দ।

জানা গেছে, বাঘায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে ২২ জুন সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের ৫০ জন আহত হয়। এরমধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুলের মাথায় চাইনিম কুড়াল দিয়ে আঘাত করা হয়। তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ২৬ জুন চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। পরদিন ২৭ জুন বাঘা মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজার পর গাওপাড়া গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা আমিরুল ইসলাম আমুর কবরের পাশে তার লাশ দাফন করা হয়।

সংঘর্ষের পর ২৩ জুন উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি ও উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহিনুর রহমান পিন্টু বাদি হয়ে দ্রুত বিচার আইনে বাঘা পৌর মেয়র আক্কাছ আলীকে প্রধান আসামী করে ৪৬ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলায় অজ্ঞাত ২০০-৩০০ জনকে আসামি করে করা হয়েছে। তবে এ মামলাটি ২৬ জুন হত্যা মামলা হিসেবে রেকর্ড হয়েছে বলে জানা গেছে।

তবে এ মামলার দুই নম্বর আসামী পাকুড়িয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেরাজুল ইসলাম মেরাজসহ মারুফ হোসেন, তরঙ্গ আলী, শাজামাল লিটন, নাসির উদ্দিন, মতিউর রহমান, গোলাম মোস্তফা, শফিউর রহমান শফি, রফিকুল ইসলাম, জহুরুল ইসলামকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এরমধ্যে মেরাজ, মারুফ, তরঙ্গ, শাজামাল, নাসির, মতিউর, মোস্তফাকে আদালতে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে ২৭ জুন একদিনের রিমান্ড মুঞ্জুর করে। রিমান্ড শেষে ২৮ জুন তাদের কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

অপর দিকে বাজুবাঘা ইউনিয়নের তেপুকুকুরিয়া গ্রামের আবুল কালাম নামের এক ব্যক্তি বাদি হয়ে ২৭ জুন রাজশাহীর জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১ ও দ্রুত বিচার আদালতে মামলাটি করেন। বাবুল হত্যার মামলার বাদি উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি ও উপজেলা যুব লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহিনুর রহমান পিন্টুকে প্রধান আসামি করে ৩২ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়েছে। এছাড়া আরও ১০০-১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। এ মামলার আইনজীবী জিয়াউর রহমান বলেন, আদালতের বিচারক মো. হাদিউজ্জামান মামলা গ্রহণ করে তা এজাহার হিসাবে রেকর্ড করার জন্য বাঘা থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।

এ বিষয়ে বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলম বলেন, মেয়র আক্কাছ আলী এলাকায় দীর্ঘদিন থেকে সন্ত্রাসী রাজত্ব কায়েম করার চেষ্টা করে আসছিল। সে কখনো আওয়ামী লীগের মূল ধারার রাজনীতি করে না। সে সন্ত্রাসীদের নিয়ে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করতে চায়। এর প্রতিবাদ করতে গিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুলকে জীবন দিতে হলো। বাবুলের মৃত্যুতে তার বৃদ্ধ মা, স্ত্রীম সন্তানরা একা হয়ে গেলো। এর সঠিক বিচার দাবি করছি।

শাহরিয়ার আলম আরও বলেন, আক্কাসের সাথে উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাড, লায়েব উদ্দিন লাভলু, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোকাদ্দেস আলী, পাকুড়িয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মেরাজুল ইসলাম মেরাজ রয়েছে। তাদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের কাঠ গড়ায় আনার দাবি জানাচ্ছি। এছাড়া যারা বাবুল হত্যার মদদ দিয়েছেন সুষ্ট তদন্ত করে তাদেরও বিচার দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে বাঘা থানার তদন্ত (ওসি) ও বাবুল হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সোয়েব খান বলেন, বাবুল হত্যা মামলায় ৭ জনকে গ্রেফতার করে একদিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। তবে আবুল কালাম নামের এক ব্যক্তি আরেকটি মামলা দায়ের করেছেন। এ মামলাটিও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, এমপি শাহরিয়ার আলম ও বাঘা পৌর মেয়র আক্কাছ আলীর মধ্যে দীর্ঘদিন থেকে দ্বন্দ্বের জের ধরে ২২ জুন সংঘর্ষে এমপি শাহরিয়ার আলমের অনুসারী ২৬ জুন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাবুল মারা যান।

সর্বশেষ - রাজশাহীর খবর