সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে সহিংসতা ঘটিয়ে ছাড় পাচ্ছেন না ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রভাবশালীরাও। গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে প্রচার শুরুর প্রথম ১৩ দিনে সারাদেশে ২১৩ মামলায় ২৩৫ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। এর একটি বড় অংশই ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী।
এদিকে ভোটে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ১০ হাজার ৩০০ ভোটকেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে কঠোর নিরাপত্তাবলয় গড়ে তোলার কথা জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। র্যাব বলছে, নিরাপত্তার পাশাপাশি কেন্দ্রে সন্দেহভাজন অপরাধীদের শনাক্তে বিশেষ প্রযুক্তি ওআইভিএস বসানো হবে।
পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) ইনামুল হক সাগর বলেন, গত দুই মাসে (নভেম্বর-ডিসেম্বর) ২৪১টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার ও ৪৫৬ আসামি গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নির্বাচনী প্রচারের প্রথম ১৩ দিনে ২১৩ মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২৩৫ জনকে। নির্বাচনের দিন বেশি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েনসহ নিরাপত্তাবলয় তৈরি করা হবে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভোটের মাঠে সহিংসতা করলে কাউকে ছাড়া দেওয়া হচ্ছে না। গ্রেপ্তারের তালিকায় কর্মী, পদধারী নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা রয়েছেন। সহিংসতা করলে কোনো দলমত দেখা হচ্ছে না। কেন্দ্র থেকে মাঠপর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সেভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বগুড়া-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থককে মারধরের মামলায় সোমবার সোনাতলা উপজেলা চেয়ারম্যান মিনহাদুজ্জামান লিটনসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গ্রেপ্তার লিটন সোনাতলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং নৌকা মার্কার প্রার্থী সাহাদারা মান্নানের ভাই। ফরিদপুর-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী একে আজাদের নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনায় হওয়া মামলায় তোফাজ্জল হোসেন সম্রাট নামে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি ফরিদপুর সদর উপজেলার আলিয়াবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। চট্টগ্রাম-৩ আসনে নির্বাচনী সহিংসতায় সম্প্রতি দায়ের করা মামলায় নাম উল্লেখ করা ১৯ আসামির সবাই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মী।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, নির্বাচনী সহিংসতা ও সংঘর্ষে মামলা হলে আমরা অপরাধীদের গ্রেপ্তার করছি। এ ক্ষেত্রে তার ব্যক্তিগত ও দলীয় পরিচয় মুখ্য নয়। ইতোমধ্যে সহিংসতায় জড়িত অনেক আসামি গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপরাধে জড়িত অন্যদেরও গ্রেপ্তার করা হবে।
র্যাব জানিয়েছে, ভোটকেন্দ্র ও ভোটারদের যাতায়াতের পথে কঠোর নিরাপত্তা টহল থাকবে। এ ছাড়া ভোটকেন্দ্রে সন্দেহভাজনদের বিশেষ প্রযুক্তির মাধ্যমে পরীক্ষা করা হবে। এবারই প্রথমবারের মতো র্যাব ওআইভিএস প্রযুক্তি ব্যবহার হবে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে দাগি আসামি হলে পরীক্ষায় তিনি চিহ্নিত হবেন।
র্যাব জানিয়েছে, ওআইভিএস ডিভাইসের মাধ্যমে ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, জন্ম তারিখ বা ফিঙ্গার প্রিন্ট প্রবেশ করালে ওই ব্যক্তির তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়। কোনো অপরাধের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা তা জানা যায়। এ ছাড়া এক এলাকার নেতাকর্মী অন্য এলাকায় গিয়ে প্রভাব খাটাচ্ছে কিনা সেটিও নিশ্চিত হওয়া যাবে। ফলে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে।