নিজস্ব প্রতিবেদক, নাটোর:
আর্ন্তজার্তিক নারী দিবসেও বাল্য বিয়ে থেকে রক্ষা পেল না দশম শ্রেনীর ছাত্রী রিমা খাতুন (১৫)। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশ অমান্য করে রাতের অন্ধকারে প্রধান শিক্ষকের উপস্থিতিতে বিয়ে পড়ান মাদ্রাসার পিয়ন। বুধবার ভোরে নাটোরের লালপুরের চাঁদপুর গ্রামে বাল্য বিয়ের এই ঘটনাটি ঘটেছে।
জানা গেছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নাটোরের লালপুরের কদিমচিলান ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের ইন্তা শেখের মেয়ে ও চাঁদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীতে পড়ুয়া রিমা খাতুনের সাথে একই এলাকার মোজাহার মোল্লার ছেলে মহিবুল মোল্লার (১৮) বিয়ের আয়োজন করে উভয়েল পরিবার। এই বিয়ে কথা দুদিন আগেই এলাকায় চাউর হয় বটে। বাল্যবিয়ে ঠেকাতে স্থানীয় কেউএকজন বাল্য বিয়ের বিষয়টি চেয়ারম্যান ও ইউএনওকে মোবাইলে জানান। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম মোবাইলে বিষয়টি অবগত হয়ে কদিমচিলান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম রেজা মাষ্টারকে বিয়ে বন্ধ করতে নির্দেশ দেন।
কিন্তু চেয়ারম্যান সেলিম রেজা তার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে অবহেলা করায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বরপক্ষ কনের বাড়ীতে হাজির হলে স্থানীয় জনৈক ব্যক্তি পুনরায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে মোবাইলে অবহিত করেন। পরে তিনি পুনরায় চেয়ারম্যানকে বিয়ে বন্ধের আদেশ দিলে চেয়ারম্যান তৎক্ষনাৎ বিয়ে বন্ধ করেন। কিন্তু চেয়ারম্যানের এই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। বুধবার ভোর ৪টার দিকে পার্শ্ববর্তী পুকুর পাড়া গ্রামে ছেলের ফুফুর বাড়ীতে চাদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজমল হোসাইন মাস্টার ও বর-কনের পরিবারের উপস্থিতিতে রিমা ও মহিবুলের বিয়ে পড়ান পাশ্ববর্তী ধানাইদহ ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার পিয়ন সিদ্দিকুর রহমান।
চাঁদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজমল হোসাইন মাস্টারের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি এব্যাপারে কিছুই জানেন না।
কদিমচিলান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম রেজা মাস্টার জানান, বিয়ের বন্ধ করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু রাতের অন্ধকারে বিয়ের ঘটনা ঘটলে কি বা করার আছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, আমি তো জানি বিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে কিভাবে রাতের অন্ধকারে বিয়ে হয়েছে তা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স/অ