বাঘা প্রতিনিধি :
নেশাগ্রস্থ স্বামীর ছুরিকাঘাতে নিহত স্ত্রী রিনা বেগম (৩২) এর লাশ দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। আজ রোববার (২ জুন) এশার নামাজ পরে আড়ানী কেন্দ্রীয় কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
রোববার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ঈশ্বরদী ইপিজেড গেট এলাকায় স্বামী মিলন হোসেনের ছুরিকাঘাতে স্ত্রী রিনা বেগম নিহত হন। রিনা বেগম রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী পৌরসভার চকসিংগা গ্রামের আকবর আলীর মেয়ে। স্বামী মিলন হোসেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের বাসুনিয়া পট্রির শুকুর আলীর ছেলে।
জানা গেছে, ২০ বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের দেড় বছরের মধ্যে রিনা বেগমের গর্ভে সন্তান আসে। তিন মাসের গর্ভের সন্তানকে রেখে স্বামী মিলন বাড়ি থেকে চলে যায়। দীর্ঘ ৭ বছর পর স্ত্রীর কাছে ফিরে আসে মিলন। তাদের বিয়ের ১৩ বছরের সময়ে ব্যাপক নির্যাতন শুরু করে। এরমধ্যে তাদের মধ্যে ডির্ভোস হয়ে যায়। ২০২১ সালে আবারও ফিরে এসে পূনরায় বিয়ে করে মিলন। সংসারে অভাব অনটেনের মধ্যে রিনা বেগম ঈশ্বরদী ইপিজেডের রেনেসাঁ কোম্পানিতে চাকরি নেয়। স্বামী নেশাগ্রস্থ হওয়ায় টাকা চাই। এ টাকা দিতে না পারলে র্নিযাতন করা হয়।
রোববার সকালে রিনা বেগম কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য ভাড়া বাড়ি থেকে বের হন। রিনা ইপিজেড গেট এলাকায় পৌঁছলে স্বামী মিলন হোসেন তার পথরোধ করে ছুরিকাঘাত করলে ঘটনাস্থলে নিহত হন। পরে নিহতের স্বামী মিলনকে পুলিশ আটক করে।
রিনা বেগমের মা কল্পনা বেগম বলেন, পিতার কাছে থেকে মিলন হোসেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছোট বেলায় এসে চারঘাট উপজেলার নিমপাড়া ইউনিয়নের কালুহাটি মধ্যপাড়া গ্রামের নানা বিশু প্রামানিকের কাছে বড় হন। সেখান থেকে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়।
স্বামী নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে একবার তাদের মধ্যে ডিভোর্স হয়েছিল। হাত পা ধরে তারা আবার সংসার শুরু করে। এরপরও আমার মেয়েকে বাচতে দিলনা মিলন। আমি তার ফাঁসি চাই। বর্তমানে রিনা-মিলন দম্পতির ১৬ বছরের জুয়ায়ের হোসেন নামে একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।
জুয়াবের হোসেন স্থানীয় নবম শ্রেণির ছাত্র। রিনার স্বামী সন্তান ছাড়াও বৃদ্ধ মা, বাবা, তিন বোন ও এক ভাই রয়েছে। এশার নামাজ পর তার জানাজায় রেনেসাঁ কোম্পানির মালিক সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের এমপি অংশ গ্রহণ করে শোক সপ্তন্তক পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
এ বিষয়ে ঈশ্বরদী থানার তদন্ত ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। ময়না তদন্ত শেষে লাশ পরিবার নিয়ে গিয়ে পারিবারিকভাবে দাফন করেন। এ বিষয়ে একটি মামলা হয়েছে। আটক মিলন হোসেনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।